ঢাকামঙ্গলবার , ১৯ ডিসেম্বর ২০২৩
  1. Covid-19
  2. অপরাধ ও আদালত
  3. অর্থনীতি
  4. আন্তর্জাতিক
  5. ইসলাম ডেস্ক
  6. কৃষি ও অর্থনীতি
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয়
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. দেশজুড়ে
  11. নির্বাচন
  12. বানিজ্য
  13. বিনোদন
  14. ভিডিও গ্যালারী
  15. মুক্ত মতামত ও বিবিধ কথা
আজকের সর্বশেষ সবখবর

লালমনিরহাট উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার অনিয়ম ও দুর্নীতি করেই অঢেল টাকার মালিক!

প্রতিবেদক
প্রতিদিনের বাংলাদেশ
ডিসেম্বর ১৯, ২০২৩ ৮:১৭ অপরাহ্ণ
Link Copied!

আসাদুল ইসলাস সবুজ ॥ বর্তমান শিক্ষা বান্ধব সরকার যেখানে দূর্নীতিমুক্ত শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য আপ্রান চেষ্টা করলেও লালমনিরহাট সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে ভিন্নচিত্র লক্ষ্য করা গেছে। একটানা প্রায় ৮ বছর ধরে একই উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার লিপিকা দত্তের মতো ব্যক্তির দুর্নীতি ও অনিয়মের কারণে বর্তমান শিক্ষা বান্ধব সরকারের সুনাম নষ্ট হচ্ছে। এভাবে অনিয়ম ও দুর্নীতি করে ঢাকায় বিলাসবহুল ফ্ল্যাট সহ অঢল টাকার মালিক বনে গেছেন সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার লিপিকা দত্ত। যা তদন্ত করলে প্রমাণ মিলবে বলে একটি সুত্র জোড় দিয়ে নিশ্চিত করেছে।

একটি বিশ্বস্ত সুত্র জানান, ২০১৬ সালে থেকে সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার হিসেবে লিপিকা দত্ত যোগদান করেন। দীর্ঘ আট বছর যাবত একই অফিসে চাকরি করার সুবাদে স্থানীয় কিছু অসাধু লোকের সহযোগিতায় উপজেলা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে ঘিরে একটি শক্তিশালী দুর্নীতির বলয় তৈরি করেছে। তিনি লালমনিরহাট সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে কর্মরত থাকলেও বিভাগীয় শহর রংপুরে বসবাস করেন। সপ্তাহে ৫দিন অফিস করার নিয়ম থাকলে ২/৩দিন অফিস করেন। যেকোন বিদ্যালয়ের নিয়োগ প্রক্রিয়া থেকে শুরু করে এমপিওভুক্ত করা কিংবা বেতন ছাড় করানো পর্যন্ত প্রতিটি ধাপে ধাপে সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার লিপিকা দত্তকে মোটা অংকের উৎকোচ দিতে হয়। তার চাহিদা অনুযায়ী উৎকোচ না দিলে কারো চাকরি হয় না এবং এমপিও বা বেতন ছাড়ের ফাইলও মাসের পর মাস আটকে থাকে।

চলতি বছরে লালমনিরহাট সদর উপজেলার ৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিও ভুক্ত হয়। এরমধ্যে ৪টি প্রতিষ্ঠানের নিকট লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে শিক্ষকদের বেতনের সুপারিশ করেছেন। তারমধ্যে নতুন এমপিও খোলাহাটি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জুলফিকার আলী বুলুর নিকট শিক্ষকদের বেতনের জন্য উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার লিপিকা দত্ত ৪ লক্ষাধিক টাকা উৎকোচ দাবী করেন। শিক্ষা অফিসার লিপিকা দত্তের দাবীকৃত টাকা না পাওয়ায় খোলাহাটি উচ্চ বিদ্যালয়ের ফাইল স্বাক্ষর করেনি তিনি। ফলে আজও ওই বিদ্যালয়ের বিল হয়নি। এমনকি ননএমপিও এবং এমপিও শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ নিতে ১ থেকে ২ হাজার টাকা দালালদের মাধ্যমে তাকে প্রদান করতে হয়। শিক্ষকদের ফাইল সেন্ড করতে লাগে টাকা। প্রশিক্ষণে যারা অংশ গ্রহন করেন তাদের জন্য সরকারী যে বরাদ্দ থাকে তাও দেয়া হয় না। যা বিগত দিনের শিক্ষক প্রশিক্ষণের তালিকা তদন্ত করলে প্রমাণ মিলবে।

শুধু তাই নয়, উপজেলা মাধ্যমিক অফিসের ৩টি মোটরসাইকেল দীর্ঘদিন যাবত নষ্ট থাকলেও সরকারি বরাদ্দের টিয়ে বিল, অনুষ্ঠানিক খরচ কারোর সাথে আলাপ আলোচনা না করে নিজের ইচ্ছামত খরচ করেন। যার ভুয়া ভাউচার রংপুর থেকে সংগ্রহ করা হয়। অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে চাহিদা মত সরকারী বই দেয়া হয় না। সব সময় শিক্ষকদের কম বই দিয়ে, বাকী বইগুলো কালোবাজারে বিক্রি করেন। কোন এমপিও স্কুল ও মাদ্রাসায় নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে কোন অনিয়মে অভিযোগ বা মামলা হলে তা তিনি তদন্ত করেন না। অথচ যাদের নিয়ে অভিযোগ তাদের নিয়োগ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ করে চাকরি পাইয়ে দেন। এভাবে দীঘ ৮ বছর ধরে তিনি সদর উপজেলা থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে ঢাকায় বিলাসবহুল ফ্ল্যাট সহ অঢল টাকার মালিক বনে গেছেন সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার লিপিকা দত্ত। ডিজি অফিসের কিছু অসাধু কর্মকর্তা এবং এলাকার কিছু অসাধু ও কতিপয় শিক্ষক নেতাদের সঙ্গে আতাত করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছেন। ফলে তার বিরুদ্ধে কেউ অভিযোগ দিতে সাহস পায় না বা অভিযোগ দিলেও কোনো কাজে আসে না।

খোদ ওই অফিসের কর্মচারীরা বলেন, কারণে অকারণে তিনি আমাদের সাথে খারাপ ব্যবহার করেন। আমরা ছোট চাকরি করি বলে মানুষ না। তিনি আমাদের মানুষ মনে করেন না। সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার লিপিকা দত্ত দীর্ঘ আট বছর যাবত চাকরি করলেও বিভাগীয় শহর রংপুরে বসবাস করেন। সপ্তাহে ৫দিন অফিস করার নিয়ম থাকলে ২/৩দিন অফিস করেন। পরোক্ষভাবে বুঝিয়ে দেন তার রাজনৈতিক এবং মন্ত্রালয়ের দাপট অনেক বেশি।

স্থানীয় শিক্ষকরা বলেন, প্রায় আট বছর ধরে একই উপজেলায় চাকরি করার সুবাধে কতিপয় সুবিধাবাদী লোকদের নিয়ে সিন্ডিকেট গড়ে তুলে মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসকে দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত করে তুলেছেন লিপিকা দত্ত। দালাল সিন্ডিকেট মাধ্যমে টাকা ছাড়া কোনো কাজই হয় না। এভাবে অনিয়ম ও দুর্নীতি করেই করে ঢাকায় বিলাসবহুল ফ্ল্যাট সহ অঢল টাকার মালিক বনে গেছেন সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার লিপিকা দত্ত।

এ বিষয়ে লালমনিরহাট সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার লিপিকা দত্তের সাথে তার মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। এমনকি তার অফিসে গিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি।

আপনার মন্তব্য লিখুন