তাহমিনা আক্তার।। ইসলামের ভাষায় নারীরা দুনিয়ার শ্রেষ্ঠ সম্পদ। তাই আপনার স্ত্রীও আপনার শ্রেষ্ঠ সম্পদ। আপনার শ্রেষ্ঠ সম্পদটি যাতে নষ্ট না হয়ে যায় সে ব্যাপারে আপনাকে সজাগ হতে হবে। ইসলামের রোল অনুযায়ী আপনার স্ত্রী যদি পথভষ্ট হয়ে যায় তার অর্ধেক ভাগীদার আপনাকে হতে হবে। আপনি যদি আপনার স্ত্রীকে পুত-পবিত্র রাখতে চান তাহলে আপনাকে এর ভূমিকা রাখতে হবে।
বর্তমানে বাংলাদেশ পরকীয়ার অপরাধের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। পুরুষদের পাশা-পাশি নারীরাও পরকীয়া প্রেমে জড়িয়ে পড়ছে। যার ফলে সংসারে বেড়ে যাচ্ছে অশান্তি। এর কারণে দায়ী হতে পারেন আপনি নিজেও।
নারীরা কেনো পরকীয়ার মতো ঘৃণ্য প্রেমে নিজেদেরকে জড়িয়ে নিচ্ছে তার প্রধান কারণ আমরা জানতে পারছি তাদের সহজ সরল স্বীকারোক্তি থেকে। নারীদের পরকীয়া প্রেমে পড়ার প্রধান কারণ হচ্ছে স্বামীদের অসদাচার এবং যৌন আচরণ।
তাই আপনার স্ত্রীকে পুত ও পবিত্র রাখতে এবং নিজের শ্রেষ্ঠ সম্পদ রক্ষা করতে নিচের পরামর্শ গুলো অনুসরণ করুণ।
১) আচরণঃ স্ত্রীর সাথে ভালো আচরণ করুন। ছোট-খাটো ভুল ভ্রান্তির জন্য বকাঝকা করা থেকে বিরত থাকুন। আমাদের সমাজের এক শ্রেণীর স্বামীরা আছেন যারা ছোট খাটো ভুল ভ্রান্তির জন্য স্ত্রীকে কুরুচিপূর্ণ ভাষায় গালিগালাজ করে। এতে স্ত্রীর মন থেকে আসতে আসতে স্বামীর প্রতি ভালোবাসা উঠে যায়। বাস্তবে দেখেই বলছি।
২) মারধরঃ আমাদের সমাজে একদল নির্লজ্জ পুরুষ আছে যারা কথায় কথায় স্ত্রীর গায়ে হাত তুলে। স্ত্রীকে নির্মমভাবে প্রহার করে। যা ইসলাম ও দেশের আইন কোনো ভাবেই সমর্থন করে না। তাই স্ত্রী কোন ভুল করলে আপনি মারধর না করে সংশোধন করে দিন। ভালোবাসার সাথে বুঝিয়ে দিন। কারুণ দিন শেষ আপনাকে তার সাথেই রাত কাটাতে হবে, তার হাতের রান্নাই আপনাকে খেতে হবে। তাকেই দিয়েই আপনার যৌন বাসনা পূরণ করতে হবে।
৩) যৌন আচরণঃ আপনার যৌন আচরণকে গুরুত্ব দিন। স্ত্রীর যৌন চাহিদার প্রতি গুরুত্ব দিন। তার যৌন চাহিদা ও পরিতৃপ্তির উপর লক্ষ্য রাখুন। বাংলাদেশের অধিকাংশ নারীদের অভিযোগ তাদের স্বামী তাদের যৌন ইচ্ছা ও চাহিদার প্রতি গুরুত্ব দেয় না। এই ধরণের স্বামীরা নিজেদের যৌন চাহিদা মিটিয়ে সরিয়ে পরে। যার ফলে স্ত্রীর মনে দেখা দেয় অসন্তুষ্টি। তাই নিজের যৌন চাহিদা পূরণ করতে পরকীয়াকে বেঁছে নেয়। তাই আপনার যৌন আচরণের অজ্ঞতা থাকলে শিখে নিন এবং যৌন দুর্বলতা থাকলে যৌন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের চিকিৎসা নিন।
যৌন আচরণ শিখতে আমাদের যৌন জ্ঞানের বই গুলো পড়ুন। এই বিষয়ে আমাদের বেশ কিছু বই আছে। এর মধ্যে উল্লেখ্য যোগ বই গুলো নিচে দিলামঃ
১. নারী পুরুষের সেক্স লাইফ
২. নারী পুরুষের গোপন কথা
৩. একান্ত নির্জনে গোপন আলাপ
৪) ঘুরাফেরাঃ সময় সুযোগ পেলে আপনার স্ত্রীকে কোথাও ঘুরতে অথবা বেড়াতে নিয়ে যান। নারীরা এটি বেশ উপভোগ করে। সারাদিন চার দেওয়ালের ভিতরে বসে থাকতে আপনারও নিশ্চয় ভালো লাগবে না?
