আশরাফুল হক,লালমনিরহাট।। লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় এক বীর মুক্তিযোদ্ধাকে দড়ি দিয়ে বেঁধে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠেছে ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে। এই মুক্তিযোদ্ধার ছেলের বিরুদ্ধে গরু চোরের অভিযোগ এনে তাকে ধরে নিয়ে দড়ি দিয়ে বেঁধে রাখা হয়।
রোববার (৭ ফেব্রুয়ারি) এ ঘটনায় ভেলাগুড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মহির উদ্দিনের বিরুদ্ধে ভুক্তভোগী বীর মুক্তিযোদ্ধা আকবর আলী ধনী হাতীবান্ধা থানায় অভিযোগ করেন।
এর আগে গত শনিবার (০৬ ফেব্রুয়ারি) সকালে উপজেলার ভেলাগুড়ি ইউনিয়নের জাওরানী এলাকায় চেয়ারম্যানের নিজ বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী বীর মুক্তিযোদ্ধা ভেলাগুড়ি ইউনিয়নের উত্তর জাওরানী গ্রামের বাসিন্দা। এছাড়া তিনি ভেলাগুড়ি ইউনিয়ন মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার।
জানা যায়, ছেলের বিরুদ্ধে গরু চুরির অভিযোগ তুলে বীর মুক্তিযোদ্ধা আকবর আলী ধনীকে চেয়ারম্যান ও তার চৌকিদার নিজ বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে তার ভেলাগুড়ি বাজার সংলগ্ন বাসায় নিয়ে আসেন। পরে একটি কক্ষে নিয়ে চেয়ারের সাথে দড়ি দিয়ে বেঁধে রাখেন চেয়ারম্যান। বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে স্থানীয়রা অবগত হলে তারা ঘটনাস্থলে এসে তার বাঁধন খুলে দেন।
স্থানীয়রা জানান, চেয়ারের সাথে বীর মুক্তিযোদ্ধা আকবর আলী ধনীকে বেঁধে রাখা হয়। এলাকাবাসী ভিড় করলে পরে তিনি বাঁধন খুলে দেন।
বীর মুক্তিযোদ্ধা আকবর ধনী (৭৫) মুঠোফোনে জানান, চেয়ারম্যান মহির উদ্দিন আমাকে তার বাসায় নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রথমে চৌকিদারকে পাঠায়। আমি তাতে সাড়া না দিলে সে নিজেই আমার বাড়িতে এসে মোটরসাইকেল করে তার বাসায় নিয়ে যায়। সেখানে তার নিজস্ব বৈঠক খানায় নিয়ে রশি দিয়ে দুহাত বেঁধে মাটিতে বসিয়ে রাখে প্রায় ঘণ্টাখানেক। বিষয়টি স্থানীয় বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল হাসেম, ইসমাইল হোসেন, ইউসুফ ও মোস্তাব আলী জানতে পারেন। তারা মোবাইল ফোনে চেয়ারম্যান মহির উদ্দিনের সাথে কথা বলে। তারপর চেয়ারম্যান মহির উদ্দিন তার হাতের বাঁধন খুলে দেন। এর কিছুক্ষণ পরে ওই মুক্তিযোদ্ধাগনসহ অন্যান্যরা ওই বাড়িতে এসে তাকে উদ্ধার করেন বলে জানান বীর মুক্তিযোদ্ধা আকবর ধনী। তিনি এ ঘটনায় ন্যায়বিচার দাবী করছেন।
তবে চেয়ারম্যান মহির উদ্দিনে তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। এ ব্যাপারে অভিযুক্ত চেয়ারম্যানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, মুক্তিযোদ্ধাকে বেঁধে রাখার কোন ঘটনা ঘটেনি। জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্যেই তাকে মোটর বাইকে করে চেয়ারম্যান নিজেই তার বাড়িতে নিয়ে আসেন।
এ বিষয়ে হাতীবান্ধা থানার অফিসার ইনচার্জ মো. এরশাদুল হক বলেন, এমন অভিযোগ আমরা পেয়েছি। ঘটনা তদন্ত করা হচ্ছে।