গাইবান্ধা প্রতিনিধি:: জ্যৈষ্ঠ মাসের শুরুর বৃষ্টিতে বিপাকে পড়েছেন গাইবান্ধার কৃষকরা। কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে হাঁটুসমান পানি জমেছে ধানখেতে। এর মধ্যেই ধান কাটতে বাধ্য হচ্ছেন কৃষকরা। এতে যেমন শ্রম ও খরচ বেড়েছে, তেমনি নষ্ট হচ্ছে কষ্টে ফলানো ফসল।
সরেজমিনে বুধবার (২১ মে) সদর উপজেলার বোয়ালী ইউনিয়নের রাধাকৃষ্ণপুর গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, কোমরসমান পানিতে নেমে ধান কাটছেন নারী-পুরুষরা। জমিতে কাটা ধানের আঁটি ভেসে বেড়াচ্ছে পানির ওপর। এদিকে মাড়াই করা ধান রোদে শুকাতে না পারায় অনেক ধানে গাজ ধরেছে, আবার সিদ্ধ করা ধান থেকে বের হচ্ছে পচা গন্ধ।
স্থানীয় কৃষক হুমায়ুন বলেন, ‘বৃষ্টিতে ধান পানিতে পড়ে গেছে, অনেক কষ্টে কাটছি। রোদ না থাকায় শুকাতেও পারছি না। টাকা নাই, কামলাও নিতে পারি নাই, নিজেরাই কাটতেছি।’
একই গ্রামের লিমন মিয়া বলেন, ‘আমাদের এখানে উঁচু কোনো মাঠ নাই। তাই ধান আর খর শুকাতে পারি না। বৃষ্টিতে খর পানিতে ভিজে গেছে, নষ্ট হওয়ার অবস্থা।’
উত্তর হরিণসিংহা গ্রামের কৃষক আবুল কালাম বলেন, ‘ভেলাকোপার বিলে কোমরসমান পানি জমেছে। শ্রমিক নাই, আবার যাদের পাইতেছি তারা অনেক বেশি মজুরি চাইতেছেন। বাধ্য হয়ে পরিবার নিয়েই ধান কাটতেছি।’
ধান রক্ষা করতেই হিমশিম খাচ্ছেন কৃষকরা। শুকাতে না পারায় অনেকের ধান ঘরে ফ্যান দিয়ে রেখেও লাভ হচ্ছে না। উত্তর হরিণসিংহা গ্রামের আলিমন বেগম বলেন, ‘সিদ্ধ ধান শুকাতে পারি নাই, গন্ধ বের হচ্ছে। কিছু ধানে তো গাজই ধরছে। ধান নিয়ে চরম বিপদে পড়ছি।’
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক খোরশেদ আলম বলেন, ‘জ্যৈষ্ঠের শুরুতে থেমে থেমে কয়েকদিন বৃষ্টিতে সুন্দরগঞ্জ, সাদুল্লাপুর, সাঘাটা ও সদরে ১০৭ হেক্টর জমির ধান পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণের কাজ চলছে। আজ বৃষ্টি না হওয়ায় কিছুটা স্বস্তি মিললেও আরও বৃষ্টি হলে ক্ষতি বাড়তে পারে।’
উল্লেখ্য, চলতি ইরি মৌসুমে গাইবান্ধা জেলায় মোট ১ লাখ ২৯ হাজার ২০ হেক্টর জমিতে ধান চাষ হয়েছে। এর একটি বড় অংশ এখনও মাঠে রয়েছে।
Leave a Reply