অনলাইন ডেস্ক: বিয়ে মানুষকে মানসিকভাবে স্থির করে—এমন ধারণা বহুদিনের। তবে সাম্প্রতিক এক গবেষণায় সেই বিশ্বাসে আঘাত এসেছে। যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা স্টেট ইউনিভার্সিটির গবেষকরা এক বিস্তৃত গবেষণায় জানিয়েছেন, ডিমেনশিয়ার (স্মৃতিভ্রংশ) ঝুঁকিতে সবচেয়ে বেশি থাকতে পারেন বিবাহিতরা। অপরদিকে অবিবাহিত, তালাকপ্রাপ্ত বা যাঁরা কখনও বিয়ে করেননি—তাঁদের মধ্যে এ রোগের আশঙ্কা তুলনামূলকভাবে কম।
সম্প্রতি ‘দ্য জার্নাল অব দ্য আলঝাইমারস অ্যাসোসিয়েশন’-এ প্রকাশিত হয়েছে এই গবেষণা প্রতিবেদন। এতে ২৪ হাজারের বেশি মার্কিন নাগরিককে ১৮ বছর ধরে পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে। গবেষণায় দেখা গেছে, বিবাহিতদের মধ্যে ডিমেনশিয়ার লক্ষণ বেশি দেখা যায়, যেখানে অবিবাহিতরা তুলনামূলকভাবে মানসিকভাবে সক্রিয় ও সুস্থ ছিলেন।
ফ্লোরিডার গবেষক ড. অভিনাশ কুলকার্নি বলেন, “বিয়ে মানেই যে মানসিক প্রশান্তি ও সুরক্ষা নিশ্চিত হয়—এমনটা ভাবা ঠিক নয়। সম্পর্কের গুণমান এবং ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা গুরুত্বপূর্ণ। অনেক সময় বিয়ে মানসিক চাপে পরিণত হয়, যা মস্তিষ্কের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।”
তিনি আরও বলেন, “গবেষণাটি অবশ্যই বলে না যে বিয়ে ক্ষতিকর, তবে এটুকু বোঝায়—বিয়ে ডিমেনশিয়ার বিরুদ্ধে যতটা সুরক্ষা দেয় বলে এতদিন ভাবা হতো, বাস্তবে হয়তো ততটা নয়।”
ভারতীয় প্রেক্ষাপটে বিশেষজ্ঞরা মত দিয়েছেন, বিয়ের পরে যেসব নারী কেবল গৃহকাজ ও পারিবারিক দায়িত্বে সীমাবদ্ধ থাকেন, তাঁদের মধ্যে মানসিক অসন্তুষ্টি ও অবসাদের হার বেশি, যা ডিমেনশিয়ার ঝুঁকি বাড়াতে পারে। অন্যদিকে, অবিবাহিতরা তুলনামূলকভাবে স্বাধীনভাবে জীবন যাপন করেন, সামাজিকভাবে সক্রিয় থাকেন—এগুলো ব্রেইনের সুস্থতায় ইতিবাচক ভূমিকা রাখে।
তবে গবেষকরা সতর্ক করে বলেছেন, বিষয়টি একরৈখিক নয়। বিবাহিত জীবন সুখী, সহযোগিতামূলক ও মানসিকভাবে সহনশীল হলে তা স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী হতে পারে। তাই বিয়ে নয়, ব্যক্তির জীবনযাত্রার মান, আবেগিক স্বস্তি এবং সামাজিক সংযোগই ডিমেনশিয়া প্রতিরোধে বেশি ভূমিকা রাখে।
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ওয়েবসাইট এর কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পুর্ণ বেআইনি
Leave a Reply