৫) উপহারঃ মাঝে মধ্যে আপনার স্ত্রীকে উপহার সামগ্রী কিনে দিন। হোক সেটা কম মূল্যের। কিনে দিতে পারেন একটি গোলাপ ফুলও। নারীরা এতে বেশ আনন্দিত হোন।
৬) সাজ-সজ্জাঃ নারীরা যেভাবে সেজেগুজে পরিপাটি হয়ে থাকতে পছন্দ করে সেই তুলনায় পুরুষেরা পিছিয়ে। সাজ-সজ্জা নারীদের কাজ না ভেবে আপনার স্ত্রীর জন্য আপনিও সাজ সজ্জা করুণ। আপনার স্ত্রীর সেজে থাকলে আপনার যেমন ভালো লাগে, আপনি সেজে থাকলে আপনার স্ত্রীর কাছেও ভালো লাগবে।
৭) পরিস্কার পরিচ্ছন্নতাঃ সব সময় পরিস্কার পরিচ্ছন্ন থাকতে চেষ্টা করুণ। ঘামের দুর্গন্ধ, লজ্জাস্থান সহ শরীরের অন্যান্য অংশের পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার দিকে নজর দিন। আপনার অপরিষ্কার অপরিচ্ছন্নতা তাদের মনে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে।
৮) মুখের দুর্গন্ধঃ আপনার মুখের দুর্গন্ধের দিকে নজর দিন। পুরুষদের মধ্যে অনেকে আছেন যারা ধূমপানে আসক্ত। আপনার এই আসক্ত থাকলে স্ত্রীর কাছে ঘেষার পূর্বে মুখের দুর্গন্ধ দূর করে নিন। নারীদের মধ্যে অনেকেই আছে যাতা আতরের ঘ্রাণই সহ্য করতে পারে না, তাহলে ভাবুন তাদের বিড়ি সিগারেটের কটু গন্ধ তাদের মনে কিরকম বিরূপ ফেলে।
৯) কাজের তাগিদে বাহিরে অবস্থান করলেও স্ত্রীর সাথে যোগাযোগ রাখার চেষ্টা করুণ। দূরে থাকলে কাজের কাজে স্ত্রীর সাথে মোবাইলের মাধ্যমে কথা বলুন। গল্প গুজব করুণ। এতে স্ত্রীর একাকিত্বভাব দূর হবে। আপনি দূরে থাকলেও সে আপনার সংস্পর্শে থাকে। আপনার ভালোবাসা ও তার প্রতি আপনার আগ্রহ প্রকাশ পাবে।
১০) ধর্ম ও নৈতিকতার শিক্ষাঃ আপনার স্ত্রীকে ধর্মীয় শিক্ষা দিন। দাম্পত্য জীবন সম্পর্কে ও স্বামী স্ত্রীর দায়িত্ব-কর্তব্য সম্পর্কে যাতে ধর্মীয় জ্ঞান লাভ করতে লাভ করতে পারেন সেরকম ভালো মানের বই পুস্তক কিনে দিন। আমার বাংলা পোস্ট.কম এ ভালো কিছু বই আছে আপনি চাইলে সেগুলো আপনার স্ত্রীকে বিনামূল্যে পড়াতে পারেন। বই গুলো হচ্ছে
১. আদর্শ স্বামী স্ত্রী ২
২. আদর্শ নারী
৩. স্বামী স্ত্রীর সুন্দর জীবন
৪. মুসলমান স্বামী স্ত্রী
আপনার স্ত্রী আপনার হালাল বিনোদনের সেরা মাধ্যম। আপনার জান্নাত লাভের সহযোগী। তাই আপনার দায়িত্ব কর্তব্য হচ্ছে তার চাহিদা গুলো পূরণ করা। সংসারের সুখ শান্তি হাঁসি আনন্দ বজায় রাখতে আপনার ভূমিকা অপরিসীম। টাকা সংসারে স্বচ্ছলতা এনে দিতে পারে কিন্তু শান্তি নয়।