১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধুর ডাকে সারা দিয়ে আমাদের পূর্ব পুরুষরা ঝাপিয়ে পরেন মুক্তি যুদ্ধে। দীর্ঘ নয় মাস সংগ্রাম করে ছিনিয়ে নিয়ে আসেন লাল সবুজের পতাকা।
শ্রদ্ধা বরে স্বরণ করছি মহান মুক্তি যুদ্ধে শহীদ সেই সব বীরদের যাদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে পাওয়া আমার স্বাধীনতা আমার বাংলাদেশ। মৌলভীবাজার হানাদার মুক্ত দিবস ওমর হোক সফল হোক। ৮ ডিসেম্বর অমর হোক সফল হোক। আজকের এই দিনে তৎকালীন গণপরিষদ সদস্য (সংসদ সদস্য) সংবিধান রচয়িতা কালীন সাক্ষর দাতাবীর মুক্তিযোদ্ধা আজিজুর রহমান, মহকুমা পরিষদ কার্যালয়ে স্বাধীন বাংলা দেশের পতাকা উত্তোলন করে এ অঞ্চল কে স্বাধীন ঘোষণা করেন।
একাত্তরের এই দিনে মৌলভীবাজার শহর তথা জেলার সর্বত্র স্বাধীন বাংলাদেশের লাল সবুজ পতাকা ওড়তে থাকে। পাক হানাদারবাহিনীকে হটিয়ে মুক্তিযোদ্ধারা মৌলভীবাজারকে শত্রুমুক্ত এলাকা হিসেবে ঘোষনা করেন। প্রয়াত মৌলভীবাজার জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা আজিজুর রহমান ও জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি প্রবীণ আইনজীবী বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট মুজিবুর রহমান মুজিব বলে ছিলেন এই এলাকায় জেড ফোর্সের সদস্যরা দায়িত্বে ছিলেন।
ডিসেম্বরের শুরুতে মুক্তিযোদ্ধারা মিত্রবাহিনীর সহযোগিতায় আক্রমণ আরও তীব্র করে। ৪ ডিসেম্বর জেলার কমলগঞ্জ উপজেলা শত্রুমুক্ত হয়। ৫ ডিসেম্বর জেলার সর্বত্র শুরু হয় তীব্র আক্রমণ। জেলার চারদিক দিকে মুক্তি ও মিত্রবাহিনীর যৌথ আক্রমণে একের পর এক এলাকা শত্রুমুক্ত হতে থাকে। ৫ ও ৬ ডিসেম্বর দুই দিনে মুক্তিযোদ্ধারা রাজনগর, শ্রীমঙ্গল, কুলাউড়া ও মুন্সীবাজার এলাকামুক্ত করে মৌলভীবাজার শহর অভিমুখে আসার জন্য অভিযান শুরু করেন। ৬ ডিসেম্বর সন্ধ্যার পর মিত্র ও মুক্তিবাহিনী শহর ঘেরাও করে।এখানে মহকুমা হেড কোয়ার্টার থাকার কারণে পাকবাহিনীর বিগ্রেড হেড কোয়ার্টার ছিল। জেড ফোর্সের ১৭টি ইউনিটের মধ্যে ২টি ইউনিট কুলাউড়ার দিকে গেলেও বাকি ১৫ টি ইউনিট নিয়ে তারা মৌলভীবাজার শহরে ঢুকার চেষ্টা শুরু করেন। তুমুল যুদ্ধ আর অনেক হতাহতের পর ৭ ডিসেম্বরই মৌলভীবাজার পুরো মহকুমা এলাকা থেকে পাকবাহিনীকে হটিয়ে মুক্তিযোদ্ধারা শহরে ঢুকেন। কিন্তু শহরের বিভিন্ন স্থানে পাকবাহিনী প্রচুর মাইনসহ অস্ত্র পুতে রাখায় এগুলো অপসারণ ও নিষক্রিয় করার পর ৮ ডিসেম্বর মৌলভীবাজার মুক্ত এলাকা ঘোষণা করা হয়।
পাক হানাদার মুক্ত দিবস অমর সফল হোক।
জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।