স্টাফ রিপোর্টার:: রংপুরের কাউনিয়ায় মীরবাগ ডিগ্রি কলেজে পরীক্ষার হলে নকল সহযোগিতার ভিডিও ধারণ করায় পাঁচ সাংবাদিকের ওপর হামলা ও ক্যামেরা ভাঙচুরের ঘটনায় অধ্যক্ষকে প্রধান আসামি করে একটি মামলা হয়েছে।
সোমবার (১২ মে) মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কাউনিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল লতিফ শাহ।
আরো পড়ুন: নকলের ভিডিও করায় সাংবাদিকদের ওপর হামলা, ক্যামেরা ভাঙচুর
রোববার (১১ মে) সাংবাদিক হামিদুর রহমান বাদী হয়ে সাতজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ২০-২৫ জনকে আসামি করে মামলাটি দায়ের করেন। যার মামলার নম্বর ৫।
আরো পড়ুন: লালমনিরহাটের শিবরাম স্কুলের বৃত্তি পরীক্ষায় চমকপ্রদ সাফল্য!
মামলার বিবরণ সূত্রে জানা যায়, গত ৭ মে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স তৃতীয় বর্ষের পরীক্ষায় নকল সরবরাহের অভিযোগ পেয়ে বিজয় টেলিভিশনের রংপুর ব্যুরো প্রধান হামিদুর রহমানের নেতৃত্বে পাঁচ সাংবাদিক মীরবাগ ডিগ্রি কলেজ কেন্দ্রে যান। তারা পরীক্ষাকক্ষে প্রবেশের আগে কাউনিয়া থানার ওসি ও ইউএনওকে বিষয়টি অবহিত করেন এবং কেন্দ্র সচিবের অনুমতি নিয়ে ট্যাগ অফিসারের সঙ্গে পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রবেশ করে নকল সরবরাহের ভিডিও ধারণ করেন।
পরে অধ্যক্ষ জয়নাল আবেদীনের সাক্ষাৎকার নিতে গেলে তিনি কক্ষে বসিয়ে রেখে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের উসকে দিয়ে সাংবাদিকদের উপর হামলা চালান। এতে ক্যামেরা ভাঙচুরসহ সাংবাদিকদের মারধর করা হয়। শুধু তাই নয়, তাদের কান ধরে উঠবস করানো হয় এবং কোনো সংবাদ প্রকাশ না করার শর্তে জোরপূর্বক ৩০০ টাকার স্ট্যাম্পে সাক্ষর নেয়া হয়।
পরে রংপুর সিটি প্রেসক্লাবের সভাপতি স্বপন চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবীর সাংবাদিকদের উদ্ধার করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন।
আহত সাংবাদিকরা হলেন—বিজয় টিভির ক্যামেরাম্যান শাহীন আলম সাবু, প্লাস টিভি ২৪ অনলাইনের রিপোর্টার মেহেদী হাসান, ক্যামেরাম্যান মশিউর রহমান এবং আল আমিন।
এ ঘটনায় রংপুরের সাংবাদিক মহল তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তারা বলেন, “এই হামলা শুধু সাংবাদিকদের উপর নয়, এটি মতপ্রকাশের স্বাধীনতার ওপর সরাসরি আঘাত।” তারা অবিলম্বে দোষীদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান।
আহত সাংবাদিক হামিদুর রহমান বলেন, “পরীক্ষার্থী সূত্রে নকলের বিষয়টি জানতে পেরে আমরা যাচাই করতে যাই এবং সত্যতা পাই। কিন্তু আমাদের নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে। আমি এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।”
রংপুর সিটি প্রেসক্লাবের সভাপতি স্বপন চৌধুরী বলেন, “আমরা থানায় মামলা দায়ের করেছি। সাতজনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে, সঙ্গে অজ্ঞাতনামা আরও ২০-২৫ জনকে আসামি করা হয়েছে। পুলিশকে বলেছি, দোষীদের দ্রুত গ্রেফতার করতে হবে।”
এ বিষয়ে একাধিকবার ফোন করলেও মীরবাগ ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ জয়নাল আবেদীন ফোন রিসিভ না করায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
কাউনিয়া থানার ওসি আব্দুল লতিফ শাহ বলেন, “থানায় এ বিষয়ে মামলা দায়ের হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
প্রবা/আরইসআর
Leave a Reply