মূত্রনালীর মাধ্যমে কোনও ভাবে শরীরে যদি জীবাণুর প্রবেশ হয় তাহলে নানারকম সংক্রমণ জনিত সমস্যা দেখা দেয়। চিকিৎসা বিজ্ঞানে এটা বলা হয় ইউরিনারি ট্র্যাক ইনফেকশন। ছেলেদের তুলনায় মেয়েদের মধ্যে এই সমস্যা অনেক বেশি দেখা যায়। এছাড়াও পানি কম খেলে, খুব বেশি মাত্রার অ্যান্টিবায়োটিক খেলে, ডায়াবেটিসের ওষুধ নিয়মিত খেলেও সংক্রমণ হতে পারে।
অন্য যে কোনও সময়ের তুলনায় শীতকালে এ সমস্যা বাড়ে। কারণ শীতে পানি কম খাওয়া হয়। এ সময় আবহাওয়া শুষ্ক থাকে। সেই সঙ্গে অনেকেই শীতকালে ভালো করে গোসল করেন না। আবার কেউ কেউ খুব বেশি গরম পানি দিয়ে গোসল সারেন। সেখান থেকেও সংক্রমণ হতে পারে। এছাড়াও শীতকালে বাইরের তাপমাত্রার কারণে রক্ত সঞ্চালন হ্রাস পায়। ফলে কিডনির বর্জ্য পদার্থ শোষণ করার ক্ষমতাও কমে। সেখান থেকে প্রস্রাবেও সমস্যা হয়।
ইউরিনে সংক্রমণ দেখা দিলে কিছু কিছু উপসর্গ প্রকাশ পায়। যেমন-
১. বারবার প্রস্রাব পায়। সেই সঙ্গে প্রসাবের সময় জ্বালাও করে।
২. তলপেটে ব্যথা হয়। এমনকী কোমরেও খুব ব্যথা হয়।
৩. কাঁপুনি দিয়ে জ্বর আসতে পারে।
৪. ছোটদের ক্ষেত্রে ডায়ারিয়া, জ্বর, খেতে না চাওয়া ইত্যাদি নানা উপসর্গ দেখা যায়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গর্ভাবস্থায় যদি কারও ইউরিনের সংক্রমণ হয় তাহলে দ্রুত চিকিৎসা নেওয়া উচিত। তা না হলে গর্ভস্থ সন্তানের মৃত্যুও হতে পারে।
শীতকালে ইউরিনের সমস্যা কমাতে কিছু বিষয় অনুসরণ করতে পারেন। যেমন-
১. প্রতিদিন অন্তত ৬-৮ গ্লাস পানি পান করুন। শরীর যাতে কোনওমতেই শুষ্ক না হয়ে যায় সেদিকে খেয়াল রাখুন। এছাড়াও দেহের যাবতীয় টক্সিন যাতে বেরিয়ে যায় সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে।
২. অনেকেরই টয়লেট চেপে রাখার অভ্যাস থাকে। টয়লেট পেলে তা চেপে রাখবেন না। টয়লেট চেপে রাখলে মূত্রথলিতৈ চাপ পড়ে। সেখান থেকে কিডনির সমস্যাও আসে।
৩. যেহেতু মহামারি চলছে তাই সব সময় নিজেকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখুন। প্রস্রাবের পর টয়লেট টিস্যু বা শুকনো কাপড় ব্যবহার করুন।
৪. প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন সি রাখুন। বারবার ইউরিনে সংক্রমণ হলে ইউরিনে অ্যাসিডের লেভেল বেড়ে যায়। এ কারণে যারা ইউরিনের সমস্যায় ভোগেন তাদের বেশি করে সবজি, কমলা, কিউই, লাল ক্যাপসিকাম খাওয়ার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা।