গাইবান্ধার সাঘাটায় দাদনের (সুদ) পাঁচ হাজার টাকার লাভ দিতে না পারায় দিনমজুর দম্পতির ঘরে তালা দেন দাদন ব্যবসায়ী ওসমান মিয়া। ১৩ দিন যাবৎ বাড়ি থেকে পালিয়ে বেড়ানো দিনমজুর আবুল হোসেন (৫৫) ও মাজেদা বেগম (৫০) দম্পতির পাশে দাঁড়ালেন সাঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি ) বেলাল হোসেন।
রোববার (৩১ জানুয়ারি) বিকেলে ওই দম্পতিকে নিরাপত্তা দিয়ে বাড়িতে পৌঁছে দেয়া হয়েছে বলে প্রতিদিনের বাংলাদেশ কে নিশ্চিত করেছেন ওসি বেলাল হোসেন।
শনিবার (৩০ জানুয়ারি) প্রতিদিনের বাংলাদেশ ও জাগো নিউজে সুদের টাকার জন্য আগে নিয়ে গেছেন গরু, এবার ঘরে তালা শিরোনামে একটি প্রতিবেদন ও ভিডিওচিত্র প্রকাশ হলে বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
পরে ওই রাতে সাঘাটা থানার ওসি বেলাল হোসেন ভুক্তভোগী দিনমজুর আবুল হোসেন ও তার স্ত্রী মাজেদা বেগমকে থানায় ডেকে সমস্যার বিষয়গুলি শোনেন এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দেন।
পরদিন রোববার (৩১ জানুয়ারি) বিকেলে সাঘাটা থানার এসআই মোস্তফা কামাল ও এএসআই মামুনকে বিষয়টি তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেয়ার দায়িত্ব দেন। পরে তারা গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার কচুয়া ইউনিয়নের কচুয়া গ্রামে গিয়ে ভুক্তভোগী দিনমজুর আবুল হোসেন ও তার স্ত্রী মাজেদা বেগমকে বাড়িতে নির্ভয়ে থাকার ব্যবস্থা করেন।
দিনমজুর আবুল হোসেন প্রতিদিনের বাংলাদেশ কে বলেন, দাদন ব্যবসায়ী ওসমান মিয়া ঘরে তালা লাগানোর কারণে আমরা দিনে গাছতলায় আর রাতে অন্যের বাড়িতে রাতযাপন করছি। পাঁচ হাজার টাকার জন্য আমাদের ঘরে তালা লাগানোর ঘটনা জানার পর ওসি স্যার আমাদের বাড়ি ফেরানোর ব্যবস্থা করায় আমরা অনেক খুশি। এমন ঘটনায় পুলিশ আমাদের পাশে দাঁড়াবে আমরা কখনও ভাবতেও পারিনি।
আবুল হোসেনের স্ত্রী মাজেদা বেগম প্রতিদিনের বাংলাদেশ কে বলেন, দাদন ব্যবসায়ী ওসমান মিয়া আগেও সুদের টাকার জন্য বাড়িতে এসে আমাকে মারপিট করে গরু নিয়ে যান। এবার ঘরে তালা দেয়ার ঘটনাটি জানার পরে ওসির একান্ত আন্তরিকতায় আমরা বাড়িতে ফিরতে পারছি। আমরা কেমন আছি এটা জনতে এখন ওসি স্যার ফোন দিয়ে সকাল বিকেল খোঁজ খবর নিচ্ছেন।
এ বিষয়ে সাঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বেলাল হোসেন প্রতিদিনের বাংলাদেশ কে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন,প্রতিদিনের বাংলাদেশ ও জাগো নিউজের মাধ্যমে ঘটনাটি জানার পর পরিবারটিকে নিরাপত্তাসহ বাড়িতে পৌঁছে দেয়া হয়েছে। ঘরে তালা লাগানোর অপরাধে ওই সুদখোরের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে তাকে আটকের চেষ্টা চলছে।