আশরাফুল হক, লালমনিরহাট।। গৃহহীন-অসহায়দের নিরাপদ আশ্রয় মানুষের মৌলিক অধিকার হিসাবে স্বীকৃত। উন্নত জীবন যাপনের ভাবনা আর অসহায়দের ঠিকানা অনেক বড় বিষয় যার কাছে, আজ তিনি মহান থেকে মহিমান্বিত বাংলাদেশ সরকার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
অসহায় মানুষের ভালোবাসার উপহার হিসাবে মুজিব শতবর্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দিয়েছেন পাকা ঘর। সেই প্রধানমন্ত্রী উপহারের ঘরের কাঠামো ভেঙে ফেলে তৈরি করেছেন বিশাল বাড়ি।
লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলা আঃ রাজ্জাক নামের একজন উপকারভোগী সেই বাড়ি ভেঙে নতুন বাড়ি তৈরি করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
জানা গেছে, ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অবদান টি-আর-কাবিখার-কর্মসূচির আওতায় দূর্যোগ সহনীয় বাসগৃহ নির্মাণ, দূর্যোগ ব্যবস্হাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের উপকারভোগী হিসাবে আদিতমারী উপজেলার ভেলাবাড়ী ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের চৌধুরী পাড়া গ্রামের আঃ ছাত্তারের ছেলে আঃ রাজ্জাক ইট ও সবুজ টিনের ছাউনির ঘর বরাদ্দ পান। ভেলাবাড়ী থেকে হাজীগজ্ঞ পাকা সড়কের পাশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অবদানের ঘরটি বেশ শোভা পাচ্ছে। কিন্তু ১/২ বছরের ব্যবধানে ভূমিহীন ও গৃহহীন আঃ রাজ্জাক প্রধানমন্ত্রীর পরম মমতায় মাথা গোঁজার আশ্রয়স্থলটির বারান্দা সহ উপরের অংশ ও সবুজ ঢেউ টিনের কাঠামো ভেঙে ফেলেন।
ঘটনা স্হলে দেখা যায়, উপহার ঘরের উপরি অংশ ইট গেথে উচু করা হয়েছে। সরকারি ঘরটির ডানে এবং বামে মিলিয়ে গড়ে তোলা হয়েছে বেশ বড়বাড়ি। এখন আর সে ঘরের নেই কোন বারান্দা, উপরে লাগানো হয়েছে অন্য রংগের ঢেউটিন। প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘরের শেষ চিহ্ন বলতে শুধু পড়ে আছে নাম ফলকটি, তাছাড়া অবশিষ্ট কিছুই নেই সেখানে।
একটি সূত্র জানান, আঃ রাজ্জাক ভূমিহীন ও গৃহহীন হিসাবে প্রধানমন্ত্রীর পরম মমতার মাথা গোঁজার ঠাঁই পেয়েছেন। প্রকৃত অর্থে আঃ রাজ্জাক ভূমিহীন নয়, তার আছে অনেক জমি-জমা। দাপিয়ে বেড়ান পালসার মোটরসাইকেলে। ভেলাবাড়ী টু হাজীগঞ্জ মহাসড়কের পাশে আমেনা বাজারে চায়ের দোকান করেন তিনি। তাই বিষয়টি খতিয়ে দেখার দাবি তুলেছেন স্হানীয় লোকেরা।
স্হানীয় আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ জানান, মুজিববর্ষে প্রধানমন্ত্রীর উপহার, সাড়ি সাড়ি পাকা ঘর, লাল আর সবুজ টিনের ছাউনি আজ যেখানে গৃহহীনদের পরম আশ্রয়, কাল হয়তো এই জায়গাগুলো ভরে উঠবে অর্থনৈতিক কর্মস্হলে, ভরসা দিয়েছেন সুন্দর জীবন যাপনের। ছোট হোক, বড় হোক, প্রধানমন্ত্রীর উপহার নষ্ট করা ঠিক নয়।
ভেলাবাড়ী ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ড সদস্য জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আঃ রাজ্জাক কি ভাবে সরকারি ঘর পেয়েছেন তা আমার জানা নেই। আমি সে সময় মেম্বার ছিলাম না।
আদিতমারী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ভেলাবাড়ী ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী বলেন, ৫/৬ বছর আগে আঃ রাজ্জাক প্রধানমন্ত্রীর ঘর পেয়েছেন। সেই ঘরের সাথে বাড়তি কিছু ঘর তুলেছেন। বিষয়টি আমার জানা আছে। তবে সরকারি ঘর ভেঙে ফেলা ঠিক হয়নি।
আদিতমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জিআর সরওয়ার এ বিষয়ে বলেন, প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর শুধু ভূমিহীন ও গৃহহীনদের জন্য। এই ঘর বা সম্পতি কোন অবস্হাতেই নষ্ট যোগ্য নয়। এ ধরনের ঘটনা ঘটলে খোঁজ খবর নিয়ে ব্যবস্হা নেয়া হবে।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ উল্ল্যাহ এ বিষয়ে বলেন, প্রধানমন্ত্রীর উপহার ঘর কেউ নষ্ট করতে পারবে না। আমাকে নাম ঠিকানা দিলে অবশ্যই ব্যবস্হা গ্রহণ করা হবে।