রাসেল ইসলাম, নিজস্ব প্রতিবেদকঃ লালমনিরহাট সদর উপজেলার মহেন্দ্রনগর ইউনিয়নের মনোরম গ্রামের জাহিদ হাসান বসুনিয়া লেখাপড়া শেষ করে চাকরির পেছনে না ছুটে উদ্যোক্তা হওয়ার চেষ্টা করছেন। তিন বিঘা জমিতে স্ট্রবেরি চাষ করে ভাগ্যবদলের স্বপ্ন দেখছেন শিক্ষিত এ যুবক। প্রথমবারেই দ্বিগুণ লাভের আশা করছেন তরুণ এ উদ্যোক্তা।
দারিদ্র্যতাকে বিতাড়িত করে এখন তিনি স্বাবলম্বী। শ্রমপাগল জাহিদ বসুনিয়া ইতোমধ্যে লাখ টাকার স্ট্রবেরি বিক্রি করেছেন। চলতি মৌসুমে প্রায় ৮ লাখ টাকার স্ট্রবেরি বিক্রি করতে পারবেন বলে জানান তিনি। তবে সুষ্ঠু বাজারব্যবস্থা না থাকায় বেকায়দায় পড়তে হচ্ছে জাহিদকে ।
স্ট্রবেরি চাষ করে শুধু নিজেই স্বাবলম্বী হননি, তার সফলতা দেখে অনেকেই স্ট্রবেরি চাষে উদ্যোগী হচ্ছেন। ইতোমধ্যে আগামী মৌসুমে স্ট্রবেরি চাষ করবেন আরো ৫ কৃষক। এর ফলে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে এলাকার ৪০টি হতদরিদ্র পরিবারের।
জাহিদ পড়াশোনা শেষ করে অবসর সময়ে বাবার রেখে যাওয়া জমিতে কৃষিকাজ করতেন। স্ট্রবেরি চাষের ওপর তার কোনো পূর্ব অভিজ্ঞতা ছিল না। ২০২৩ সালে একটি এনজিওতে প্রশিক্ষণ নেওয়ার পর তিনি স্ট্রবেরি চাষ সম্পর্কে জানতে পারেন।
পরবর্তীতে সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখে স্ট্রবেরি চাষে উদ্যোগী হন এবং বগুড়া থেকে চারা সংগ্রহ করে মাত্র ২০ শতক জমিতে স্ট্রবেরি চাষ শুরু করেন। চলতি বছর চাষ করেছেন ১০০ শতক জমিতে। জাহিদের ক্ষেত জুড়ে এখন আকর্ষণীয় টকটকে লাল বর্ণের স্ট্রবেরি রয়েছে। আকারেও বেশ বড়।
নানা পুষ্টিগুণ ও ভিটামিন এ, সি এবং ই সমৃদ্ধ সৌখিন ও দামি ফল স্ট্রবেরি মূলত শীতপ্রধান দেশের ফসল হলেও বাংলাদেশের আবহাওয়ার রবি মৌসুম সর্বত্র চাষোপযোগী একটি উচ্চফলনশীল ফসল। বিশেষ করে লালমনিরহাটে জলবায়ু, আবহাওয়া ও মাটি স্ট্রবেরি চাষের জন্য উপযোগী। নভেম্বর মাঝামাঝি সময়ে গাছে ফুল আসতে শুরু করে এবং ডিসেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত ফল আহরণ করা যায়।
জাহিদ বসুনিয়া জানান, তার বাগানের উৎপাদিত স্ট্রবেরি এখন লালমনিরহাটের চাহিদা মিটিয়ে রংপুরে সরবরাহ হচ্ছে। তিনি প্রতিকেজি স্ট্রবেরি ৬৫০ টাকা দরে পাইকারি বিক্রি করছেন। এ পর্যন্ত লাখ টাকার স্ট্রবেরি বিক্রি করেছেন এবং মৌসুমের শেষ পর্যন্ত প্রায় ১০ লাখ টাকার বিক্রি করতে পারবেন।
লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক (শস্য) কর্মকর্তা সৈয়দা সিফাত জাহান জানান, লালমনিরহাটের মাটি স্ট্রবেরি চাষের জন্য উপযুক্ত, তাই দিন দিন এই চাষে আগ্রহ বাড়ছে জেলার মানুষের। আমরা কৃষি বিভাগ সব ধরনের সহায়তা করে এই নতুন কৃষকদের পাশে আছি।