আশরাফুল হক, লালমনিরহাট।। স্থানীয় সরকারের উদাসীনতা, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের গাফিলতি ও কর্মকর্তাদের দায়সারা কাজের কারনে লালমনিরহাটে মাত্র ২ কিঃমিঃ রাস্তার কাজ ৩ বছরেও শেষ হয়নি। ঠিকাদার বদল ও কাজে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যাবহারের অভিযোগ তুলেছেন এলাকাবাসী। স্থানীয় সরকার (এলজিইডি) লালমনিরহাট প্রকৌশলীর কার্যালয়ে ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে এলজিইডি মন্ত্রণালয়ের অধীনে ১ কোটি ৩৭ লক্ষ ৪৪ হাজার ৫৯৩ টাকা ব্যয়ে সদর উপজেলায় পঞ্চগ্রাম ইউনিয়নের ২ কিঃ মিঃ গ্রামীণ রাস্তা পাকাকরণের কাজে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। ওই ইউনিয়নের ১নং ওযার্ডের আলাবকস মৌজার কাগজিপাড়া পাকার মাথা থেকে মাঠেরপাড় সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যন্ত ২ কিলোমিটার রাস্তার পাকাকরণের কাজ পান ঠিকাদার আবু তালেফ মিলু, কালীগঞ্জ, লালমনিরহাট। তিনি কাজটি অন্য ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের নিকট বিক্রি করে দেন।
ওই ২ কিঃমিঃ রাস্তার কাজ ৩ বছরে শেষ হয়নি। ঠিকাদার বদল ও কাজে নিম্নমানের সামগ্রী নিয়ে এলাকাবাসীর নানান অভিযোগ। অতি নিম্নমানের কাজ হওয়ায় কয়েক দফা কাজ বন্ধ করে দেয়া হয়। এতে স্থানীয় লোকজনের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। অপরদিকে রাস্তা পাকাকরণ কাজে বিভিন্ন যন্ত্রপাতি ও উপকরণ রাখার জন্য নয়ারহাট দ্বি মূখী উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠ দখল করা হয়েছে।
ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অতুল চন্দ্র বলেন, বিদ্যালয় বন্ধ থাকায় ঠিকাদার মালামালগুলো রেখেছেন। কোন কিছুর বিনিময় নয়। আর এ বিষয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার বলছেন, এটা মোটেই ঠিক নয়। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ওই প্রতিষ্টানের প্রধানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। স্থানীয় বাসিন্দা আঃ মোন্নাফ জয় ও মশিউর রহমান জানান, রাস্তাটি নির্মাণে ব্যাপক অনিয়ম করা হয়েছে। রাস্তাটি খননের পর বালু ফেলে রোলার করা হয়নি। অতি নিম্নমানের ইটের খোয়া ও রাবিশ ব্যবহার করা হয়েছে। ডব্লিউ পিএম ৬ ইঞ্চি থাকার কথা থাকলেও ৩ ইঞ্চি দেওয়া হয়েছে। ইটের খোয়া ও রাবিশ দেওয়ার পরেও পানি দিয়ে রোলার এবং রাস্তার দুধারে ৩ ফিট মাটি দিয়ে ভরাট করা হয়নি। এখন রাস্তায় পিচ–ঢালাইয়ের জন্য পরিষ্কার করা হচ্ছে। নিম্নমানের বিটুমিন দিয়ে কার্পেটিংয়ের কাজ শেষ করা প্রস্তুতি চলছে। তিপূর্বে নিম্নমানের কাজ হওয়ায় কয়েক দফা কাজ বন্ধ করে দেয়া হয়। তবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মালিকের সাথে মুঠোফোন যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন ধরেননি।
এ বিষয়ে স্থানীয় সরকার (এলজিইডি) সদর উপজেলার প্রকৌশলী শাহ্ মোঃ ওবায়দুল রহমানের সাথে মুঠোফোন যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন ধরেননি।
আর বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় সরকার (এলজিইডি) লালমনিরহাটের নির্বাহী প্রকৌশলী আশরাফ আলী খাঁন জানান, বরাদ্দ ছাড়ে কম বেশি হওয়ায় কাজটি বিলম্ব হয়েছে। তাছাড়া রাস্তার কাজ নিয়ে এলাকাবাসীর অভিযোগ সরেজমিনে খতিয়ে দেখা হচ্ছে।