(মধ্যবিত্তের জীবন)
জহিরুল হক বিদ্যুৎ..
স্বপ্নগুলো ফিনিক্স পাখির মতো উড়ে যায় বহুদূর-
বেলাশেষে নেমে আসে অপূর্ণতার বিষণ্ণ-গোধূলী,
অবুঝ ইচ্ছেরা ভেসে যায় বেদনার নির্ঝরে–
অনুভূতিগুলো এভাবেই উঁকি দেয় মধ্যবিত্তের জীবনে।
শখ আহ্লাদ জমতে জমতে পাহাড়সম হয়;
কতো কিছুইতো কিনতে ইচ্ছে করে
ইচ্ছে করে ঘুরতে এদিক ওদিক, প্রকৃতির বুকে
সামর্থ্যে যেন আর হয়ে ওঠে না;
এটাই যে আমাদের মধ্যবিত্তের জীবন।
আত্মীয়-স্বজন বন্ধুদের নিয়ে আড্ডায় মেতে ওঠা
ভালো কিছু রান্না করে খাওয়ানো, গিফট কিনে দেয়া
এগুলো যেন ঠিক অধরাই রয়ে যায়;
বাস্তবতার টানাপোড়েনে ছিড়ে যায় বাসনার ইচ্ছে ঘুড়ি।
বেতনের টাকার বাহিরে, সব অংকগুলোই যেন স্পর্শহীন।
এটাই যে আমাদের মধ্যবিত্তের জীবন।
অনেকটাই সৎ চিন্তা নিয়ে হাঁটে এই মধ্যবিত্ত পরিবার
ইচ্ছে করলে সহজেই গণ্ডি পেরুতে পারে না।
বাবা-মা ভীষণ কষ্ট করে সন্তানদের পড়াশোনা শেখান,
সন্তানদেরও ইচ্ছে করে বড় হয়ে তাদের সুখ দেবেন।
অর্থের সীমাবদ্ধতায় একসময় স্বপ্নগুলোও
উল্কার মতো খসে যায় ভালোবাসার আকাশ হতে।
চোখের সামনে মায়ের সেই পুরনো জীর্ণ শাড়িটাও
একসময় ভীষণ কষ্ট দেয় এমন অনেকের বুকের গহিনে।
আয়-ব্যয়ের অনাকাঙ্খিত ব্যবধানে
বাবার হাতে কিছু না দিতে পারার কষ্টটাও পিছু ছাড়ে না।
না নিম্নবিত্তের মতো হাত পেতে নেয়া যায়!
না উচ্চবিত্তের মতো স্বপ্নগুলো ছুঁয়ে দেখা যায়!
এমন কষ্টগুলো লুকিয়ে হাসিমুখে যাদের চলতে হয়;
এমন বাস্তব জীবনই যে মধ্যেবিত্তের জীবন।
প্রিয় বিকেলগুলো প্রায় প্রতিদিন হারিয়ে যায়,
চাকরি থেকে বাড়ি ফেরা বাসের ভেতর দাঁড়িয়ে থেকে–
নদীর তীরে সূর্যাস্ত শেষ কবে দেখা হয়েছে ঠিক মনে নেই;
অরণ্যে পাতা ঝরার শব্দও শোনা হয় না বহুদিন
দিনশেষে তবু পরিবারের মুখগুলো বেঁচে থাকতে শেখায়
এটাই যে আমাদের মধ্যবিত্তের জীবন।