সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি: পৈত্রিক সূত্রে জমির মালিক আমরা। ১৯৭৫ সালে ৪৭ শতাংশ জমি ক্রয় করেন আমার বাবা। সেই থেকে ভোগদখলে আমাদের। বার্ধক্যজনিত কারণে বাবা অসুস্থ। ৩ ভাইয়ের ২ ভাই থাকেন ঢাকায়। আমি নিজেও এক্সিডেন্ট করার পর থেকে চলাচল করতে পারছি না। আর সুযোগে প্রতিপক্ষের লোকজন ভাড়াটিয়া ভূমিদস্যুদের সহায়তায় আমাদের জমি দখল করে নিয়েছেন দিনদুপুরে। ক্ষোভ প্রকাশ করে এভাবেই কথাগুলো বলছিলেন মো. জাহাঙ্গীর কবীর রতন (৩৮)।
তিনি গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার কঞ্চিবাড়ী ইউনিয়নের কঞ্চিবাড়ী ঝাকুয়াপাড়া গ্রামের মো. আবদুল জলিল সরকারের ছেলে। এ ঘটনায় কঞ্চিবাড়ী পুলিশ তদন্ত কেন্দ্র অভিযোগ দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী জাহাঙ্গীর কবীর রতন।
তবে অভিযুক্ত মো. আশরাফুল মিয়া (৩২) বলেন, ‘জমিটা আমাদের এটা আগে জানতাম না আমরা। বছর পাঁচেক আগে বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছি। তখন থেকে জমি উদ্ধারে তৎপর হই। সর্বশেষ গত সোমবার আমাদের জমি আমরা দখলে নেই।’ অভিযুক্ত মো. আশরাফুল মিয়া একই গ্রামের মৃত হারেছ আলীর ছেলে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ওই জমির পূর্ব পার্শ্বে একখানা টিনের ঘর, কিছু কলাগাছ, বিভিন্ন প্রজাতির গাছের চারা ও জমির কিছু অংশে ধানের চারা রোপন করা হয়েছে। এটি যে জবরদখল করে করা হয়েছে সেটি দেখেই বোঝা গেছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, কঞ্চিবাড়ী গ্রামের জাহাঙ্গীর কবির রতনের পিতা আব্দুল জলিল সরকার প্রায় ৫০ বছর আগে ৪৭ শতক জমি ক্রয় করেন৷ পরে ১৫ শতক জমি স্থানীয় মসজিদের নামে দান করেন। আব্দুল জলিল দীর্ঘদিন ধরে শারীরিকভাবে অসুস্থ থাকায় স্থানীয় মৃত হারেছ আলীর ছেলে আশরাফুল মিয়া ওই নিজেদের জমি দাবি করে গত সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) দিন-দুপুরে ভাড়াটিয়া বাহিনী দিয়ে ঘর তোলেন। এছাড়া গাছের চারা ও ধানের চারা রোপণ করেন।
এ বিষয়ে কঞ্চিবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মনোয়ার আলম সরকার বলেন, ‘ওই জমি জাহাঙ্গীর কবির রতনদের দখলে দেখে আসছি বহুদিন ধরে। জানামতে জমির কাগজ পত্রও তাদের নামে। কাজেই এভাবে জমি দখল করাটা ঠিক হয়নি আশরাফুলদের। বিষয়টি মিমাংসার জন্য চেষ্টা চলছে।’
কঞ্চিবাড়ী পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ মো. বদরুজ্জামান ভূঁইয়া বলেন, ‘অভিযোগ পাওয়ার পর দু’পক্ষে ডেকে কোর্টে যেতে বলেছি। কোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ হবে।’