মনজু হোসেন,স্টাফ রিপোর্টারঃ ঘরে স্ত্রী-সন্তান রেখে করেছেন দ্বিতীয় বিয়ে। সেই বউকে ঘরে তুলতে প্রথম স্ত্রীকে ঘরছাড়া হবার তাগিদ দিচ্ছেলেন, অনঢ় প্রথম স্ত্রী প্রতিবাদ করেই পড়েন বিপত্তিতে। বেধরক মারধরের শিকার হন তিনি। এমনকি মুখে বিষ ঢেলে হত্যাচেষ্টাও করা হয় বলে অভিযোগ ওঠেছে।
অভিযুক্ত ওই ব্যক্তির নাম জিল্লুর রহমান (৪৫)। পঞ্চগড় সদর উপজেলার হাড়িভাসা ইউনিয়নের ঘাগড়াপাড়া এলাকার মৃত আব্দুল গফফারের ছেলে তিনি।
গত ৫ মার্চ সকালে এই মারধরের শিকার হন গৃহবধূ রাবেয়া (৩৫)। এ ঘটনায় ওই দিনই অভিযুক্ত জিল্লুরসহ আরও ৮ জনের বিরুদ্ধে পঞ্চগড় সদর থানায় এজাহার দায়ের করেছেন ভুক্তভোগি গৃহবধূর ভাই ছয়ফুল ইসলাম।
জানা গেছে, দুই দশক আগে জিল্লুর রহমানের সঙ্গে ছয়ফুলের বোন রাবেয়ার বিয়ে হয়। তাদের দাম্পত্যে তিন সন্তান রয়েছে। বছরখানেক আগে থেকে তাদের পারিবারিক কলহ চলছে। এর মধ্যে গত ৪ এপ্রিল প্রথম স্ত্রীর অনুমতি ছাড়াই দ্বিতীয় বিয়ে করেন জিল্লুর।
এজাহার সূত্রে জানা যায়, জিল্লুর মাদক কারবারির সঙ্গে সম্পৃক্ত দীর্ঘদিন ধরে। এ কাজে বাধা দেয়াকে কেন্দ্র করেই তাদের দাম্পত্যকলহ শুরু হয়। একপর্যায়ে গত ৩ এপ্রিল রাতে মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দেন জিল্লুর। পরে রাবেয়া বাবার বাড়িতে অবস্থান নেন, সেখানে খবর পান জিল্লুর তার অনুমতি ছাড়াই দ্বিতীয় বিয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। কালক্ষেপন না করে পরদিন বিকেলে বাড়ি ফিরেন রাবেয়া। রাতভর জিল্লুরের দেখা না পেলেও ৫ এপ্রিল সকালে জিল্লুর রাবেয়াকে বাড়ি হতে বের হয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেন। প্রতিবাদ করলেই শুরু করেন মারধর। এক পর্যায়ে মুখে বিষ ঢেলে দিয়ে হত্যা চেষ্টা করেন।
রাবয়ো-জিল্লুর দম্পতির ছেলে রফিকুল ইসলাম বলে, আমার বাবার সঙ্গে আরও ৭-৮ জন মিলে আমার মা’কে মারধর করে আমার মায়ের মুখে বিষ ঢেলে দেয়। আমি বাধা দিলে আমাকেও মারতে উদ্বুদ্ধ হয়। উপায়ন্ত না পেয়ে মামাকে জানাই এবং মা’কে হাসপাতালে নেয়ার ব্যবস্থা করি।
ভিকটিম রাবেয়া বেগম জানান, আমাকে বাড়ি থেকে বের করতে মারপিট করে, মুখে বিষ ঢেলে আমাকে হত্যার চেষ্টা করে।
রাবেয়ার ভাই ছয়ফুল বলেন, খবর পেয়ে বোনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেছি। এ ঘটনায় থানায় এজাহার দায়ের করেছি। আশাকরি আমার বোন ন্যায় বিচার পাবেন।
এ বিষয়ে কথা বলতে অভিযুক্ত জিল্লুরকে পাওয়া যায়নি। তবে তার স্বজনরা জানিয়েছেন, রাবেয়াকে মাসখানেক আগে তালাক নোটিশ পাঠিয়েছেন তিনি। পঞ্চগড় সদর থানার অফিসার ইনচার্জ প্রদীপ কুমার রায়, অভিযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, তদন্ত করে, যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।