রাশেদুল ইসলাম রাশেদ।। রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) মহান বিজয় দিবসে জাতীয় পতাকা বিকৃত করে উপস্থাপন ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়ানোর অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা মিলেছে। তদন্ত প্রতিবেদনে ১৮ জন শিক্ষক ও একজন কর্মকর্তাসহ ১৯ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ ও তাঁর একান্ত সচিব আমিনুর রহমানের সম্পৃক্ততা না পাওয়ায় অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। রংপুর মেট্রোপলিটন তাজহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আখতারুজ্জামান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
থানা সূত্রে জানা যায়, জাতীয় পতাকা বিকৃতির ঘটনায় থানায় দুটি অভিযোগ করা হয়। এর মধ্যে একটি অভিযোগ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক মাহামুদুল হক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমান। অপর অভিযোগ করেন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি আরিফুল ইসলাম। ২টি অভিযোগে ২১ জন শিক্ষক-কর্মকর্তাকে অভিযুক্ত করা হয়। এরপর এই অভিযোগের বিষয়টি আদালতে গড়ায়। আদালত অভিযোগের বিষয়টি মেট্রোপলিটন থানাকে তদন্ত করার নির্দেশ দেন।
তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, সংবিধানের জাতীয় পতাকা বিধিমালা ১৯৭১ (সংশোধনী ২০১০) অনুযায়ী, জাতীয় পতাকা বিকৃতির বিষয়টি প্রাথমিকভাবে সত্যতা প্রমাণিত হয়েছে। কিন্তু উপাচার্য ও তাঁর একান্ত সচিব আমিনুরের সম্পৃক্ততা না পাওয়ায় তদন্ত প্রতিবেদন থেকে তাঁদের অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদনে অভিযুক্ত ১৯ জনের মধ্যে ১৮ জনই শিক্ষক। একজন প্রশাসনিক বিভাগের কর্মকর্তা।
অভিযুক্ত শিক্ষকেরা হলেন সোহাগ আলী, তাবিউর রহমান প্রধান, মাসুদ-উল হাসান, রাম প্রসাদ বর্মণ, মো. রহমতউল্লাহ, আবু সায়েম, প্রদীপ কুমার সরকার, কামরুজ্জামান, পরিমল চন্দ্র বর্মণ, আর এম হাফিজুর রহমান, মোস্তফা কাইয়ুম শারাফাত, শাহ জামান, নূর আলম সিদ্দিক, মোরেশদ হোসেন, রশিদুল ইসলাম, চার্লস ডারউন, শামীম হোসেন, ছদরুল ইসলাম ও সেকশন অফিসার শুভঙ্কর চন্দ্র সরকার।
তাজহাট থানার ওসি আখতারুজ্জামান বলেন, পতাকা বিকৃতির সত্যতা পাওয়া গেছে। তদন্ত প্রতিবেদন ৫ জানুয়ারি তাজহাট আমলি আদালতে দাখিল করা হয়।
প্রসঙ্গত, ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবসে বেরোবির স্বাধীনতা স্মারকে বিকৃত পতাকা নিয়ে ছবি তোলেন বিশ্ববিদ্যালয়টির কয়েকজন শিক্ষক। পরে তা সামাজিক যোগাযো গমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে নিন্দার ঝড় ওঠে। এ ঘটনায় ৯ শিক্ষকসহ উপাচার্যের নামে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ জন শিক্ষক ও ১ জন সাবেক ছাত্রলীগ নেতা তাজহাট থানায় দুটি অভিযোগ করেছিলেন।