আশরাফুল হক, লালমনিরহাট।। লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার এক মাংস বিক্রেতাকে পেটানোর অভিযোগ উঠেছে বিএনপি নেতা দুর্গাপুর ইউপি চেয়ারম্যান ছালেকুজ্জামান প্রামানিক ছালেকের বিরুদ্ধে।
বুধবার(৩ ফেব্রুয়ারী) রাতে ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আদিতমারী থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন মজিদুল ইসলাম নামে এক মাংস বিক্রেতা। অভিযোগকারী মাংস বিক্রেতা মজিদুল ইসলাম উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের উত্তর গোবদা শঠিবাড়ি এলাকার সুলতান মিয়ার ছেলে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান উপজেলা বিএনপি'র সদস্য সচিব ছালেকুজ্জামান প্রামানিক ছালেকের কাছে একই ইউনিয়নের শঠিবাড়ি বাজারের মাংস বিক্রেতা মজিদুল ইসলাম ১৫ হাজার ৯শত টাকা পাওনা ছিলেন। কিন্তু গত দুই বছর ধরে সেই টাকা আজ কাল বলে বিলম্ব করেন ইউপি চেয়ারম্যান। এরই মধ্যে গত মাসে চেয়ারম্যান ছালেকের একটি গরু ২৫ হাজার ৫শত টাকা মুল্যে ক্রয় করেন মাংস বিক্রেতা মজিদুল। গরু ক্রয়ের সময় মাংস বিক্রেতা ১০ হাজার ৫শত টাকা চেয়ারম্যানকে প্রদান করেন। অবশিষ্ট অর্থ পুর্বের পাওনা হিসেবে রেখে দেন মজিদুল। এরপরেও ৯শত টাকা পাওনা থাকে মজিদুল। কিন্তু ইউপি চেয়ারম্যান ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে পুর্বের পাওনা টাকা অস্বীকার করে পুর্নরায় মাংস বিক্রেতার কাছে টাকা দাবি করেন। বুধবার(৩ ফেব্রুয়ারী) পাওনা টাকার হিসাব নিয়ে শঠিবাড়ি বাজারের সাবু মিয়ার দোকানে বৈঠকে বসেন উভয় পক্ষের। এ সময় পুর্বের পাওনা টাকা চাওয়া মাত্রই চেয়ারম্যান ছালেকুজ্জামান মাংস বিক্রেতার উপর চড়াও হয়ে গালমন্দ ও মারপিট করেন। স্থানীয়রা প্রথম পর্যয়ে উভয় পক্ষকে শান্ত করেন। কিছুক্ষণ পরে চেয়ারম্যানের ডাকে তার লোকজন লাঠি শোটা ও দেশি অস্ত্র নিয়ে শঠিবাড়ি বাজারে শোডাউন দিলে মুহুর্তে আতংকিত হয়ে দোকানপাট বন্ধ করে লোকজন দিকবিদিক ছুটাছুটি শুরু করেন। চেয়ারম্যানের লোকজনের শোডাউনে কোন রকমে পালিয়ে রক্ষা পান মাংস বিক্রেতা। এ সময় চেয়ারম্যানের লোকজন প্রকাশ্যে অস্ত্র উচিয়ে মাংস বিক্রেতা মজিদুল ও তার পরিবারকে হত্যার হুমকী প্রদান করে চলে যায় বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে। এ ঘটনায় বিচার চেয়ে ইউপি চেয়ারম্যান ছালেকুজ্জামান প্রামানিক ছালেককে প্রধান করে ৭জনের বিরুদ্ধে বুধবার রাতেই আদিতমারী থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন মাংস বিক্রেতা মজিদুল ইসলাম। অভিযুক্ত দুর্গাপুর ইউপি চেয়ারম্যান ছালেকুজ্জামান প্রামানিক ছালেক বলেন, আমি মজিদুলের কাছে ৯হাজার টাকা পাই। সেটা চাইতে গিয়ে বিতর্ক হয়েছে মাত্র। মারপিটের কোন ঘটনা ঘটেনি। তবে লাঠিসোটা নয়, বিতর্কের ঘটনা শুনে পরিবারের লোকজন এসেছিল ঠিকই। তবে তাদেরকে আমারা বাড়িতে ফিরিয়ে নিয়েছি।
আদিতমারী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম বলেন, পাওনা টাকা নিয়ে স্থানীয় ব্যবসায়ীর সাথে চেয়ারম্যানের ঝামেলা হয়েছিল। অভিযোগ পেয়েছি, তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।