ঢাকাবুধবার , ২ ডিসেম্বর ২০২০
  1. Covid-19
  2. অপরাধ ও আদালত
  3. অর্থনীতি
  4. আন্তর্জাতিক
  5. ইসলাম ডেস্ক
  6. কৃষি ও অর্থনীতি
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয়
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. দেশজুড়ে
  11. নির্বাচন
  12. বানিজ্য
  13. বিনোদন
  14. ভিডিও গ্যালারী
  15. মুক্ত মতামত ও বিবিধ কথা
আজকের সর্বশেষ সবখবর

কাগজের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় বিনামূল্যে বই ছাপার কাজ বন্ধ!

প্রতিবেদক
প্রতিদিনের বাংলাদেশ
ডিসেম্বর ২, ২০২০ ৭:৫৮ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

একই মাস- নভেম্বর। একই বিষয়- বিনামূল্যের পাঠ্যবই। কিন্তু গত দু’বছরের সঙ্গে চলতি বছরের হিসাবে বিরাট তফাৎ। গতকাল ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত সারাদেশে পাঠানো সম্ভব হয়েছে ৭/৮ কোটি বই। একই সময়ে আগের দুই বছর পৌঁছে গিয়েছিল ২৫-৩০ কোটি বই। মঙ্গলবার (১ ডিসেম্বর) দৈনিক সংবাদ পত্রিকায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়।

প্রতিবেদনে আরও জানা যায়, মূলত কাগজের দাম নিয়ে টানাটানিতে আটকে আছে বিনামূল্যের পাঠ্যবই ছাপার কাজ। বই ছাপার দরপত্র ডাকা হয়েছিল জুন মাসে। সে সময় দরপত্রে দেয়া দামে এখন আর কাগজ কেনা যাচ্ছে না- বই ছাপাতে না পারার পক্ষে এই হলো মুদ্রাকরদের যুক্তি।

এনসিটিবি’র একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে গতকাল জানিয়েছেন, ‘এখন পর্যন্ত প্রাথমিক স্তরের চার কোটি ৫৩ লাখ ৬৪ হাজার ২৬৩ কপি এবং প্রাক-প্রাথমিকের ২৬ লাখ ৩৫ হাজার ৭৯৮ কপি বই উপজেলা পর্যায়ে সরবরাহ করা সম্ভব হয়েছে। কিন্তু মাধ্যমিক ও অন্যান্য স্তরের বই ছাপার কাজ স্থবির হয়ে পড়েছে। এই স্তরে কয়েকটি ছাপাখানা প্রতিষ্ঠান ৫/৭ কোটি বইয়ের কভার পেইজ ছেপে বসে রয়েছে, কিন্তু কাগজের অভাবে ছাপার কাজ আটকে রয়েছে। এভাবে চলতে থাকলে ফেব্রুয়ারি-মার্চের আগে সব বই ছাপার কাজ শেষ হবে না।’

২০২১ শিক্ষাবর্ষের জন্য প্রাক-প্রাথমিক থেকে নবম শ্রেণী পর্যন্ত প্রায় ৩৬ কোটি পাঠ্যবই ছাপানো হচ্ছে। ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যেই সব বই ছাপা ও সরবরাহ শেষ করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। ২০২১ সালে প্রাথমিক স্তরের (প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণী) ৯ কোটি ৫৮ লাখ ৩২ হাজার ৭১৪ কপি এবং প্রাক-প্রাথমিক স্তরের ৬৬ লাখ ৭৯ হাজার ২২২ কপি বই ছাপা হচ্ছে। আর ৬ষ্ঠ থেকে ৯ম শ্রেণীর জন্য ব্রেইল বইসহ (৯ হাজার ৫০৪টি) ২৪ কোটি ৪১ লাখ ২২ হাজার ৩৪৯টি পাঠ্যবই ছাপানো হচ্ছে। কারিগরি ও মাদ্রাসা স্তরসহ সবমিলিয়ে প্রায় ৩৬ কোটি পাঠ্যবই ছাপা হচ্ছে।

মুদ্রণ শিল্প সমিতির সাবেক সভাপতি তোফায়েল খান বলছেন, ‘আমরা দরপত্রে অংশগ্রহণ করি গত জুনে, ওই সময়ের তুলনায় এখন কাগজের দাম প্রতিটনে পাঁচ হাজার টাকা বেড়েছে। এ কারণে কাগজ মিল মালিকরা এখন আগের দামে কাগজ দিচ্ছে না। বেশির ভাগ মিল মালিকই উৎপাদন বন্ধ করে দিয়েছে।’

তারা শুল্কমুক্ত সুবিধায় বিদেশ থেকে কাগজ আমদানির সুযোগ দেয়ার দাবিও জানিয়েছেন। কেন? তার বক্তব্য, আন্তর্জাতিক দরপত্রে পাঠ্যবই ছাপা কাজ পেলে বিদেশি প্রতিষ্ঠান সরকারকে কোন ভ্যাট-টেক্স দেয় না। তারাও সেই সুবিধা চাইছেন।

কাগজ মিল মালিকরা মুদ্রাকারদের চুক্তি অনুযায়ী কাগজ সরবরাহ করছে না বলেও অভিযোগ তার। তবে মেঘনা পেপার মিল’র জেনারেল ম্যানেজার ইউসুফ আলী সরকার বলছেন, এই বক্তব্য ঠিক নয়। কারণ কোন মুদ্রাকরের সঙ্গে লিখিত চুক্তি হয়নি। উল্টো তিনি প্রশ্ন তুলছেন, ‘তারা বাজার মূল্যের চেয়ে কম দাম দেখিয়ে কাজ নিয়েছে। আমরা লোকসান দিয়ে কেন কাগজ বিক্রি করব?’

এনসিটিবি মনে করছে কাগজ সংকটের বিষয়টি ব্যবসায়ীদের নিজেদের ব্যাপার। এনসিটিবির চেয়ারম্যান প্রফেসর নারায়ণ চন্দ্র সাহা বলছেন, ‘তারা টেন্ডারে (দরপত্র) অংশ নিয়ে কাজ নিয়েছে, প্রোডাকশন (ছাপা) শেষে আমাদের বই সরবরাহ করবে। এরপরও আমরা কাগজ মিল মালিকদের সঙ্গে কথা বলছি, আশা করছি সংকট কেটে যাবে।’

এনসিটিবি ঊর্ধ্বতন ভাণ্ডার কর্মকর্তা আবু হেনা মাশুকুর রহমান বলেন, ‘আমরা এনসিটিবির ১৫ হাজার মেট্রিক টন কাগজের মধ্যে ইতোমধ্যে ১১ হাজার মেট্রিক টন কাগজ কিনে ছাপাখানার মালিকদের সরবরাহ করেছি। বাকি কাগজও তারা খুব শীঘ্রই পেয়ে যাবে। বাজারে কাগজের কোন সংকট নেই। সংকট হলো- কাগজের মূল্যের।’

আপনার মন্তব্য লিখুন