স্টাফ রিপোর্টার:: পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার ঝলইশালশিরি ইউনিয়নের হোসেনাবাদ ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসায় শিক্ষার্থী আছে মাত্র তিনজন। আর এই তিন শিক্ষার্থীকে পাঠদানের জন্য প্রতিষ্ঠানটিতে নিয়োজিত রয়েছেন ১৩ জন শিক্ষক। তিন শিক্ষার্থী ও ১৩ জন শিক্ষক দিয়েই চলছে এই মাদ্রাসার কার্যক্রম।
রোববার বেলা সাড়ে ১১টায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, মাদ্রাসায় ১১ জন শিক্ষক ও একজন কর্মচারী উপস্থিত আছেন। এর মধ্যে ৮ জন শিক্ষক অফিসে এবং দুইজন শিক্ষক বারান্দায় বসে গল্প করে সময় কাটাচ্ছেন।
এদিকে প্রথম থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত দশটি শ্রেণিকক্ষ থাকার কথা থাকলেও আছে ৬টি শ্রেণিকক্ষ। একটি শ্রেণিতে দেখা মিলল তিনজন শিক্ষার্থীর। তারা নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী। সেখানে ক্লাস নিচ্ছেন এক শিক্ষক। তবে সুপারকে এ সময় মাদ্রাসায় পাওয়া যায়নি।
২০০২ সালে এমপিওভুক্ত হওয়া এ মাদরাসায় কাগজে কলমে শিক্ষার্থী দেখানো হয়েছে ১৬৩ জন। এদিকে ২০২৫ শিক্ষাবর্ষে দাখিল পরীক্ষা দিয়েছেন ৩ জন।
জানা যায়, কয়েক বছর আগেও মাদ্রাসাটিতে অনেক শিক্ষার্থী ছিল। কিন্তু শিক্ষার পরিবেশ না থাকায় শিক্ষার্থীদের এ মাদ্রাসার প্রতি আগ্রহ নেই। অনেকে ভর্তি হলেও পরে অন্য মাদ্রাসায় চলে যায়।
জানতে চাইলে মাদ্রাসাটির সহকারী শিক্ষক জসিম উদ্দীন বলেন, কোনো তথ্যের প্রয়োজন হলে প্রতিষ্ঠান প্রধানের কাছে তথ্য নেন। আপনারা আসেন আমাদের প্রতিষ্ঠানের ভালো মন্দ কিছুই হয় না। নিউজও হয়, মানুষ শুনে জানে ধিক্কার দেয়।
এ বিষয়ে মাদ্রাসাটির সুপারিন্টেনডেন্ট রৌশনারা বেগমের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক ব্যক্তি বলেন, এমপিও ভুক্তি রয়েছে কিন্তু মাদ্রাসাটিতে শিক্ষার্থী নাই বললেই চলে। শিক্ষার্থী না থাকায় মাদ্রাসাটি বন্ধ হয়ে যায় দুপুরের মধ্যেই। এভাবে মাদ্রাসা থাকা না থাকা একই কথা। প্রতি বছর শিক্ষকের বেতন বাবদ সরকারের লাখ লাখ টাকা অপচয় হচ্ছে।
বোদা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আইবুল ইসলাম বলেন, আমি নিজেই ওই প্রতিষ্ঠানে গিয়ে সব শিক্ষকদের নিয়ে বসি, তাদেরকে বলি দ্রুত আপনারা অভিভাবক সমাবেশ ও হোম ভিজিট করে শিক্ষার্থী বাড়ান। প্রতিষ্ঠানটির বিষয়ে আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। আবার ফলোআপ করে জানাব।
বোদা উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা শাহরিয়ার নজির বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। আমি খোঁজখবর নিচ্ছি। যদি এমন হয়ে থাকে তাহলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
Leave a Reply