জেলা প্রতিনিধি,গাইবান্ধা: ২০১৮ সালে দৈনিক যুগান্তর 'গাইবান্ধায় ৬৫ টি মাদক স্পট ১২১ জনের নিয়ন্ত্রণে' শিরোনামে এটি সংবাদ প্রকাশ করে। সেই সংবাদে সরকারদলীয় নেতা, জনপ্রতিনিধিসহ তালিকায় ১৩ পুলিশ সদস্যের নাম উঠে আসে। এরপর ওই সংবাদকে ভিত্তিহীন দাবি করে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হয়।
সম্প্রতি, দৈনিক যুগান্তর পত্রিকায় প্রকাশিত মাদক সংক্রান্ত সংবাদের সত্যতা যাচাইপূর্বক একটি তদন্ত প্রতিবেদন প্রেরণ করেন রংপুর বিভাগীয় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর। এই তদন্ত প্রতিবেদন প্রমাণ করে খান মোহাম্মদ সাঈদ হোসেন জসিম মাদক ব্যবসার সাথে সম্পৃক্ত নন।
ওই তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, আলহাজ্ব খান মো: সাইদ হোসেন জসিম, পিতা-মোঃ আব্দুল মতিন খান, সাং-মহুরী পাড়া, থানা-গাইবান্ধা সদর, জেলা-গাইবান্ধা-এর অভিযোগের বিষয়ে প্রকাশ্য ও গোপনে তদন্ত জানা যায়
গাইবান্ধা সদর থানায় ষ তার বিরুদ্ধে কোন মাদক মামলা নেই। পিসিপিআর যাচাই করে গাইবান্ধা সদর থানায় একটি মামলা পাওয়া যায় যার মামলা নং-২৯, তারিখ:২১/০১/২০২১: ১১৪ পেনাল কোডের ধারা- ১৪৩/৩৪১/৩২৩/৩২৫/৩২৬/৩০৭/৩৭৯/৫০৬/। সিডিএমএস যাচাই করে দেখা যায় এই মামলায় তিনি অব্যাহতি পেয়েছেন স্থানীয়ভাবে খোঁজখবর নিয়ে জানা যায়, তিনি একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী। তিনি দীর্ঘদিন যাবৎ রাজনৈতিক ও ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন। তিনি গাইবান্ধা চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজ এর ২০২৩-২০২৫ মেয়াদী নির্বাচনে সর্বোচ্চ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। ২০১৫ সাল হতে ২০২৩ সাল পর্যন্ত অত্র সংগঠনের নির্বাচিত পরিচালক। বর্তমানে তিনি গাইবান্ধা চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজ এর সহ-সভাপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
জেলার প্রবীন রাজনীতিবিদ গাইবান্ধা জেলা আওয়ামীলীগের বর্তমান সভাপতি ও জেলা পরিষদ, গাইবান্ধার চেয়ারম্যান জনাব মো: আবু বকর সিদ্দিক এর সাথে সাক্ষাৎ করে এই বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, সে ছেলের বয়সী হলেও আলহাজ্ব খান মো: সাইদ হোসেন জসিমকে তিনি ব্যাক্তিগতভাবে জানেন ও চিনেন। তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে যুক্ত এবং গাইবান্ধা পৌর শাখার সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী, সমাজ সেবক ও ক্রীড়া সংগঠক। আলহাজ্ব খান মো: সাইদ হোসেন জসিম বর্তমানে গাইবান্ধা চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি'র সহ-সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। জিজ্ঞাসাবাদে জানান তিনি রাষ্ট্র বিরোধী কাজ, মাদকদ্রব্য ব্যবসা বা অসামাজিক কোন কাজের সাথে জড়িত নন।
বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ গাইবান্ধা জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক জনাব মো: মোজাম্মেল হক মন্ডল এর সাথে সাক্ষাৎ করে এই বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, আলহাজ্ব খান মো: সাইদ হোসেন জসিম বয়সে নবীন হলেও তিনি তাকে ব্যাক্তিগত ভাবে জানেন ও চিনেন। তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে যুক্ত এবং গাইবান্ধা পৌর শাখার সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী, সমাজ সেবক ও ক্রীড়া সংগঠক। তিনি দীর্ঘদিন যাবৎ বিভিন্ন ব্যবসায়িক সংগঠনের বিভিন্ন পদে দায়িত্বপালন করে আসছেন। বর্তমানে তিনি গাইবান্ধা চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি এর সহ-সভাপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। তার জানা মতে তিনি রাষ্ট্র বিরোধী, মাদকদ্রব্য ব্যবসা বা অসামাজিক কোন কাজের সাথে জড়িত নন জনাব আবুবকর সিদ্দিক ও জনাব মো: মোজাম্মেল হক মন্ডল যৌথ স্বাক্ষরে দলীয় প্যাডে এই মর্মে একখানা প্রত্যয়নপত্র প্রদান করেন।
