উত্তরের সীমান্তঘেঁষা জেলা কুড়িগ্রামে জেঁকে বসেছে শীত। এতে চরম বিপাকে পড়েছে শিশু ও বয়স্করা। তীব্র শীত আর হিমেল হাওয়ায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে দিনমজুর, খেটে খাওয়া ও নিম্নআয়ের মানুষের জীবনযাত্রা।
কুয়াশার চাদর ভেদ করে গত সাতদিন ধরে সূর্যের পর্যাপ্ত আলো না মেলায় কমছে না শীতের প্রকোপ। শীতের কারণে শিশু ও বড়দের বিভিন্ন শীতজনিত রোগ বৃদ্ধি পাচ্ছে। হাসপাতালেও শীতজনিত রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে।
ঘাস, ফুল, লতাপাতাগুলোতে সকালে শিশিরে ভেজা থাকছে। সকালে বইতে শুরু করেছে হিমেল হাওয়া। আর বিকেল থেকে জেঁকে বসেছে কনকনে শীত। ঘন কুয়াশা আর কনকনে শীতে মানুষের দুর্ভোগ বাড়ছে।
বন্যায় বসতবাড়ি হারা কয়েক হাজার মানুষ রয়েছেন নিদারুণ শীতকষ্টে। খোলা আকাশের নিচে অসহায় জীবনযাপন করছেন এসব মানুষজন। শীতবস্ত্রের অভাবে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে রয়েছেন জেলার সাড়ে চার শতাধিক চরাঞ্চলের মানুষ।
শীতে শ্রমজীবী মানুষের দুর্দশাও বেড়েছে। কনকনে ঠান্ডার কারণে ঘরের বাইরে বের হতে পারছেন না শিশু ও বয়স্ক মানুষ। সারদিন শীতের তিব্রতার কারণে হাট-বাজারে লোকের সমাগম অনেকটায় কম দেখা গেছে।
হতদরিদ্র-ছিন্নমূল মানুষের বেশিরভাগই শীতবস্ত্রের অভাবে অনেকেই খড়কুটো জ্বালিয়ে প্রতি বছর শীত নিবারণের চেষ্টা করেন। তবে এবার চরাঞ্চলে বন্যার কারণে আমনের চাষ কম হয়েছে। এতে খড়ের দাম আকাশচুম্বী হওয়ায় খড় সংকটে আগুনও জ্বালাতে পারছেন না তারা। অতিরিক্ত ঘন কুয়াশার কারণে দিনের বেলাতেও রাস্তায় যানবাহন চালাতে হচ্ছে হেডলাইট জ্বালিয়ে।
এদিকে ধুম পড়েছে লেপ-তোশক তৈরির। তবে নতুন পোশাক কেনার সামর্থ্য না থাকায় হতদরিদ্ররা ফুটপাতের দোকানগুলোতে পুরাতন শীতের কাপড় কিনতে ভিড় জমাচ্ছেন।
রাজারহাট আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার জানান, বুধবার (১৬ ডিসেম্বর) ভোর ৬টার রিপোর্ট অনুযায়ী কুড়িগ্রাম জেলার আজকের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
তিনি বলেন, এই মাসে দুইটি শৈত্যপ্রবাহ রয়েছে। দুইদিন পরই একটি শৈত্যপ্রবাহ শুরু হতে পারে। এই শীত ফেব্রুয়ারি কিংবা মার্চে গিয়ে শেষ হতে পারে।