নওগাঁ সংবাদদাতা:: জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে নওগাঁয় দোয়া মাহফিল ও খাদ্য বিতরণ অনুষ্ঠানে যুদ্ধাপরাধী আমৃত্যু কারাদণ্ড পাওয়া আসামি দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মৃত্যুতে দোয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় মোয়াজ্জেম হোসেন নামে মসজিদের ইমাম ও স্থানীয় ব্যবসায়ী হাফিজুর রহমানকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্যে পুলিশ আটক করেছে।
মঙ্গলবার বিকেলে শহরের পার-নওগাঁ তাজের মোড়ে শহীদ মিনারে নওগাঁ পৌর আওয়ামী লীগের ব্যানারে আয়োজিত দোয়া মাহফিল ও খাদ্য বিতরণ অনুষ্ঠানে এই ঘটনা ঘটে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সদর আসনের সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার নিজাম উদ্দিন জলিল জন।
আটক মোয়াজ্জেম হোসেন পার-নওগাঁ বয়তুল মামুর জামে মসজিদের মসজিদের ইমাম। তার গ্রামের বাড়ি জেলার পত্নীতলা উপজেলায়। অপরজন হাফিজুর রহমান তাজের মোড়ের রড়-সিমেন্ট ব্যবসায়ী।
জানা যায়, নওগাঁ পৌর আওয়ামী লীগের ব্যানারে শহীদ মিনারে দোয়া মাহফিল ও খাদ্য বিতরণের আয়োজন করা হয়। এতে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, তার পরিবারবর্গসহ ১৫ আগস্ট শহীদদের আত্মার শান্তি কামনায় দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে দোয়ার এক পর্যায়ে মসজিদের ইমাম মোয়াজ্জেম হোসেন আমৃত্যু কারাদণ্ড পাওয়া আসামি সাঈদীর জন্য দোয়া চাওয়া শুরু করেন।
এ সময় উপস্থিত নেতাকর্মীরা নিষেধ করলেও তিনি সাঈদীর মৃত্যুতে দোয়া পাঠ চালিয়ে যান। এরপর মসজিদের ইমাম মোয়াজ্জেম হোসেনকে শহীদ মিনারের পাশে রেখে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করা হয়। এ সময় তাজের মোড়ে রড় সিমেন্ট ব্যবসায়ী হাফিজুর রহমান হাফিজ তাকে সাঈদীর মৃত্যুতে দোয়া পাঠের জন্য বলেছেন বলে জানান। এরপর পুলিশে সোপর্দ করা হয় ইমাম মোয়াজ্জেম হোসেনকে। এরপর থানায় মসজিদের ইমাম মোয়াজ্জেম হোসেনকে জিজ্ঞাসাবাদেও রড় সিমেন্ট ব্যবসায়ী হাফিজুর রহমানের নাম উঠে আসায় তাকেও জিজ্ঞাসাবাদের জন্যে থানায় নেওয়া হয়।
নওগাঁ পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি দেওয়ান ছেকার আহম্মেদ শিষান জানান, পৌর আওয়ামী লীগের ব্যানারে কে এই আয়োজন করেছে তার জানা নেই। এখানে কী হয়েছে তাও কিছু জানা নেই।
পার-নওগাঁ বয়তুল মামুর জামে মসজিদের সাধারণ সম্পাদক রতন হাজি জানান, দুপূরে যোহরের নামাজের সময়ও মসজিদের ইমাম মোয়াজ্জেম হোসেন যুদ্ধাপরাধী সাঈদীর মৃত্যুতে দোয়া চেয়েছেন।
নওগাঁ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা (ওসি) ফয়সাল বিন আহসান এসব তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, মসজিদের ইমাম মোয়াজ্জেম হোসেনকে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। এর পর তার দেওয়া তথ্যে ব্যবসায়ী হাফিজুর রহমানকেও জিজ্ঞাসাবাদের জন্যে পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে।