আশরাফুল হক, লালমনিরহাট।। সকালে ঘুম থেকে উঠেই দেখি উঠানে ভুমিদস্যুর ছায়লা ও বেড়া। রাস্তা বন্ধ করায় বাড়ি থেকে বের হতেও পারছি না। হামরা গরিব মানুষ। কই যামো?
মঙ্গলবার (১৮ জুলাই) দুপুরে এ কথাগুলো বলেন লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের ভারতীয় সীমান্ত ঘেঁসা গ্রাম কুমারটারীর লক্ষ্ণী বালা (৭৫)। তিনি ওই গ্রামের মৃত নগেন চন্দ্র পালের স্ত্রী।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, মাটির তৈজসপত্র তৈরী চলত লক্ষ্ণী বালাদের সংসার। কয়েক বছর আগে স্বামীর মৃত্যুর পর ছেলেরা পৈত্রিক পেশায় কাজ করে সামান্য আয়ের সঞ্চিত অর্থে বাড়ির সামনে প্রতিবেশী কান্দুরা পালের ১৩ শতাংশ জমি ক্রয় করে বাড়ি করেন। বাড়ির উঠানে ছিল খড়ে গাধা আর গরু রাখার স্থান।
সেই জমির উপর চোখ পড়ে প্রতিবেশি মৃত বক্তার আলীর ছেলে প্রভাবশালী সুলতান মিয়ার। গত ১৩ জুন বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে সেই জমির চার দিকে বেড়া দিয়ে ঘিরে নেন সুলতান মিয়া। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদে অভিযোগ করেন লক্ষ্ণী বালার ছেলে নিরন চন্দ্র পাল। অনেক চেষ্টা করেও ভুমি দস্যু সুলতানকে বৈঠকে হাজির করতে না পেয়ে থানার স্মরনাপন্ন হওয়ার পরামর্শ দেন ইউপি চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান নান্নু।
এ ঘটনায় নিরন চন্দ্র পাল বাদি হয়ে ভুমিদস্যু সুলতানকে প্রধান করে ৩ জনের বিরুদ্ধে আদিতমারী থানায় মঙ্গলবার (১১ জুলাই) অভিযোগ দায়ের করেন। সোমবার (১৭ জুলাই) পুলিশ ঘটনাস্থলে তদন্তে গেলে আরও ক্ষিপ্ত হন সুলতান মিয়া। সোমবার রাতের আঁধারে ওই জমির উপর দুইটি ছায়লা উত্তোলন করে জমি দখলের চেষ্টা করে।
মঙ্গলবার সকালে ঘুম থেকে উঠে ছায়লা দেখতে পান লক্ষ্ণী বালার পরিবার। সকাল থেকে বাড়িতেই অবরুদ্ধ তারা। সকালে বিষয়টি মোবাইলে থানা পুলিশকে অবগত করা হলেও আইনগত কোন পদক্ষেপ নেয়া হয়নি বলেও দাবি করেন লক্ষ্ণী বালা।
তবে অভিযুক্ত সুলতান মিয়া বলেন, ৯৩ সালে ওই জমি কান্দুরা ক্রয় করলেও ৯০ সালের রেকর্ড মুলে ওই জমির মালিক আমরা। কান্দুরা পুনরায় নিরনের নিকট বিক্রি করেছে কি না তা আমরা জানি না।রেকর্ড মুলে মালিক হয়ে ওই জমিতে আমরা ছায়লা উঠাইছি।
আদিতমারী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোজাম্মেল হক বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। অফিসার তদন্ত করছেন। তদন্ত শেষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।