নিজস্ব প্রতিবেদক: খাল খনন কর্মসূচি বিএনপির রাজনীতির অন্যতম পিলার (খুঁটি) বলে জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
তিনি বলেন, খাল খনন মানে শুধু পানি নিষ্কাশন না, একটি শহরের পানির যে স্রোত এটা নিশ্চিত করতে হবে। খালের আশপাশে একটি ভিন্ন অর্থনীতি গড়ে তোলা যাবে। স্থানীয় মানুষদের জন্য একটা বিনোদনের জায়গা করে দেওয়া যেতে পারে, তাদের হাঁটার জন্য ওয়াকওয়ে করে দেওয়া যেতে পারে।
শুক্রবার (২ মে) চট্টগ্রাম নগরের কাট্টলী কর্নেলহাট বাজারের বামপাশে ওয়ার্ড অফিস সংলগ্ন রেললাইনের পাশে নাজির খাল ও কালির ছড়া খাল ওয়ার্ড বিএনপির অর্থায়নে খনন ও পরিষ্কার কাজের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আমীর খসরু বলেন, শহরের মধ্যে প্রতিটি খাল যখন আমরা প্রতিস্থাপন করতে পারবো এবং সেই প্রক্রিয়ায় নিয়ে যেতে পারবো তখনই খালের একটি অগ্রগতি হবে। এছাড়াও, খালের পানি নিষ্কাশনের মাধ্যমে কৃষির যে কাজগুলো আছে, সেগুলো অনেক সহজ হয়ে যাবে। তবে পানি পরিষ্কার রাখতে হবে।
স্থানীয় উদ্যোগে খাল খনন এটি মহৎ কাজ জানিয়ে বিএনপির এ নেতা বলেন, একটি ওয়ার্ড থেকে দুটি খাল খননের উদ্যোগ নিয়েছে। এটি অবশ্যই ভালো কাজ, মহৎ কাজ। তবে এটি যেন চট্টগ্রাম নগরের প্রত্যেক ওয়ার্ডেই প্রতিস্থাপন করা হয়। বিএনপির রাজনীতি, স্লোগান আর বক্তৃতা নয় শুধু, এটা শহীদ জিয়ার রাজনীতি, উন্নয়নের রাজনীতি, উৎপাদনের রাজনীতি। তাই আমাদের এ সমস্ত কাজে সম্পৃক্ত হতে হবে। আন্দোলন সংগ্রাম শেষ, এখন দেশ গড়ার সময়। দেশ গড়তে হবে এটার জন্যই বিএনপির সৃষ্টি। দেশ গড়ার যত ফর্মুলা আছে এখন সেগুলোকে সামনে আনতে হবে।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, চট্টগ্রাম শহরে একসময় ৭১টি গুরুত্বপূর্ণ খাল ছিল। এসব খাল ভরাট হয়ে যাওয়াই নগরীর জলাবদ্ধতার প্রধান কারণ। এসব খাল খননের দায়িত্ব চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের হওয়ার কথা থাকলেও কিছু অসাধু ব্যক্তির চক্রান্তে নিয়মবহির্ভূতভাবে এই কাজ সিডিএর হাতে চলে যায়। সিডিএ ৫৭টি খাল চিহ্নিত করলেও মাত্র ৩৬টি খাল খননের কাজ করছে।
অন্যদিকে, সিটি করপোরেশন মাত্র একটি খাল খনন করছে। ফলে অন্তত ২০টি অতি গুরুত্বপূর্ণ খাল খননের আওতার বাইরে থেকে যাচ্ছে, যার ফলে নগরবাসী এখনও জলাবদ্ধতার ভয়াবহতা থেকে মুক্তি পাচ্ছে না।
তিনি আরও বলেন, এছাড়া, খাল খননে পূর্ব অভিজ্ঞতা না থাকা সত্ত্বেও সিডিএ প্রায় ৬ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প বাস্তবায়নের দায়িত্ব নেয়। বারবার মেয়াদ ও ব্যয় বাড়িয়েও তারা প্রকল্পটি শেষ করতে পারেনি, বরং এর মাধ্যমে মেগা দুর্নীতির অভিযোগও উঠেছে। বিগত সরকারের সময়ে সিডিএ ও চসিকের প্রধানরা খাল ও নালার ওপর মার্কেট, ভবন ও বিশ্ববিদ্যালয় নির্মাণ করেছে। আমি দায়িত্ব গ্রহণের পর এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করেছি। কোনো বাণিজ্যিক স্থাপনা খাল বা নালার ওপর থাকতে পারে না।
উত্তর কাট্টলী ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সভাপতি রফিক উদ্দিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক ফরিদুল আলমের পরিচালনায় পরিচ্ছন্ন কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক আলহাজ্ব এরশাদ উল্লাহ।
এর আগে ১৯ এপ্রিল দলের অর্থায়নে বির্জাখাল খনন ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম শুরু করে চট্টগ্রাম মহানগর জামায়াত। দলটির নেতাকর্মীদের তত্ত্বাবধানে খালটির খনন কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
Leave a Reply