ঢাকাবৃহস্পতিবার , ৩১ ডিসেম্বর ২০২০
  1. Covid-19
  2. অপরাধ ও আদালত
  3. অর্থনীতি
  4. আন্তর্জাতিক
  5. ইসলাম ডেস্ক
  6. কৃষি ও অর্থনীতি
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয়
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. দেশজুড়ে
  11. নির্বাচন
  12. বানিজ্য
  13. বিনোদন
  14. ভিডিও গ্যালারী
  15. মুক্ত মতামত ও বিবিধ কথা
আজকের সর্বশেষ সবখবর

আড়াই লাখ টাকার স্কুল ভবন মাত্র ৩২ হাজার নির্ধারণ : বিক্রির নামে হরিলুট!

প্রতিবেদক
প্রতিদিনের বাংলাদেশ
ডিসেম্বর ৩১, ২০২০ ৫:০৭ অপরাহ্ণ
Link Copied!

আশরাফুল হক, লালমনিরহাট।। লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলায় সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পরিত্যাক্ত ভবন বিক্রিতে ব্যাপক অনীয়মের অভিযোগ উঠেছে। আড়াই লাখ টাকার ভবনটির সরকারী মুল্য ধরা হয়েছে মাত্র ৩২ হাজার টাকা।

জানা গেছে, জরাজীর্ন ভবনে ক্লাশের অনুপযোগি হওয়ায় আদিতমারী উপজেলার ৭টি বিদ্যালয়ের ভবন পরিত্যাক্ত ঘোষনা করে নতুন ভবন নির্মানে বরাদ্ধ দেয় সরকার। পরিত্যাক্ত এসব ভবন বিক্রি করতে উপজেলা শিক্ষা কমিটির সুপারীশে উপজেলা প্রকৌশল দফতরকে মুল্য নির্ধারনের পত্র পাঠায় উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগ। যার প্রেক্ষিতে সকল ভবনের মুল্য নির্ধারন করে দিলে প্রকাশ্য নিলামে বিক্রির সিদ্ধান্ত গ্রহন করে উপজেলা শিক্ষা কমিটি। উপজেলা প্রকৌশল বিভাগের নির্ধারন করা মুল্যে দেখা গেছে, হরিদাস সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মুল্য ৩৮ হাজার ৪৭৪টাকা, ১ নং দুরাকুটি কলোনী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ২০ হাজার ৩৭২টাকা, দেওডোবা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৩৫হাজার ৪২টাকা, মহিষখোচা বালাপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৩২হাজার ২৬১টাকা, ছাবেরা খাতুন সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১৪ হাজার ৫৭০ টাকা, ফলিমারী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৩৯হাজার ৮৩৪টাকা এবং এ্যাঙ্গেলের (লোহার) কাঠামোর ভেলাবাড়ি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বড় বড় দুইটি পাকা ঘরের মুল্য ধরা হয়েছে মাত্র ২৮ হাজার ৬২৮ টাকা মাত্র।
উপজেলা প্রকৌশল দফতরের বেঁধে দেয়া সরকারী মুল্য দেখে অনেকেই দেশকে শায়েস্তা খাঁ’র আমল বলে ব্যাখ্যা করেছেন। সরকারী মুল্যের একটাকা বেশি দর হলেই বিক্রিতে বাঁধা থাকে না প্রকাশ্য নিলাম কমিটির। ফলে নেগোশিয়েট করে একটি চক্র এসব ভবন নাম মাত্র মুল্যে সরকারের কাছে ক্রয় করে ওই বিদ্যালয় মাঠেই ৬/৭ গুণ বেশি দামে বিক্রি করছেন। এতে অনেক বড় অংশের রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সরকার।

৭টি ভবনের মধ্যে ৪টি প্রকাশ্যে নিলামে বিক্রি হয়েছে প্রকৌশল বিভাগের বেঁধে দেয়া নাম মাত্র মুল্যে। বুধবার(৩০ ডিসেম্বর) ভেলাবাড়ি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবনটি নেগোশিয়েটে ব্যর্থ হয়ে হট্টগোল পাকিয়ে কর্তৃপক্ষকে নিলাম স্থগিত করতে বাধ্য করান নেগোশিয়েট চক্রটি।

বিক্রিত ৪টি নিলাম থেকে জানা গেছে, মহিষখোচা বালাপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সরকারী মুল্য ৩২হাজার ২৬১ টাকার স্থলে নিলামে ৩৫হাজারে বিক্রি করে নিলাম কমিটি। সেই কমিটির উপস্থিতিতে ওই ভবনটি ২লাখ ৪১ হাজার টাকায় বিক্রি করেন নেগোশিয়েট চক্রটি। দেওডোবা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবনটি নিলামে মাত্র ৩৬হাজারে বিক্রি হলেও চক্রটি ওই মাঠেই বিক্রি করেছেন এক লাখ ৬৫হাজার টাকায়। একই ভাবে হরিদাস সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ৩৪হাজার ৯৭৪টাকায় ও দুরাকুটি কলোনী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ৭৩হাজার টাকায় বিক্রি করে নিলাম কমিটি। নেগোশিয়েট চক্রটি প্রকাশ্য নিলামের সিন্ডিকেট তৈরী করে হাতিয়ে নিচ্ছেন লাখ লাখ টাকা। রাজস্ব বঞ্চিত হচ্ছে সরকার।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন শিক্ষক বলেন, সরকারী পন্য ক্রয়ের সময় যেমন দাম ৬/৭গুণ বাড়ানো হয়। অনুরুপ ভাবে বিক্রির সময়ও ৬/৭গুণ কমানো হয়। সরকারী কিছু অসাধু কর্মকর্তা নিজেদের পকেট ভড়াতে গোপনে নিলাম দেন এবং নেগোশিয়েট চক্রগুলোকে লালন করেন। এজন্যই সরকার রাজস্ব হারাচ্ছে। বিক্রিত মুল্য দেখে মনে হচ্ছে -দেশের বাজারে শায়েস্তা খাঁ’র আমল চলছে। নিলাম কমিটির সদস্য সচিব উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার এনএম শরীফুল ইসলাম বলেন, প্রকৌশল বিভাগ সরকারী মুল্য নির্ধারন করেছেন। সেই মুল্যের সমপরিমান হলে প্রকাশ্য নিলামে বিক্রিতে বাঁধা থাকে না। সরকারী মুল্যের উপর দাম পাওয়ায় তা বিক্রি করা হয়েছে। ক্রেতারা প্রকাশ্য ডাকে ডাকতে রাজি হয় না। তখন বিক্রি করতে বাধ্য হতে হয়।

ভবনের মুল্য নির্ধারনকারী উপজেলা প্রকৌশলী সোহেল রানা বলেন, মনগরা নয়, সরকারী সিডিউল মতেই মুল্য নির্ধারন করা হয়েছে। ভবনগুলো দেখে মাপযোগ করেই সরকারী মুল্য নির্ধারন করা হয়েছে। সরকারী মুল্যে অতিক্রম হলেই প্রকাশ্য নিলামে বিক্রির নিয়ম আছে।

প্রকাশ্য নিলাম কমিটির সভাপতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা(ইউএনও) মুহাম্মদ মনসুর উদ্দিন বলেন, সরকারী মুল্যের উপর হলে নিলামে বিক্রি করা যায়। নিলামে বিক্রিত ভবন সমূহের সরকারীর মুল্য নির্ধারন করেন উপজেলা প্রকৌশল দফতর। তবে নিলামে কোন ধারনের অনীয়ম হলে তা অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।

আপনার মন্তব্য লিখুন