ম্যারাডোনার জন্য মেসি-রোনালদোর আবেগী চিঠি
ফুটবল ঈশ্বর দিয়েগো ম্যারাডোনার মৃত্যুতে শোকাচ্ছন্ন গোটা বিশ্ব। আর্জেন্টাইন মহাতারকার আকস্মিক মৃত্যুতে স্তব্ধ গোটা ফুটবল দুনিয়া। একে একে সবাই তাকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেছেন। তার প্রতি বিদায়ী বার্তা জানিয়েছেন। সময়ের সেরা দুই ফুটবলার লিওনেল মেসি এবং ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোও তাকে নিয়ে বেশ আবেগঘন বার্তা দিয়েছেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে স্বদেশী কিংবদন্তিকে নিয়ে হালের বিশ্বসেরা ফুটবলার লিওনেল মেসি লিখেছেন, 'সকল আর্জেন্টাইন এবং ফুটবলের জন্য আজ অত্যন্ত দুঃখের একটি দিন। তিনি আমাদেরকে ছেড়ে চলে গেছেন কিন্তু আসলে ছেড়ে যান নি, কারণ দিয়েগো চিরন্তন। তিনি সবার মাঝে বেঁচে থাকবেন চিরকাল। আমি তার সাথে দারুণ সব মুহূর্ত কাটিয়েছি। তার পরিবার এবং বন্ধুদেরকে সমবেদনা জানাতে চাই। শান্তিতে থাকুন।'
বর্তমান সময়ের আরেক সেরা ফুটবলার ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো লিখেছেন, 'আজ আমি আমার এক বন্ধুকে বিদায় জানালাম। তিনি চিরন্তন প্রতিভা। তিনি সর্বকালের সেরা অতুলনীয় একজন জাদুকর। তিনি খুব তাড়াতাড়ি চলে গেছেন কিন্তু একটি সীমাহীন উত্তরাধিকার রেখে গেছেন এবং রেখে গেছেন একটি শুন্যতা যা কখনো পূরণ হবার নয়। শান্তিতে ঘুমাও জাদুকর। তোমাকে কখনো ভোলা যাবে না।'
এর আগে বুধবার আর্জেন্টিনার একটি রিসোর্টে ৬০ বছর বয়সে মারা যান সর্বকালের অন্যতম সেরা ফুটবলার দিয়েগো ম্যারাডোনা।
আর্জেন্টাইন গণমাধ্যমগুলো বলছে, হার্ট অ্যাটাকে মারা গেছেন বিশ্বকাপজয়ী এই তারকা। বেশকিছু রোগে ভুগছিলেন তিনি। চলতি মাসেও মৃত্যুর হাত থেকে বেঁচে ফিরেন তিনি। সেবার মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের কারণে ২ সপ্তাহ হাসপাতালে ছিলেন তিনি। শেষপর্যন্ত সার্জারি সাকসেসফুল হয়েছিল তার। তবে এবার আর ফিরতে পারেননি ফুটবল ঈশ্বরখ্যাত এই মহাতারকা। হাসপাতাল থেকে ফেরার মাত্র ২ সপ্তাহের মাথায়, এবার চিরকালের জন্য বিদায় নিলেন ম্যারাডোনা।
এর আগেও বেশ কয়েকবার মৃত্যুর মুখে পড়তে হয়েছে তাকে। মাঠ এবং মাঠের বাইরে সমানভাবে আলোচনায় থাকা ম্যারাডোনা ২০০০ সালে একেবারে মৃত্যুর কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছিলেন। সেবার দীর্ঘদিন পর হাসপাতাল থেকে মুক্তি পান তিনি। ২০০৫ সালেও জটিল রোগে ভুগতে হয়। পরবর্তীতে ২ বছর পুনর্বাসনে কাটাতে হয় তাকে।
খেলোয়াড়ি জীবন থেকেই মাদকাসক্ত ছিলেন এই আর্জেন্টাইন তারকা। তার ব্যক্তিগত আইনজীবি মাতিয়াস মোরলাহাস গণমাধ্যমকে জানান, অতিরিক্ত মাদকাসক্তির জন্য শেষমুহূর্তেও মেডিসিন নিচ্ছিলেন তিনি।
বিশ্বের অন্যতম সেরা ক্লাবগুলো মাতিয়েছেন ম্যারাডোনা। ইতালিয়ান ক্লাব নাপোলিকে বিশ্বদরবারে পরিচিত করে তুলেছিলেন তিনি। তবে সব ছাপিয়ে, ১৯৮৬ সালে আর্জেন্টিনাকে একক নৈপুণ্যে বিশ্বকাপ জেতানোর জন্য চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন এই কিংবদন্তি ফুটবলার।