সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার হিজলদী গ্রামে ২০০২ সালের ২৬ আগস্ট রাতে ধর্ষণের শিকার মাহফুজা খাতুনের সাথে দেখা করে মামলাটি পুনরুজ্জীবিত ও বিচারের মাধ্যমে ধর্ষকদের শাস্তি নিশ্চিতের আশ্বাস দিয়েছেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এসএম মুনির।
শনিবার দুপুরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে বেশ কিছু উপহার নিয়ে হিজলদী গ্রামে তার বাড়িতে গিয়ে মাহফুজা খাতুনের সাথে সাক্ষাৎ করেন তিনি।
এসময় ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এসএম মুনির গণমাধ্যমকে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ধর্ষণের শিকার মাহফুজা খাতুনের সাথে সাক্ষাৎ করে তার খোঁজখবর নেওয়ার জন্য পাঠিয়েছেন। দুঃখের বিষয় ধর্ষণের শিকার হলেও বিচার পায়নি মাহফুজা খাতুন। আমরা তার মামলাটি দ্রুত পুনরুজ্জীবিত করে বিচারের মাধ্যমে ধর্ষকদের শাস্তি নিশ্চিতের চেষ্টা করবো।
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এসএম মুনিরের সাথে এসময় কলারোয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফিরোজ আহমেদ স্বপন, উপজেলা চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম লাল্টু, সাতক্ষীরা আদালতের পিপি অ্যাড. আব্দুল লতিফসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় মাহফুজা খাতুন নিজও তাকে নির্যাতনের ঘটনাসহ তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেতা ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলার বিচার দাবি করেছেন।
প্রসঙ্গত, ২০০২ সালের ২৬ আগস্ট হিজলদী গ্রামে নিজ বাড়িতে ঘুমিয়ে ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা আতিয়ার রহমানের স্ত্রী স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেত্রী মাহফুজা খাতুন। গভীর রাতে তাকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে নিকটস্থ একটি জঙ্গলে ফেলে তার শ্লীলতাহানি করা হয়। অচেতন অবস্থায় তাকে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তিনি চিকিৎসাধীন ছিলেন। এ ঘটনার পর ৩০ আগস্ট খুলনা সফররত তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা শেখ হাসিনা খুলনা থেকে তাকে দেখতে সাতক্ষীরা হাসপাতালে আসেন। পরে তিনি যশোর অভিমুখে ফিরে যাবার সময় তার গাড়ি বহরে হামলার ঘটনা ঘটে। সে সময় শেখ হাসিনা প্রাণে রক্ষা পেলেও তার সফর সঙ্গীদের কয়েকজন আহত হন।
এদিকে, মাহফুজা খাতুনের ধর্ষণ মামলায় সাতক্ষীরা আদালতে আমিরুল বৈদ্য, আসাদুজ্জামান, তোজাম্বর ও হাসান এর বিরুদ্ধে পুলিশ ২০০২ সালের ২১ নভেম্বর চার্জশীট দিলেও বিচারে সব আসামি খালাস পায়। এরপর থেকে মাহফুজা খাতুন আরও আতংকিত হয়ে পড়েন। পরে তিনি চলে যান যশোরের মনিরামপুরে। এরপর দীর্ঘসময় ঢাকায় কাটিয়ে সম্প্রতি ফিরেছেন নিজ বাড়িতে।
স্থানীয় চন্দনপুর ইউপি চেয়ারম্যান মনিরুল ইসলাম মনি জানান, শেখ হাসিনা ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় আসার পর বীর মুক্তিযোদ্ধা আতিয়ার রহমানকে ১৫ শতক জমি ৯৯ বছরের জন্য বন্দোবস্ত দেন। এই খাস জমিতেই তারা বসবাস করতেন। এই জমি কেড়ে নেওয়ার লক্ষ্যে মাহফুজা খাতুনকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে পাশবিক নির্যাতন চালানো হয়। একই সাথে তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী শেখ হাসিনার গাড়ি বহরে হামলা চালানো হয়। আমরা এসব ঘটনার সঠিক বিচার চাই।