নিজস্ব প্রতিবেদক ::লালমনিরহাটে বহু বছর ধরে পরিত্যক্ত বিমানবন্দরটি পুনরায় চালুর উদ্যোগে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ভারত। দেশটির অভিযোগ, এই প্রকল্পে চীনের সম্পৃক্ততা থাকতে পারে, যা তাদের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি এ তথ্য জানিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, লালমনিরহাট বিমানবন্দর ভারতের সীমান্ত থেকে মাত্র ২০ কিলোমিটার দূরে এবং কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ ‘সিলিগুড়ি করিডর’ বা ‘চিকেন নেক’-এর খুব নিকটে অবস্থান করছে। যদিও বাস্তব মানচিত্রে লালমনিরহাট থেকে সিলিগুড়ি করিডরের দূরত্ব প্রায় ১৬০ কিলোমিটার, তারপরও নয়াদিল্লি এই উদ্যোগকে সতর্কতার চোখে দেখছে।
ভারতের ধারণা, বিমানবন্দরটির অবকাঠামো উন্নয়নে চীনের সহায়তা থাকলে ভবিষ্যতে সেখানে সামরিক সরঞ্জাম, রাডার বা ফাইটার জেট মোতায়েনের সুযোগ তৈরি হতে পারে। এই সম্ভাবনা মাথায় রেখে ভারত উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ত্রিপুরার কাইলাশহর বিমানবন্দরটি পুনরায় চালু করার পরিকল্পনা নিয়েছে। বন্ধ হয়ে যাওয়া এই বিমানবন্দরটি বেসামরিক প্রয়োজনে ব্যবহৃত হলেও জরুরি সময়ে সামরিক ঘাঁটি হিসেবেও ব্যবহারযোগ্য করে তোলা হবে।
এনডিটিভির প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, বাংলাদেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিবর্তনের ওপর নজর রাখছে ভারত। প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, ২০২৪ সালের আগস্টে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর নতুন সরকার চীন ও পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করছে, যা ভারতের জন্য উদ্বেগের বিষয়।
অন্যদিকে, বাংলাদেশের পক্ষ থেকে লালমনিরহাট বিমানবন্দর চালুর উদ্যোগকে স্বাভাবিক এবং জাতীয় উন্নয়নের একটি অংশ হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে। সোমবার (২৬ মে) সেনাসদরে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মিলিটারি অপারেশন্স অধিদপ্তরের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাজিম-উল-দৌলা জানান, দেশের সামগ্রিক সক্ষমতা বৃদ্ধির অংশ হিসেবে বিমানবন্দরটির পুনর্গঠন চলছে।
তিনি জানান, বিমানবন্দরের পরিধি ও কার্যক্রম সম্প্রসারণের পাশাপাশি সেখানে একটি এরোস্পেস বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা রয়েছে। এটি এভিয়েশন খাতের উন্নয়নেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
বাংলাদেশ সরকার বারবার জানিয়েছে, লালমনিরহাট বিমানবন্দর একটি জাতীয় সম্পদ, এবং জাতীয় স্বার্থেই এর যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করা হবে। দক্ষিণ এশিয়ার বর্তমান ভূরাজনৈতিক বাস্তবতায় এটি একটি নতুন মাত্রা যুক্ত করেছে, যেখানে আঞ্চলিক শক্তির প্রতিযোগিতা ও নিরাপত্তা দৃষ্টিভঙ্গির সংঘর্ষ লক্ষ করা যাচ্ছে।
Leave a Reply