আনিসুর রহমান,স্টাফ রিপোর্টার।। স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের লড়াকু সৈনিক,গণতান্ত্রিক সংগ্রামের অগ্নি’নায়ক,কুড়িগ্রাম জেলার রাজারহাট উপজেলার কৃতি সন্তান, ছিনাই ইউনিয়নের ভূমিপুত্র শহীদ রাউফুন বসুনিয়ার ৩৬ তম শাহাদাৎ বার্ষিকী পালন করা হয়েছে। (১৩ ফেব্রুয়ারী) শনিবার,শহীদ রাউফুন বসুনিয়া স্মৃতি সংসদ কুড়িগ্রাম এর আয়োজনে, ছিনাই শহীদ মিনার সংলগ্ন ময়দানে দিনব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচী পালন করা হয়। সাকাল ৯ ঘটিকায় কবর জেয়ারত ও শ্রদ্ধান্জলী,৯-৩০ শোক র্যলী,১০মিলাদ মাহফিল,১১ আলোচনা সভা, উক্ত সভায় সভাপতিত্ব করেন -এস.এম ছানালাল বকসী।
এসময় বক্তারা জেলা পরিষদের মাধ্যমে শহিদ রাউফুন বসুনিয়ার সমাধি সৌধ ও এপিটাফ করে দেয়ার ঘোষণা প্রদান করেন।
উক্ত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন,কুড়িগ্রাম জেলা আওয়ামী লীগ এর সভাপতি, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও সাবেক সাংসদ মোঃ জাফর আলী, বিশিষ্ট আইনজীবী ও জেলা পিপি আব্রাহাম লিংকন, কুড়িগ্রাম খবর এর সাম্পাদক সানালাল বকসী, জেলা প্রেস ক্লাব সভাপতি আহসান হাবীব নীলু,প্রেস ক্লাব রাজারহাট সম্পাদক রফিকুল ইসলাম,উপজেলা মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম, যুগ্ন সম্পাদক জাহাঙ্গির আলম,সাংগঠনিক সম্পাদক রাশেদুল ইসলাম,সহ সাংগঠনিক আনিসুর রহমান,সাজেদুল ইসলাম,সচিব বসুনীয়া সংসদ, সহ বিভিন্ন ইলেকট্রোনিক প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিক আরো অনেকে।
উল্লেখ্য,রাউফুন বসুনিয়া ছিলেন স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের সামনে থেকে নেতৃত্বদানকারী অন্যতম নেতা।
বাকশাল সমর্থিত জাতীয় ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক, সমাজবিজ্ঞান শেষ বর্ষের ছাত্র রাউফুন বসুনিয়া ছিলেন স্বৈরাচারের আতঙ্ক।
১৩ ফেব্রুয়ারি ১৯৮৫ রাত ১১ টার দিকে স্বৈরাচার বিরোধী এক মিছিলে নেতৃত্বদানের সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন ইউনিভার্সিটি ল্যাবোরেটারী স্কুলের সামনে তৎকালীন স্বৈরশাসক হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ এর সমর্থক ছাত্র সংগঠন নতুন বাংলা ছাত্র সমাজের সন্ত্রাসীদের গুলিতে তিনি নিহত হন।
তার এই আত্মত্যাগ স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনকে বেগবান করে। যার ফলশ্রুতিতে এরশাদ সরকারের পতন হয়।
তার আত্মত্যাগ তাকে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের ইতিহাসে এক অনুকরণীয় দৃষ্টান্তে পরিনত করে। তার আত্মত্যাগকে সম্মান জানিয়ে পরবর্তীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুহসিন হল গেটে
একটি প্রতিকৃতি নির্মাণ করা হয়।
রাউফুন বসুনিয়া জেলার রাজারহাট উপজেলার পাইকপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।
পাইকপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে তিনি প্রাথমিক শিক্ষা সম্পন্ন করেন। এরপর পাঙ্গারাণী লক্ষ্মীপ্রিয়া উচ্চবিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক শেষ করেন। উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেন কারমাইকেল কলেজ থেকে। তারপর ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগে। মৃত্যুর সময় সমাজবিজ্ঞান বিভাগের মাস্টার্স এর ছাত্র ছিলেন তিনি।