নিজস্ব প্রতিবেদক:: আসছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। ইতিমধ্যে সেই আমেজ ও উত্তেজনা দেখা দিয়েছে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে। চলতি বছরের ডিসেম্বর অথবা আগামী বছরের জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে ভোট করার প্রস্তুতি নিচ্ছে কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন। এই নির্বাচনে কতটি ভোটকেন্দ্র থাকবে তার খসড়া তালিকা প্রকাশ হবে আজ বুধবার (১৬ আগস্ট)। ইসির ধারণা, এবার ৩০০ সংসদীয় আসনে ১১ কোটি ৯১ লাখেরও বেশি ভোটারের বিপরীতে সম্ভাব্য ৪২ হাজার ভোটকেন্দ্র লাগবে।
নির্বাচনের জন্য ইসির কেন্দ্র স্থাপন ও ব্যবস্থাপনা নীতিমালা অনুযায়ী জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নেতৃত্বে গঠিত কমিটি সংশ্লিষ্টদের নিয়ে নির্বাচনী এলাকা পরিদর্শন করে ভোটকেন্দ্রের সম্ভাব্য তালিকা প্রস্তুত করেছে। সেই হিসাবে আজ তালিকা প্রকাশ হলে ভোটকেন্দ্র নিয়ে দাবি বা আপত্তি জানানো শেষ তারিখ থাকবে আগামী ৩১ আগস্ট পর্যন্ত। দাবি-আপত্তি উঠলে তা নিষ্পত্তি করা হবে ১১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে। এছাড়া ভোটকেন্দ্র চূড়ান্ত করা হবে ১৭ সেপ্টেম্বর।
ঢাকার জ্যেষ্ঠ জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. মুনীর হোসাইন খান সাংবাদিকদের বলেন, নির্ধারিত কমিটির মাধ্যমে ভোটকেন্দ্র পরিদর্শন করে খসড়া প্রকাশের সব প্রস্তুতি শেষ হয়েছে। বুধবার সারাদেশের মতো ঢাকা জেলার অফিসগুলোতে সবার জন্য তা উন্মুক্ত থাকবে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কারও কোনো দাবি-আপত্তি থাকলে এ নিয়ে আবেদন জমা দেওয়ার সুযোগ রয়েছে।
এদিকে ভোটকেন্দ্র স্থাপনে আগের সিংহভাগ কেন্দ্র বহাল রাখার চেষ্টা করছে ইসি। এছাড়া নতুন কিছু কেন্দ্রের প্রস্তাব করা হয়েছে।
মুনীর হোসাইন খান জানান, একাদশ সংসদ নির্বাচনের তুলনায় ভোটার বাড়ায় দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে ভোটকেন্দ্রও বাড়বে।
নির্বাচন কমিশনের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, একাদশ সংসদ নির্বাচনে ১০ কোটি ৪০ লাখেরও বেশি ভোটারের জন্য ৪০ হাজারেরও বেশি ভোটকেন্দ্র ছিল; ভোটকক্ষ ছিল ২ লাখের বেশি। দশম সংসদ নির্বাচনে ৯ কোটি ১৯ লাখ ভোটারের জন্য ভোটকেন্দ্র ছিল ৩৭ হাজার ৭০৭টি; ভোটকক্ষ ছিল ১ লাখ ৮৯ হাজার ৭৮টি। আর নবম সংসদ নির্বাচনে ৮ কোটি ১০ লাখ ভোটারের জন্য কেন্দ্র ছিল ৩৫ হাজার ২৬৩টি; ভোটকক্ষ ছিল ১ লাখ ৭৭ হাজার ২৭৭টি।
গত মার্চে ইসি জানিয়েছিল, ভোটার এখন ১১ কোটি ৯১ লাখ ৫১ হাজার ৪৪০ জন। সেজন্য ৪২ হাজারের মতো কেন্দ্র হতে পারে।
ময়মনসিংহ আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ বেলায়েত হোসেন চৌধুরী বলেন, কোনো কেন্দ্র নিয়ে আপত্তি বা দাবি থাকলে লিখিত আবেদনের বিধান রয়েছে। জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে আহ্বায়ক কমিটি এসব আবেদন যাচাই-বাছাই করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেবে।
সিলেটের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ফয়সল কাদের বলেন, খসড়া প্রকাশের পর দাবি-আপত্তি পেলে সেগুলো সরেজমিন তদন্তেরে মাধ্যমে কমিটি চূড়ান্ত করবে। কোনো কেন্দ্রের পক্ষে-বিপক্ষে আবেদন এলে তা শুনানির মাধ্যমে নিষ্পত্তি করা হতে পারে। ইসি ঘোষিত নির্ধারিত সময়ের মধ্যে চূড়ান্ত করা হবে ভোটকেন্দ্র।
ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ জানান, সেপ্টেম্বরের মধ্যে খসড়া ভোটকেন্দ্রের তালিকা চূড়ান্ত হওয়ার পর আইন অনুযায়ী ভোটের অন্তত ২৫ দিন আগে গেজেট প্রকাশ করবে নির্বাচন কমিশন।
তিনি জানান, গেজেট প্রকাশের পরও আপত্তি উঠলে তা যাচাই করে রিটার্নিং কর্মকর্তা জরুরি ভিত্তিতে কমিশনকে জানাবেন। তখন বিষয়টি পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত দেওয়া হবে।