রাশেদুল ইসলাম রাশেদ;: গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলায় সদ্য প্রসব করা এক নবজাতক শিশুকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করার ঘটনায় অভিযুক্ত মা কল্পনা রানীকে (৪০) গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
কল্পনা রানী বর্মণ গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার দরবস্ত ইউনিয়নের দরবস্ত হিন্দুপাড়া প্রামের দেবেন্দ্র নাথের স্ত্রী।
শুক্রবার (২৩ জুন) গোবিন্দগঞ্জ থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) বুলবুল ইসলাম তথ্যটি নিশ্চিত করে জানান অভিযুক্ত মাকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ জানায়, গত বুধবার (২১ জুন) আনুমানিক রাত ১টা থেকে ৩টার মধ্যে যেকোনো সময় কল্পনা রানী সবার অগোচরে নিজ বাড়িতে নবজাতক শিশুটিকে প্রসব করে। এর কিছুক্ষণ পর শিশুটির নাকে আঙ্গুল দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন তিনি। পরে ওই নবজাতকের মরদেহ গুম করার জন্য দরবস্ত হিন্দুপাড়া গ্রামের মনোরঞ্জন রায়ের বাঁশ বাগানের ড্রেনের পানিতে ফেলে আসেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই প্রলয় কুমার বর্মা জানান, ঘটনার বিষয়ে প্রাথমিক তদন্তকালে জানা যায় দরবস্ত হিন্দুপাড়া গ্রামে মৃত রামতনু চন্দ্র বর্মনের ছেলে দেবেন্দ্র নাথ বর্মন (৪৫) সঙ্গে প্রায় ২০-২২ বছর আগে কল্পনা রানীর বিয়ে হয়। তাদের সংসারে কনক চন্দ্র বর্মন (২০) এবং কনিকা রানী (১৮) নামে দুইটি সন্তান রয়েছে।
প্রায় ৮ বছর আগে দেবেন্দ্র নাথ বর্মন তার স্ত্রী কল্পনার চরিত্রগত আচার-আচরণে সন্দেহ পোষণ করেন। বিষয়টি তিনি তার শাশুড়িকে জানান। এতে কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় দেবেন্দ্র নাথ প্রায় ৮ বছর ধরে নিজ বাড়ি ছেড়ে গোবিন্দগঞ্জ পৌরসভার বোয়ালিয়া এলাকায় আলাদাভাবে বসবাস করছেন।
দেবেন্দ্র নাথ জানান, গত বুধবার লোক মাধ্যমে বাঁশ বাগানের ড্রেনের পানিতে এক দিনের নবজাতকের মৃতদেহ ভাসছে এমন সংবাদ শুনে বাড়িতে আসলে স্ত্রী সদ্য বাচ্চা প্রসব করার মতো লক্ষণ দেখতে পায়। পরে তাকে ওই নবজাতক শিশু সন্তানের বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে প্রথমে সে অস্বীকার করে। জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে আশপাশের লোকজনের সামনে ওই নবজাতক শিশু সন্তান তার বলে স্বীকার করেন।
পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) বুলবুল ইসলাম বলেন, স্থানীয়দের মাধ্যমে সংবাদ পাওয়ার পর নবজাতকের মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে পাঠানো হয়। অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে আদলতে সোপর্দ করা হয়েছে। আদালতে কল্পনা রানী ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।