এই বিষয়ে গাইবান্ধা পৌরসভার ২ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও প্যানেল মেয়র জনাব এ.জেড.এম মহিউদ্দিন রিজু কে জিজ্ঞাসাবাদ করলে জানান যে, আলহাজ্ব খান মো: সাইদ হোসেন জসিম তিনি দীর্ঘদিন গাইবান্ধা শহরে বসবাস করেন এবং রাজনীতি করেন। সেই সুবাদে তিনি এলাকার বেশীর ভাগ মানুষকেই চিনেন। তিনি খান মো: সাইদ হোসেন জসীম কে ব্যক্তিগতভাবে চিনেন ও জানেন। তার জানা মতে তিনি রাষ্ট্র বিরোধী, মাদকদ্রব্য ব্যবসা বা অসামাজিক কোন কাজের সাথে জড়িত নন। এই মর্মে তিনি একটি প্রত্যয়নপত্র প্রদান করেন।
একই বিষয়ে গাইবান্ধা সদর উপজেলার তৎকালীন উপজেলা চেয়ারম্যান বর্তমান এমপি শাহ্ সারোয়ার কবীর জিজ্ঞাসাবাদে জানান যে, তিনি আলহাজ্ব খান মো: সাইদ হোসেন জসিমকে ব্যক্তিগতভাবে চিনেন ও জানেন। তিনি দীর্ঘদিন যাবৎ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক ও ব্যবসায়ীক সংগঠনের নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন। বর্তমানে তিনি গাইবান্ধা জেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি'র সহ-সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। তিনি রাষ্ট্র বিরোধী কোন কাজ, মাদকদ্রব্য ব্যবসা কিংবা অসামাজিক কোন কাজের জড়িত নন। এই মর্মে তিনিও একটি প্রত্যয়নপত্র প্রদান করেন।
গাইবান্ধা চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজ এর সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা জনাব মো: মকছুদার রহমান শাহানকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি জানান আলহাজ্ব খান মো: সাইদ হোসেন জসিম কে ব্যাক্তিগত ভাবে দীর্ঘদিন ধরে তিনি চিনেন ও জানেন। তিনি দীর্ঘদিন যাবৎ রাজনৈতিক ও ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন। তিনি আরও বলেন গত ২৭ মে, ২০২৩ তারিখে গাইবান্ধা চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজ'র ২০২৩-২০২৫ মেয়াদী নির্বাচনে তিনি সর্বোচ্চ ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন। গাইবান্ধা জেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি'র সহ-সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। তার জানা মতে তিনি রাষ্ট্র বিরোধী, মাদকদ্রব্য ব্যবসা বা অসামাজিক কোন কাজের সাথে জড়িত নন। এই মর্মে তিনি একটি প্রত্যয়নপত্র প্রদান করেন।
আবেদনকারীর বাসস্থান মহুরী পাড়ায় বেশকিছু স্থানীয় বাসিন্দা এবং গাইবান্ধা শহরের হকার্স মার্কেটের ব্যবসায়ীদের গোপনে ও প্রকাশ্যে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তারা সকলেই জানায় আলহাজ্ব খান মো: সাইদ হোসেন জসিম পূর্বেও মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত ছিলেন না, বর্তমানেও জড়িত নন।
এমতাবস্থায়, তদন্তকালে জিজ্ঞাসাবাদে ও প্রাপ্ত তথ্যাদি যাচাই ও সার্বিক পর্যালোচনায় আলহাজ্ব খান মো: সাইদ হোসেন জসিম, পিতা-মো: আব্দুল মতিন খান, সাং-মহুরী পাড়া, থানা-গাইবান্ধা সদর, জেলা-গাইবান্ধা-এর বিরুদ্ধে অবৈধ মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত কিংবা অবৈধ মাদকব্য ব্যবসায়ীদের পৃষ্ঠপোষক-এর অভিযোগের বিষয়ে কোনরুপ সত্যতা পাওয়া গেল না।
এ ব্যাপারে খান মোঃ সাইদ হোসেন জসিম বলেন, এটা আমার বিরুদ্ধে একটা ষড়যন্ত্র ছিলো। আমাকে সমাজে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য এটি একটি অপচেষ্টা ছিল মাত্র। কোন ষড়যন্ত্রই যে বেশি দিন স্থায়ী হয় না মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের এই তদন্ত প্রতিবেদন তার প্রমাণ।
এ ব্যাপারে রংপুর মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের পরিদর্শক আবু নায়েম কাজী মোহাম্মদ নুরুন্নবী বলেন, খান মোহাম্মদ সাইদ হোসেন জসিম মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ঢাকার মহাপরিচালক বরাবর একটি লিখিত আবেদন করেন। সেখান থেকে সেটি রংপুর মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরে পাঠানো হয়। পরে খান মোহাম্মদ সাঈদ হোসেন জসিম মাদক ব্যবসায়ী কিনা? মাদকের পৃষ্ঠপোষক কিনা? সেটি তদন্ত করার জন্য আমাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। এরপর সরেজমিনে দীর্ঘদিন তদন্ত শেষে প্রমাণিত হয় তিনি মাদক ব্যবসা কিংবা পৃষ্ঠপোষকতার সাথে সম্পৃক্ত নন। এটি তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের একটি অংশ ছিল। তদন্ত প্রতিবেদনটি আমি আমার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট পেশ করেছি।