আরফান আলী, শ্রীবরদী (শেরপুর) :জামালপুরে মেলান্দহের রৌমারি বিল থেকে দীর্ঘ ১৮ ঘন্টা খোজাখুজি করে শফিকুল ইসলাম নামের অনার্স ৩য় বর্ষে পড়ুয়া এক ছাত্রের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
শুক্রবার (১লা সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টার দিকে রৌমারি বিলে স্থানীয় লোকজনের সহয়তায় জামালপুর ফায়ার সার্ভিসের দল লাশ উদ্ধার করে।
নিহত শফিকুল ইসলামের বাড়ি শেরপুর জেলার শ্রীবরদী উপজেলার পৌর শহরের সাতানী মথুরাদী এলাকায়।
জানা গেছে, বৃহস্পতিবার ( ৩১ আগস্ট) বিকালে শফিকুল ও তার আরও দুই বন্ধু জামালপুর জেলার মেলান্দহের রৌমারি বিলে ঘুরতে যায়। ঘুরাঘুরির এক পর্যায়ে তিন বন্ধু বিলে গোসল করতে নামে। দুইজন ডুব দিয়ে উঠে আসলেও শফিকুল উঠে আসতে পারে নাই। পরে তারা খোজাখুজি করে। খোজাখুজি করে না পেয়ে স্থানীয় লোকজনদের ডাকে এবং তারাও খোজাখুজি করে। খুজে না পেয়ে ফায়ারসার্ভিসকে খবর দেওয়া হয়। ফায়ারসার্ভিসও খোজে না পেয়ে খোজাখুজি বন্ধ করে এবং স্থানীয় জেলেদের জাল ফেলে খোজার পরামর্শ দেন। পরের দিন বিলে শফিকুলের লাশ ভেসে থাকতে দেখা যায় এবং লাশ উদ্ধার করে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শফিকুলের গায়ে প্রচন্ড আঘাত পায়। বিভিন্ন স্থানে ক্ষত হয়ে আছে।
নিখোঁজের সংবাদ শোনে শ্রীবরদী সরকারি কলেজের রসায়ন বিভাগের প্রভাষক রিফাত আহমেদ লিখেন, আমার এবং আমাদের সকলেরই অনেক প্রিয় ছাত্র শফিকুল গতকাল রৌমারীতে নদীতে গোসল করতে গিয়ে নিখোঁজ হয়েছে। এখন পর্যন্ত তাকে কোন অবস্থাতেই উদ্ধার করা সম্ভব হয় নি। আমাদের পুরো শ্রীবরদীবাসীর মনের যে অবস্থাটা হয়েছে এ বিনয়ী সহজ সরল হাসিখুশি ছেলেটা যেন জীবিতই ফিরে আসে। আল্লাহ চাইলে কত কিছুই সম্ভব। আল্লাহ যে পরিকল্পনা করে রেখেছেন তার প্রতিও আমাদের বিনয়ী হতেই হবে। তবে এ কথা সত্য যে ছেলেটাকে যে ই দেখেছে পরিচিত বা অপরিচিত সহজ সরল বা হাসিখুশিরূপেই পেয়েছে, সাহায্যকারীরূপেই পেয়েছে আলহামদুলিল্লাহ।
তিনি আরও বলেন, ইসলামে সদাচার একটা বিরাট বড় গুণ। যা আমার বা আমাদের অনেকের মাঝেই নেই। কখনো কখনো আমাদের প্রিয় নবী (স.) ধর্ম কি এর উত্তর দিতে গিয়ে কখনো বলেছেন যে সদাচার ই ধর্ম। আর বিচার দিবসে মহান আল্লাহ আমাদের আমলগুলোর যে ওজন করবেন তাতে সবচেয়ে ভারি হবে সদাচার।
আল্লাহ আমাদের সকলের প্রিয় সদাচারী শফিকুলকে কবুল করে নিক তাকে যেভাবেই ফিরিয়ে আনুক না কেন আমাদের সকলকে তাতে সন্তুষ্ট থাকার তওফিক দান করুক এবং আমাদেরকেও তার মত সদাচারী হওয়ার তওফিক দান করুক।
ভেলুয়া হাইস্কুলের সহকারী শিক্ষক নাফিউল ইসলাম জানান, আমার প্রিয় কয়েকজন ছাত্রের মধ্যে শফিকুল ছিল একজন। মৃত্যু অনিবার্য, মৃত্যু অবধারিত।
শফিকুল একজন ভাল ছেলেই নয়, তিনি ছিল একজন সমাজসেবক, করোনা টিকাদান, রক্তদান, মানুষের বিপদে আপদে সবসময় নিজেকে উজাড় করে দিত। তার সাহ্যজ্জল জিবনটা ছিল বন্ধুপ্রিয়। প্রাণবন্ত তরুণটি আমাদের ছেড়ে চলো গেলো। সত্যি মেনে নিতে অনেক কষ্ট হয়।