গাজীপুর প্রতিনিধি: জগাখিচুড়ি ঐক্য দিয়ে কোনো দিনও বর্তমান সরকারকে হটানো সম্ভব না বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, বিএনপির ঘরের মধ্যে ঘর। মশারির মধ্যে মশারি। তাদের আন্দোলন সব জগাখিচুড়ি। বিএনপির নিজেদের মধ্যে অনেক ভাগ। তাদের নিজেদের ঘরেই আগুন জ্বলছে। তারা নিজেদের ঘরের আগুনেই জ্বলেপুড়ে মরবে। তাদের আন্দোলন সব ভুয়া দফা, দাবি ভুয়া। বুধবার (২৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে গাজীপুরের টঙ্গীতে আয়োজিত শান্তি সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, মির্জা ফখরুল খালি কাঁদেন। ইদানীং মিটিংয়ে দাঁড়ালেই কাঁদেন। হায়রে কান্না। কাঁদতে কাঁদতে চোখের পানি শেষ। এত কান্না কোথায় ছিল। ৪৮ দিনে খালেদার জন্য একটা আন্দোলন করতে পারল না মির্জা ফখরুল। খালেদা জিয়ার জন্য বড় কথা বলার অধিকার তাদের নেই। কারণ, আমাদের নেত্রী খালেদা জিয়ার প্রতি দয়া দেখিয়েছেন, মহানুভবতা দেখিয়েছেন; কিন্তু মির্জা ফখরুল ৪৮টা মিনিটের জন্যও কোনো আন্দোলন দেখাতে পারে নাই। খালেদা জিয়ার জন্য কিছুই করতে পারে নাই।
রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধের জন্য দেশের মানুষের কষ্ট বেড়েছে উল্লেখ করে ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আমরা গরিব দেশ। আমরা শাস্তি পাচ্ছি। আমরা কোনো অপরাধ করিনি। আমাদের এই দুর্দিন থাকবে না। নেত্রী সব সামাল দিয়ে যাচ্ছেন। এই সংকট রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধের। বড় বড় দেশের খেলার। ইনশা আল্লাহ আস্তে আস্তে এই সংকট থাকবে না। আমরা যে কারণে কষ্ট পাচ্ছি, তা আস্তে আস্তে দূর হয়ে যাবে।’
বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের তৎপরতার বিষয়টিও উঠে আসে ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যে। প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকেই সামলাতে পারছেন না উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন অনেক বড় বিশ্বনেতা। আপনি প্রেসিডেন্ট, প্রেসিডেন্টই থাকেন, তাতে আমাদের আপত্তি নেই। নিজের দেশের ট্রাম্পকেই সামলাতে পারেন না। এক ট্রাম্পেই আপনাদের ঘুম হারাম হয়ে গেছে। আগে ট্রাম্পকে সামলান। আমাদের বিষয়ে আপনারা কেন মাথা ঘামান।
গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের আয়োজনে বিকেল সাড়ে তিনটায় টঙ্গীর সফিউদ্দিন সরকার একাডেমি অ্যান্ড কলেজ মাঠে সমাবেশ শুরু হয়। বেলা দুইটা থেকে খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে দলীয় নেতা–কর্মীরা সমাবেশে আসতে থাকেন। স্লোগান মিছিলে সরগরম হয়ে উঠে পুরো এলাকা।
দলীয় নেতা–কর্মীদের মাঠে থাকার আহ্বান জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘অক্টোবর মাসে নাকি সব শেষ। শেখ হাসিনার নাকি মেয়াদ শেষ। বিএনপির কী হবে অক্টোবরে। ১৫টা অক্টোবর দেখলাম। এবারও অক্টোবর আসবে। আগামী বছরও অক্টোবর আসবে। তখনো এই শেখ হাসিনাই ক্ষমতায় থাকবে ইনশা আল্লাহ। আর এ জন্য সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। আমাদের ফাইনাল খেলা হবে আগামী জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে। এ জন্য সবাইকে একযোগে মাঠে থাকতে হবে।’
গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আজমত উল্লা খানের সভাপতিত্বে সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন দলটির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আবদুর রহমান, গাজীপুর–৪ আসনের (কাপাসিয়া) সংসদ সদস্য ও সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য সিমিন হোসেন রিমি, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ প্রমুখ।