গাইবান্ধা প্রতিনিধি: গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক মেসেঞ্জারে পিস্তল ও ধারালো অস্ত্রের ছবি পাঠিয়ে এক ব্যক্তিকে হত্যার হুমকি দিয়েছে এক যুবক। ঘটনায় পুরো এলাকায় চরম আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন ভুক্তভোগী আবদুল কুদ্দুস মিয়া (৩৮) ও তার পরিবার।
সম্প্রতি এ বিষয়ে পলাশবাড়ী থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন আবদুল কুদ্দুস।
বুধবার সকালে পলাশবাড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জুলফিকার আলী ভুট্টো বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
অভিযোগসূত্রে জানা গেছে, উপজেলার পবনাপুর ইউনিয়নের চরেরহাট গ্রামের মুর্শিদুল মিয়া (২২) নামের ওই যুবক কুদ্দুস মিয়াকে মেসেঞ্জারে একটি পিস্তল, তিন রাউন্ড গুলি এবং ধারালো অস্ত্রের ছবি পাঠিয়ে ‘খেলা হবে’ ধরনের হুমকিসূচক বার্তা দেন। মুর্শিদুল ওই গ্রামের হামিদুল ইসলামের ছেলে।
জানা গেছে, কুদ্দুস মিয়ার সঙ্গে মুর্শিদুলের মামা আসাদুল ইসলামের জমি সংক্রান্ত বিরোধ দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছিল। স্থানীয়ভাবে একাধিকবার আপস-মীমাংসা হলেও মুর্শিদুল গত ১ এপ্রিল ফের কুদ্দুসকে মেসেঞ্জারে হুমকি দেন। তিনি এর আগেও কুদ্দুস ও তার ভাইকে মারধর করেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
ভুক্তভোগী কুদ্দুস মিয়া জানান, “মুর্শিদুল একজন মাদকাসক্ত। তার বিরুদ্ধে চট্টগ্রামে চুরি-ছিনতাইয়ের মতো অপরাধের অভিযোগ রয়েছে। সে এর আগেও আমার ভাইকে ছুরি মেরে জখম করেছে। এখন সে পিস্তলের ছবি পাঠিয়ে হত্যার হুমকি দিচ্ছে। শুনেছি, পুলিশের লুট হওয়া অস্ত্র তার কাছে রয়েছে। আমরা চরম আতঙ্কে আছি।”
হুমকির ছবি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, একটিতে মুর্শিদুলের ডান হাতে একটি আধুনিক ছুরি ও বাম হাতে চায়নিজ কুড়াল, পাশে পিস্তল ও তিন রাউন্ড গুলি রাখা। ছবির ওপরে লেখা, “তারা যেই খেলা শুরু করছে, সেটাই আমি শেষ করতে চাই, আর কোন আপোষ নয়, প্রস্তুত থাকো… খেলা হবে।”
আরেকটি ছবিতে লেখা, “আমার বাড়ির কুত্তাগুলা, যারা ফাঁকা মাঠে ঘেউ ঘেউ করো, তোদের সময় শেষ হয়ে আসছে… কয় রাউন্ড নিতে পারবি তোরা? রেডি থাক, খেলা হবে।”
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, সম্প্রতি মুর্শিদুলের আচরণে পরিবর্তন দেখা গেছে। পরপর দুইবার কুদ্দুসকে মারধর করার ঘটনাও ঘটেছে। তারা দাবি করেন, মুর্শিদুলকে দ্রুত গ্রেপ্তার করে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। নইলে বড় ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে যেতে পারে।
মুর্শিদুল মিয়ার বক্তব্য পাওয়ার জন্য একাধিকবার চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তবে তার বাবা হামিদুল ইসলাম বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, “আমার ছেলে ভুল করেছে, আমি তাকে শাসন করেছি।”
পলাশবাড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জুলফিকার আলী ভুট্টো বলেন, অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত করে একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে।
Leave a Reply