ঢাকাসোমবার , ২ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  1. Covid-19
  2. অপরাধ ও আদালত
  3. অর্থনীতি
  4. আন্তর্জাতিক
  5. ইসলাম ডেস্ক
  6. কৃষি ও অর্থনীতি
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয়
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. দেশজুড়ে
  11. নির্বাচন
  12. বানিজ্য
  13. বিনোদন
  14. ভিডিও গ্যালারী
  15. মুক্ত মতামত ও বিবিধ কথা
আজকের সর্বশেষ সবখবর

‘সঞ্জয়দের মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর চেষ্টা করছে ঢামেক’

প্রতিবেদক
প্রতিদিনের বাংলাদেশ
সেপ্টেম্বর ২, ২০২৪ ৮:৩২ অপরাহ্ণ
Link Copied!

রাশেদুল ইসলাম রাশেদ:: ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসকদের ওপর হামলার ঘটনায় করা মামলায় গ্রেফতার সঞ্জয় ও অভিযুক্তরা নির্দোষ। মেডিকেল কর্তৃপক্ষ তাদের গাফিলতির দায় না নিয়ে উল্টো মিথ্যা মামলা দিয়ে তাদেরকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছেন।

সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) গাইবান্ধা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন করে এ কথা বলেন চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকা মেডিকেলে নিহত দীপ্তর বাবা শহীদুল ইসলাম মাজু।

এসময় দীপ্তর স্বজন ও সহপাঠিরাও ঢামেকে অক্সিজেনের টাকা দিতে না পারায় চিকিৎসা অবহেলায় দীপ্তর মৃত্যুর দাবি করে জড়িতদের বিচারের দাবি জানান।

দীপ্তর বাবা শহীদুল ইসলাম বলেন, দুর্ঘটনার পর আহত দীপ্তর মানিব্যাগ ও মোবাইল ফোন দুর্বৃত্তরা হাতিয়ে নেয়। পরে এক পথচারী তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে যায়। কিন্তু সেখানে আইসিইউ বেড ও অন্যান্য বিষয় বাবদ সাত হাজার টাকা দাবি করা হয়। টাকা না পেয়ে তাকে চিকিৎসা সেবা না দিয়ে জরুরি বিভাগের মেঝেতে ৯ ঘণ্টা ফেলে রাখা হয়। পরের দিন শনিবার (৩১ আগস্ট) সকালে তার মৃত্যু হয়। খবর পেয়ে দুপুরের দিকে দীপ্তর বন্ধু সঞ্জয় পাল জয়সহ অন্য বন্ধুরা হাসপাতালে যান এবং বিনা চিকিৎসায় দীপ্তর মৃত্যুর বিষয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে সুষ্ঠু বিচার দাবি করে। ওইদিন রাতেই ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আরও দুটি মৃত্যুর ঘটনায় উত্তেজনা তৈরি হয়। এ সময় হাসপাতালে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।

শহীদুল ইসলাম এই ঘটনার তীব্র নিন্দা এবং প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, সাত হাজার টাকার জন্য আমি আমার ছেলেকে হারিয়েছি। চিকিৎসা অবহেলায় আমার ছেলের মৃত্যু হয়েছে। এতে তার বন্ধুরা মেডিকেল কর্তৃপক্ষের কাছে বিচার চাইতে গেলে তারা গাফিলতির কথা অস্বীকার করে উল্টো মিথ্যা ও বানোয়াট মামলা দিয়ে দীপ্তর বন্ধু-স্বজনদের ফাঁসানোর চেষ্টা করছেন।

তিনি বলেন, বিনা চিকিৎসার কারণে আমি আমার ছেলেকে হারিয়েছি। অথচ সঞ্জয় পালকে গাইবান্ধার পুলিশ আটক করেছে। শুধু তাই নয়, বিনা চিকিৎসায় দীপ্তর মৃত্যুর ঘটনা ধামাচাপা দিতে তার কাতার প্রবাসী বন্ধুকেও আসামি করা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে নিহত দীপ্তর খালাতো ভাই মিশকাতুল আনোয়ার বলেন, ঢামেকে অক্সিজেনের টাকা না দেওয়ার কারণেই চিকিৎসকের অবহেলায় দীপ্তর অকাল মৃত্যু হয়েছে। সেদিন যেসব কর্মকর্তা ও ডাক্তার কর্মরত ছিলেন তাদের আইনের আওতায় এনে শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি করেন। একই সঙ্গে মামলাটি বানোয়াট বলে দাবি করেন।

সংবাদ সম্মেলনে নিহত দীপ্তর বন্ধু রাশেদ স্বর্ণ বাবু, আব্দুল্লাহ সানি ও মো. তামিজিদ রায়হানসহ স্বজনরা উপস্থিত ছিলেন।

গত শুক্রবার (৩০ আগস্ট) রাতে কুর্মিটোলা এলাকায় মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় আহত হন বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজি (বিইউবিটি) নামের একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিভিল ইঞ্জিনিয়ার বিভাগের শিক্ষার্থী আহসানুল ইসলাম দীপ্ত (২৩)। পরে তাকে এক পথচারী ঢামেক হাসপাতালে নিয়ে আসেন। পরদিন শনিবার সকালে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। মৃত্যুর পর বিইউবিটির শিক্ষার্থীরা ঢাকা মেডিকেলে এসে শোনেন, চিকিৎসকদের অবহেলার কারণে তাদের বন্ধু মারা গেছেন। এর পরেই হাসপাতালে জড়ো হতে থাকেন শিক্ষার্থীরা। এসময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্যরাও উপস্থিত হন। একপর্যায়ে জরুরি বিভাগের নিউরোসার্জারির ৯৮ নম্বর ওয়ার্ডে দায়িত্বরত ডা. ইমরানকে মারধর করেন এবং শিক্ষার্থীরা তাকে হাসপাতালের পরিচালকের কক্ষে নিয়ে যান। বিষয়টি সমাধানের জন্য সভাকক্ষে আলোচনায় বসেন হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান, বিইউবিটির উপাচার্য, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা। সেখানে সেনাবাহিনীর কর্মকর্তারাও অংশ নেন। সভা শেষে রাতে হাসপাতালটির চিকিৎসকরা দাবি তোলেন, ডা. ইমরানের মারধরকারীদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বিচারের আওতায় আনতে হবে। অন্যথায় হাসপাতালের কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন তারা।

অন্যদিকে, এ ঘটনায় ঢাকা মেডিকেলের অফিস সহায়ক আমির হোসেন বাদি হয়ে চিকিৎসক ও রোগীদের ওপর হামলার অভিযোগে ঢাকার শাহবাগ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজির (বিউবিটি) শিক্ষক শাহরিয়ার অর্ণবসহ সঞ্জয় পাল জয়, সিহাব তুর্জ ও সাইমি নাজ শয়নসহ চারজনকে নামীয় আসামি করা হয়। এছাড়া মামলায় অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয় ৪০ থেকে ৫০ জনকে। পরে ঢাকার নির্দেশে সোমবার ভোর রাত সাড়ে ৫টার দিকে গাইবান্ধার বাস টার্মিনাল এলাকা থেকে সঞ্জয় পাল জয়কে গ্রেফতার করে গাইবান্ধার সদর থানা পুলিশ। সঞ্জয় পাল গাইবান্ধা শহরের সরকার পাড়ার রঞ্জিত পালের ছেলে।

আপনার মন্তব্য লিখুন