রাশেদুল ইসলাম রাশেদ,স্টাফ রিপোর্টার: গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় মসজিদ উন্নয়নের জন্য জেলা পরিষদের বরাদ্দকৃত টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় জাতীয় পার্টির নেতাসহ এক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। মসজিদের টাকা হরিলুট করায় এলাকা জুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার বামনডাঙ্গা ইউনিয়নের জামাল হাট কেন্দ্রীয় মসজিদ সংস্কারের জন্য ২৯ গাইবান্ধা-১, সুন্দরগঞ্জ আসনের স্থানীয় সাংসদ ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারীর কাছে কমিটির লোকজন গেলে তিনি বরাদ্দের বিষয়টি সুবিবেচনার জন্য জেলা পরিষদে পাঠান। এতে গত ২০২০-২১ অর্থ বছরে গাইবান্ধা জেলা পরিষদ কর্তৃক সাধারণ উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় মেসার্স কাজী ট্রেডার্স ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে জামালহাট কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের নামে ৩ লক্ষ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়।
পরে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স কাজী ট্রেডার্সের সত্ত্বাধিকারী রিপন কাজীসহ বামনডাঙ্গা ইউনিয়নের জাতীয় পার্টির সভাপতি রেজাউল হক রেজা মসজিদ কমিটিকে জানান ৩ লক্ষ টাকা থেকে ভ্যাট-ট্যাক্স এবং যাবতীয় খরচ কেটে নিয়ে ১ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা দেয়া হবে এবং আর কোনো টাকা দেয়া হবে না মর্মে ১ লক্ষ ৪০ হাজার টাকার পূবালী ব্যাংক লিমিটেড এর একটি চেক প্রদান করেন। সেই একাউন্টে টাকা না থাকায় মসজিদ কর্তৃপক্ষ চেক নিয়ে মাসের পর মাস ব্যাংকের দরজায় গেলেও টাকা তুলতে পারছেন না বলে জানা গেছে।
এদিকে মসজিদ কমিটি কর্তৃপক্ষ অভিযোগ করে জানান, বরাদ্দের ৩ লক্ষ টাকার মধ্যে কিভাবে ১ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা ভ্যাট ট্যাক্স আর খরচ বাবদ কাটা হলো? খরচের টাকা কেটে নিয়ে একটা চেক দিলেও আমরা টাকা তুলতে পারছি না বলে জানান তারা।
মসজিদের কোষাধ্যক্ষ নুরুল হক জানান, আমাদের সাথে বরাদ্দের টাকা নয়ছয় করে চেক জালিয়াতি করা হয়েছে। একাউন্টে টাকা না থাকায় চেক দিয়ে ব্যাংক থেকে টাকা এখনো উত্তোলন করতে পারছি নি।
এ বিষয়ে মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক আ. হামিদ মিয়ার সাথে কথা হলে তিনি অভিযোগ করে বলেন, চেক দিয়ে আমরা টাকা তুলতে ব্যর্থ হচ্ছি । ১ লক্ষ ৪০ হাজার টাকার চেক প্রদানের ৮ মাস হলেও টাকা তুলতে পারছি না। ব্যাংক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন এই একাউন্টে কোনো টাকা নেই। জাপা নেতা ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে বিষয়টি একাধিকবার জানালেও নানা ভাবে টালবাহানা করছেন বলে অভিযোগ করেন তিনি।
জাপা নেতা রেজাউল হক রেজার সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি সম্পূর্ণ দোষ ঠিকাদারের ওপর চাপিয়ে দিয়ে দায়সারা জবাবে জানান, এটা ঠিকাদারি কাজ। বরাদ্দ জাতীয় পার্টির মাধ্যমে হওয়ায় আমিও গিয়েছি। রেজার উপস্থিতিতে ১ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা কেটে নেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা মসজিদ কমিটি আর ঠিকাদার বুঝবে। আমরা মসজিদের টাকা খাই না। একপর্যায়ে কথার সুর বদল করে রেজা জানান, ঠিকাদারের আসলে এসব ব্যবসা। মসজিদ কমিটি যদি একটু ঝোঁকা-ঝুকি করতো তাহলে সেইসময় চেকে হয়তো টাকার পরিমাণ আরো বেশি নিতে পারতো।
মেসার্স কাজী ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী রিপন কাজীর মুঠোফোনে কল করে সাংবাদিক পরিচয়ে দিলে পরে কথা বলবেন বলে ফোনের সংযোগ কেটে দেন তিনি।
বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তরিকুল ইসলাম খতিয়ে দেখার আশ্বাস দেন।