নোটিশ :
► সারাদেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে সংবাদদাতা নিয়োগ দিচ্ছে প্রতিদিনের বাংলাদেশ।  ► আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন প্রচারের জন্য যোগাযোগ করুন : ০১৭৪০৬৯২৯২৩
যে নারী সাহাবিকে ঈমানদার বলে ঘোষণা দিয়েছিলেন মহানবী (সা.)

যে নারী সাহাবিকে ঈমানদার বলে ঘোষণা দিয়েছিলেন মহানবী (সা.)

ইসলাম ডেস্ক: উম্মুল ফাদল লুবাবা আল কুবরা (রা.)। তিনি রাসূল সা.-এর চাচা আব্বাস ইবনে আবদিল মুত্তালিব (রা.) এর স্ত্রী ছিলেন। সম্পর্কে তিনি রাসূল সা.-এর চাচী ছিলেন।

উম্মুল ফাদলের অনেকগুলো সহোদর, বৈপিত্রেয় ও বৈমাত্রেয় ভাই-বোন ছিলেন। তাদের অনেকেই বিভিন্ন দিক থেকে ইতিহাস খ্যাত হয়ে আছেন। যেমন, মায়মূনা বিনতে আল হারিস তার সহোদর বোন রাসূল সা.-এর সহধর্মিনী ছিলেন।

মক্কায় প্রথম দিকে তিনি ইসলাম গ্রহণ করেন। কিন্তু অনেক দিন তিনি ও তাঁর স্বামী আব্বাস রা. ইসলাম গ্রহণের কথা গোপন রাখেন। একেবারে শেষের দিকে তিনি ও আব্বাস রা. মদিনায় হিজরত করেন।

তার ছেলে হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. পরবর্তীতে সূরা নিসার ৭৫ নম্বর আয়াত তিলাওয়াত করে বললেতন, এ আয়াতে যে দুর্বল নারী ও শিশুদের পক্ষে যুদ্ধ করতে বলা হয়েছে, আমি ও আমার মা সেই নারী ও শিশু। আয়াতটির মর্ম হলো এরূপ—

আর তোমাদের কি হলো যে, তোমরা আল্লাহর পথে লড়াই করছো না দুর্বল সেই পুরুষ, নারী ও শিশুদের পক্ষে, যারা বলে হে আমাদের পালনকর্তা! আমাদেরকে এই জনপদ থেকে নিষ্কৃতি দান করো, এখানকার অধিবাসীরা যে অত্যাচারী।

এর মাধ্যমে বুঝা যায়, তারা অনেক আগে ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন এবং হিজরতে অক্ষম ছিলেন।

রাসূল সা. উম্মুল ফাদলসহ তাঁর অন্য বোনদেরকে ঈমানদার বলে ঘোষণা করেছেন। একবার রাসূল সা.-এর সামনে মায়মূনা, উম্মুল ফাদল, লুবাবা সুগরা, হুযাইলা, আযযা, আসমা ও সালমা—এই বোনদের নাম আলোচনা করা হলো। রাসূল সা. বললেন, এই সকল বোন মুমিনা বা ঈমানদার।

রাসূল সা.-এর জীবনের কিছু কিছু ঘটনার মাধ্যমে বুঝা যায়, তিনি তার চাচী উম্মুল ফাদলকে অনেক শ্রদ্ধা ও সম্মান করতেন, গুরুত্ব দিতেন এবং ভালোবাসতেন। চাচীও মুহাম্মদ সা.-কে অনেক স্নেহ করতেন।

রাসূল সা. প্রায় সময় চাচীকে দেখার জন্য তার বাড়িতে যেতেন এবং দুপুরে সেখানে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিতেন। কিছু বর্ণনামতে, রাসূল সা. নবুয়ত লাভের পর একমাত্র উম্মুল ফাদল ছাড়া অন্য কোনো নারীর কোলে মাথা রাখেননি এবং তা রাখার তার জন্য বৈধও ছিল না। উম্মুল ফাদল রাসূল সা.-এর মাথা নিজের কোলের ওপর রেখে মাথা সাফ করে দিতেন এবং চোখে সুরমা লাগিয়ে দিতেন।

বিদায় হজে রাসূল সা.-এর সঙ্গে হজ করেন উম্মুল ফাদল রা.। আরাফাতে আবস্থানের দিন রাসূল সা. রোজা রেখেছিলেন কিনা তা নিয়ে সাহাবিরা দ্বিধা-দ্বন্দ্বের মধ্যে পড়ে যান। এক পর্যায়ে তারা নিজেদের দ্বিধার কথা উম্মুল ফাদলের কাছে প্রকাশ করেন। বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার জন্য তিনি রাসূল সা.-এর সামনে এক পেয়ালা দুধ রাখেন। তিনি তা পান করেন। এতে সবার দ্বিধা-সংশয় দূর হয়ে যায়।

হজরত উম্মুল ফাদল একদিন রাসূল সা.-এর কাছে বললেন, আমি স্বপ্নে দেখেছি যে, আপনার দেহের একটি অংশ আমার ঘরে আছে। রাসূল সা. বললেন, এই স্বপ্নের ব্যাখ্যা অনেক ভালো আলহামদুলিল্লাহ। আমার মেয়ে ফাতিমার একটি পুত্র সন্তান হবে এবং আপনি তাকে দুধ পান করাবেন। এভাবে আপনি তার তত্ত্বাবধায়ক হবেন।

ভবিষ্যদ্বাণী অনুযায়ী হজরত ফাতিমা হজরত হুসাইন রা.-কে জন্ম দেন এবং উম্মুল ফাদল তাকে দুধ পান করান।

উম্মুল ফাদল রাসূল সা.-এর ৩০ টি হাদিস বর্ণনা করেছেন। এর মধ্যে একটি মাত্র হাদিস মুত্তাফক আলাইহি। একটি ইমাম বুখারি এবং তিনটি ইমাম মুসলিম এককভাবে বর্ণনা করেছেন। উম্মুল ফাদল থেকে যারা হাদিস বর্ণনা করেছেন, তাদের মধ্যে সর্বাধিক উল্লেখযোগ্য হলেন, আব্দুল্লাহ, তাম্মাম, আনাস ইবনে মালিক, আব্দুল্লাহ ইবনে হারিস, উমাইর কুরাইব ও ফাবুস।

তিনি একজন উঁচু স্তরের আবিদা এবং নির্মোহ নারী ছিলেন। প্রতি সোম বৃহস্পতিবার রোজা রাখার অভ্যাস ছিল তার। তাঁর সুযোগ্য ছেলে মহান সাহাবি হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. একথা বলেছেন। তৃতীয় খলিফা হজরত উসমান রা.-এর সময়কালে তিনি ইন্তেকাল করেন। তখনও তার স্বামী আব্বাস রা. জীবিত ছিলেন। তার জানাজা পড়ান হজরত উসমান রা.।


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ওয়েবসাইট এর কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পুর্ণ বেআইনি

Design & Development BY : ThemeNeed.com