ফেনীতে এক প্রতারক মহিলা তার সন্তানদের মাথায় ব্যান্ডেজ লাগিয়ে প্রতারণা করে ভিক্ষাবৃত্তি করে আসছে অনেক দিন ধরে। দীর্ঘদিন ধরে শহরের কোন কোন মোড়ে তার অবুঝ দুই সন্তানের মাথায় ব্যান্ডেজ পেঁচিয়ে নিজেকে নিঃস্ব পরিচয় দিয়ে মানুষের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে এই প্রতারক মহিলা। বিষয়টি এসেছে প্রশাসনের নজরে। নেওয়া হবে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা।
২৯ নভেম্বর (রবিবার) সন্ধ্যায়
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে (একাডেমীতে ডাস্টবিন থেকে দুটি শিশু উদ্ধার) শিরোনামে ভাইরাল হওয়ার কিছু সময় পরে তমিজিয়া মসজিদের সামনে সেই বাচ্চা দুটি সহ এই প্রতারক মহিলাটি মানুষের কাছে টাকা খুঁজছে ।
এর আগে ২০১৮সালের শবেবরাত এর রাত, হাসপাতালে অজ্ঞাত মহিলা শুনে ছুটে যায় ফেনীর সেচ্ছাসেবী মামুন মিয়াজী।সেখান থেকে তাকে ও বাচ্চাদের হাসপাতালে ভর্তি করায়, বাচ্চার জামা কাপড় পরিবর্তন করারচেষ্টা করলে, ওই মহিলার চিৎকার চেঁচামেচি করে বলে তার স্বামীর কাছে যাবে, এর পরে বাচ্চাদের নিয়ে মহিলাটি হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে যায়।এর ১০ দিন পর আবার ফেনী শহর থেকে বাচ্চা দুটি সহ মহিলাকে এনে আবার হাসপাতালে ভর্তি হলে এক ঘন্টা পর চলে যায়।
ডাক্তার বাচ্ছাদের দেখে জানান, কোনো মাদকদ্রব্য অথবা ঔষধের মাধ্যমে ঘুমিয়ে রাখা হয় শিশু দুটিকে এবং সেই সুযোগ নিয়ে মানুষের কাছে টাকা খুজে এই মহিলা । কিছুদিন আগে ৯৯৯ থেকে পুলিশের কাছে কল আসে এই শিশুদের নিয়ে, পুলিশের কাজে সহায়তা করতে সহায় সংগঠন থেকে শহরের মুক্ত বাজার এলাকা থেকে এম্বুলেন্স করে হাসপাতালে আনলে বাচ্চাদের মাথার ব্যান্ডেজ খুলে দেখা যায় মাথায় কোন ক্ষত ছাড়া ব্যান্ডেজ লাগিয়ে রাখা হয়,মানুষকে বিভ্রান্ত করার জন্য।
গত ১৫দিন আগে রাত ২টায় মহিপাল ফ্লাইওভার এর নিচে এক মহিলা ইট দিয়ে বাচ্ছা এবং নিজের মাথা আঘাত করতেছে বলে খবর পেয়ে স্থানীয় কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম মিয়াজী, সহায় স্বেচ্চাসেবী সংগঠনের সভাপতি মঞ্জিলা মিমিকে অবগত করলে সেখানে গিয়ে দেখা যায়, এই প্রতারক মহিলা । তখন বাচ্ছাদের নিয়ে হাসপাতালে নেওয়া হলে সকালে আবার চলে যায়।তাকে যখনি বলা হয় চলো তোমাকে কাজ দিবো এবং তোমার
স্বামীর কাছে নিয়ে যাবো তখন সে পালায় ।
মহিলাটির কথা অনুযায়ী তার নাম সাথী স্বামীর নাম সুজন,বাড়ী রংপুরে।
সবুজ বাংলা নামের একটি এনজিও নির্বাহী পরিচালক রাসেল পাটোয়ারী জানান, গত দেড় মাস আগে রাত ১১ টার সময় শহরের বাঁশপাড়া এলাকায় এক নারী রাস্তায় বসে শিশু বাচ্চা নিয়ে সাহায্য চাচ্ছে এমনটা শুনে তিনি কাছে গিয়ে দেখেন শিশুদের মাথায় ব্যান্ডেজ লাগানো। প্রাথমিকভাবে মনে হয়ছিল শিশুরা গুরুতর আহত। তখন শিশুদের চিৎকার জন্য ওই মহিলাকে তাৎক্ষণিক ৫০০ টাকা দেওয়া হয়। সেই সময়ে উপস্থিত অনেকে অর্থ দিয়ে ওই মহিলাকে সাহায্য করে। এইভাবে প্রতিনিয়ত শহরের মানুষের সাথে প্রতারণা করে আসছে এই প্রতারক মহিলা।