নিজস্ব প্রতিবেদক,গাইবান্ধা: গাইবান্ধা সদর উপজেলার কাউন্সিলের বাজার থেকে মিয়াপাড়া হয়ে গাইবান্ধা শহরমুখী সড়কটি এখন দুর্ভোগের প্রতীক। দীর্ঘদিন সংস্কারের অভাবে এ সড়কটি রীতিমতো মৃত্যুফাঁদে পরিণত হয়েছে। রোদের তীব্রতায় ধুলার রাজত্ব আর সামান্য বৃষ্টিতে হাঁটু পানির কাদায় পরিণত হয় রাস্তা—দুই মৌসুমেই জনজীবন অতিষ্ঠ।
উপজেলার পূর্বাঞ্চলের হাজারো মানুষ প্রতিদিন এ রাস্তা ব্যবহার করে স্কুল, কলেজ, বাজার, হাসপাতাল কিংবা কর্মস্থলে যাতায়াত করেন। কিন্তু রাস্তার করুণ অবস্থার কারণে প্রতিটি যাত্রা যেন হয়ে উঠছে এক যুদ্ধ। চোখে পড়ার মতো ভোগান্তি।
সরেজমিনে দেখা যায়, রাস্তাজুড়ে অসংখ্য গর্ত, ভাঙাচোরা পিচ আর রাস্তার দু’পাশ ভেঙে চৌচির হয়ে আছে। সামান্য বৃষ্টিতেই সেসব গর্তে পানি জমে চলাচল সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হয়ে যায়।
অটোরিকশা বা রিকশা তো চলেই না, পায়ে হেঁটে যেতেও মানুষকে পাড়ি দিতে হয় জল-কাদা ও দুর্গম পথ। স্থানীয় বাসিন্দা মাসুদ মিয়া ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “এই রাস্তা দিয়ে চলাচল প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে। গত তিন বছর ধরে কেউ এই সড়কটির খোঁজ নেয়নি। কয়েকদিন আগে এক অসুস্থ রোগীকে সময়মতো হাসপাতালে নিতে পারিনি—যানবাহনের অভাবে। শেষ পর্যন্ত সে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। যদি রাস্তার অবস্থা ভালো হতো, তাহলে হয়তো তাকে বাঁচানো যেত।”
গাড়ি চলে না, ক্ষোভ বাড়ে। একজন অটোচালক জানান, “রাস্তাটির অবস্থায় এমন হয়েছে যে গাড়ি চালানো যায় না। প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে গাড়ি চালালেও ভাঙাচোরা রাস্তায় গাড়ির ক্ষতি হচ্ছে। এই রাস্তা আর চলার উপযোগী নেই—দ্রুত সংস্কার দরকার।”
দীর্ঘদিন সংস্কারবিহীন এ সড়কটি সামান্য বৃষ্টিতেই রূপ নেয় কাদামাটির জলাশয়ে। রোদে ধুলা আর বর্ষায় কাদা-পানিতে ভরে ওঠা এই রাস্তা যেন পূর্বাঞ্চলের মানুষের জীবনে নিত্য দুর্ভোগের নাম হয়ে দাঁড়িয়েছে।
উপজেলার পূর্বাংশের হাজারো মানুষ প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এই রাস্তায় যাতায়াত করছেন। বিশেষ করে ছাত্র-ছাত্রী, রোগী ও দিনমজুরদের অবস্থা সবচেয়ে করুণ।
চোখে পড়ার মতো দুরবস্থাসরেজমিনে দেখা যায়, রাস্তার অধিকাংশ স্থানে সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় গর্ত, যার মধ্যে জমে থাকে পানি। কাদা আর জলাবদ্ধতায় অটোরিকশা, রিকশা বা সাধারণ যানবাহন চলাচল সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হয়ে যায়। পায়ে হেঁটে চলাও হয়ে উঠেছে কষ্টকর।
ছবিতে দৃশ্যমান বাস্তবতাছবিতে দেখা যাচ্ছে, বৃষ্টির পর রাস্তার গর্তে জমে থাকা পানিতে ভিজে যাচ্ছে পথচারীদের পা। একজন কিশোর গ্রামের ঐ রাস্তা দিয়ে সাবধানে হেঁটে চলেছে, পিছনে একটি ট্রলি এবং গবাদি পশু চলাচল করছে একসঙ্গে। রাস্তার দুইপাশে কাঁচা ঘর-বাড়ি আর কৃষিজীবী পরিবেশ স্পষ্ট—যা দুর্ভোগের বাস্তব চিত্র তুলে ধরেছে।
জনদুর্ভোগের করুণ চিত্রস্থানীয় মাসুদ মিয়া বলেন, “তিন বছর ধরে এই রাস্তার কোনো সংস্কার হয়নি। রোগী নিয়ে সময়মতো হাসপাতালে যেতে পারিনি, ফলে এক আত্মীয়কে হারাতে হয়েছে।”
অন্যদিকে এক অটোচালক বলেন, “এই রাস্তা একেবারেই অকেজো হয়ে গেছে। গাড়ি চালানো তো দূরের কথা, নিজেই দুর্ঘটনার শিকার হওয়ার ভয় থাকে প্রতিদিন।”
দ্রুত সংস্কারের দাবিস্থানীয়দের অভিযোগ, বারবার আবেদন জানানো হলেও কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। তাই বর্ষা শুরু হওয়ার আগেই তারা এই রাস্তাটির দ্রুত সংস্কারের দাবি জানাচ্ছেন।
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ওয়েবসাইট এর কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পুর্ণ বেআইনি
Leave a Reply