রাশেদুল ইসলাম রাশেদ:: গাইবান্ধায় যৌতুকের টাকা না পেয়ে বেবি বেগম (২৬) নামের এক গৃহবধূর জিহ্বা কেটে দিয়েছেন তার স্বামী। এ ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ওই গৃহবধূর বোন।
মঙ্গলবার (১৭ অক্টোবর) সকালে গাইবান্ধা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুদ রানা অভিযোগ পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
অভিযুক্তের নাম রিপন মিয়া। তিনি সদর উপজেলার পূর্ব কোমরনই কুঠিপাড়া গ্রামের নাজিম উদ্দিনের ছেলে
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, প্রায় ছয় বছর আগে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার পশ্চিম রাজীবপুর গ্রামের মৃত মজিবর রহমানের মেয়ে বেবি বেগমের সঙ্গে রিপন মিয়ার বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই যৌতুকের জন্য বেবি বেগমকে মারধর করতেন রিপন। বাধ্য হয়ে প্রায় দেড় লাখ টাকা দেয় বেবি বেগমের পরিবার। আবারও কয়েকদিন ধরে পাঁচ লাখ টাকা যৌতুকের জন্য চাপ দিচ্ছিলেন রিপন।
রোববার (১৫ অক্টোবর) সকালে টাকা না পেয়ে ক্ষিপ্ত হয়ে বেবিকে মারধর করেন রিপন মিয়া। মারধরে বেবি বেগম জ্ঞান হারিয়ে ফেললে ধারালো ছুরি দিয়ে তার জিহ্বা কেটে দেন। এসময় বেবি বেগমের চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে পালিয়ে যান রিপন। পরে বেবি বেগমকে গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন তারা।
স্বজনরা জানান, কাটা জিহ্বার অসহ্য যন্ত্রণা নিয়ে গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালের মহিলা সার্জারি ওয়ার্ডে কাতরাচ্ছেন গৃহবধূ বেবি বেগম। জিহ্বা কেটে দেওয়ায় খেতে বা কথা বলতে পারছেন না তিনি। শুধু ইশারায় বোঝানোর চেষ্টা করছেন তার ওপর ঘটে যাওয়া অমানবিক নির্যাতনের কথা।
বেবি বেগমের মা বৃদ্ধা রাবেয়া বেগম বলেন, কয়েকদিন আগেও মেয়ের নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে তার আরেক মেয়ে রিপনকে ১০ হাজার টাকা দিয়েছেন। কিন্তু তাতেও তিনি থামেনি। এ ঘটনায় অভিযুক্তের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান রাবেয়া বেগম।
গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. নুরজাহান আক্তার বলেন, বেবি বেগমের কাটা জিহ্বায় ১০টি সেলাই দেওয়া হয়েছে। তার অবস্থা এখন আগের চেয়ে কিছুটা ভালো। তবে সুস্থ হয়ে উঠতে আরও বেশ কয়েকদিন সময় লাগবে।
এ বিষয়ে গাইবান্ধা সদর থানার ওসি মাসুদ রানা বলেন, এ ঘটনায় গৃহবধূ বেবি বেগমের বোন মঞ্জুআরা বেগম বাদী হয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযুক্ত রিপন মিয়াকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।