রাশেদুল ইসলাম রাশেদ: গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জের কাপাসিয়া ইউনিয়নে বন্যার্তদের জন্য বরাদ্দ দেওয়া ত্রাণের চাল বিতরণ না করে গোডাউনে মজুদ রাখার ঘটনায় চেয়ারম্যানের কারণ দর্শানোর জবাব ‘সন্তোষজনক নয়’ বলে জানিয়েছে উপজেলা প্রশাসন। ফলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থার ঝুঁকিতে পড়েছে ওই ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা মো. মঞ্জু মিয়া।
শুক্রবার (২০ আগস্ট) বিকেলে চাল মজুদের বিষয়ে চেয়ারম্যানের শোকজের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ার বিষয়টি মোবাইল ফোনে নিশ্চিত করেছেন সুন্দরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. তরিকুল ইসলাম।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. তরিকুল ইসলাম বলেন, ” বন্যার্তদের জন্য ত্রাণের চাল বিতরণ না করে গোডাউনে মজুদ রাখার ঘটনায় শোকজের জবাব দিয়েছেন কাপাসিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মঞ্জু মিয়া। তবে, তার জবাবটি উপজেলা প্রশাসনের কাছে সন্তোষজনক মনে হয়নি। আমরা বিষয়টি নিয়ে কর্তৃপক্ষের কাছে লিখেছি। এসময় এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘প্রক্রিয়াধীন বিষয়টি এর থেকে বেশি কিছু এই মুহূর্তে বলা যাচ্ছে না। তবে চেয়ারম্যান এই ঘটনায় অনেকটা ঝুঁকিতে পড়েছেন বলেও জানান এই কর্মকর্তা।
এরআগে গত ৯ সেপ্টেম্বর এই চেয়ারম্যানকে বন্যার্তদের জন্য বরাদ্দ পাওয়া ত্রাণের চাল বিতরণ না করে গোডাউনে মজুদ রাখার ঘটনায় কারণ দর্শানোর নোটিশ করে উপজেলা প্রশাসন। নোটিশে তিন দিনের মধ্যেই জবাব দাখিলেরও নির্দেশ দেওয়া হয়।
নোটিশে বলা হয়, গত ১৬ জুলাই সুন্দরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের ত্রাণ শাখা থেকে কাপাসিয়া ইউনিয়ন পরিষদের বন্যার্ত মানুষের মাঝে বিতরণের জন্য ৩ মেট্রিক টন চাল ইউপি চেয়ারম্যান মো. মঞ্জু মিয়ার অনুকূলে বরাদ্দ করা হয়। সেই চাল উত্তোলন করে বন্যার্ত মানুষের মাঝে বিতরণ না করে তার নিজস্ব গুদাম ঘরে গুদামজাত করেছেন-যা আইন পরিপন্থি।
এছাড়া এতে আরও বলা হয়, বন্যার্ত মানুষের মাঝে বিতরণের জন্য বরাদ্দাকৃত জি,আর চাল যথাসময়ে বিতরণ না করার কারণে কেন আপনার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না তার জবাব আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে দাখিল করার জন্য বলা হলো।
উল্লেখ্য, গত ১৬ জুলাই সুন্দরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের ত্রাণ শাখা থেকে কাপাসিয়া ইউনিয়ন পরিষদের বন্যার্ত মানুষের মাঝে বিতরণের জন্য ওই সব চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. মঞ্জু মিয়া আগস্টের প্রথম সপ্তাহের দিকে চালগুলো উত্তোলন করলেও বন্যার্তদের মাঝে বিতরণ না করে নিজস্ব গোডাউনে মজুদ রাখেন। পরে গত ৮ সেপ্টেম্বর রাতে গোপন সূত্রে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে উপজেলার একই ইউনিয়নের কছিম বাজারের একটি গোডাউন থেকে ত্রাণের ওই ৩০ কেজি ওজনের ১০০ বস্তা চাল উদ্ধার করে সুন্দরগঞ্জ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. ওয়ালিফ মন্ডল। পরদিন চালগুলো ইউনিয়নের দুটি ওয়ার্ডে ৩০০ পরিবারের মাঝে ১০ কেজি করে বিতরণ করেন। ওই সময় দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক না থাকায় চালগুলো বিতরণ করা সম্ভব হয়নি বলে দাবি করেছিলেন অভিযুক্ত চেয়ারম্যার ও আওয়ামী লীগ নেতা মঞ্জু মিয়া।