ঢাকাশনিবার , ৩০ নভেম্বর ২০২৪
  1. Covid-19
  2. অপরাধ ও আদালত
  3. অর্থনীতি
  4. আন্তর্জাতিক
  5. ইসলাম ডেস্ক
  6. কৃষি ও অর্থনীতি
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয়
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. দেশজুড়ে
  11. নির্বাচন
  12. বানিজ্য
  13. বিনোদন
  14. ভিডিও গ্যালারী
  15. মুক্ত মতামত ও বিবিধ কথা
আজকের সর্বশেষ সবখবর

মিলছেনা চিকিৎসাসেবা”দূর্নীতি আর অভিযোগে ভরপুর লালমনিরহাট সদর হাসপাতালটি যেনো দেখার কেউ নেই

প্রতিবেদক
প্রতিদিনের বাংলাদেশ
নভেম্বর ৩০, ২০২৪ ৫:৩৩ অপরাহ্ণ
Link Copied!

আশরাফুল হক, লালমনিরহাট:: সীমান্তবর্তী অবহেলিত জেলা লালমনিরহাট। জেলার ৫টি উপজেলা ৪৫ টি ইউনিয়নে বসবাসকারী লোকের সংখ্যা প্রায় ২০ লক্ষ। এসব মানুষের স্বাস্থ্যসেবার মান নিশ্চিত করতে জেলায় ৫ টি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ সদর হাসপাতালটি রয়েছে। ৫০ শয্যার সদর হাসপাতালটি পর্যায়ক্রমে ২ শত ৫০ শয্যায় উন্নীতকরণ করা হয়েছে।

জানা যায়, ২০১৭ সালে নভেম্বর মাসে স্বাস্থ্য সেবার মান নিশ্চিত করত সরকার প্রায় ৩৭ কোটি টাকা ব্যয়ে ২ শত ৫০ শয্যার হাসপাতালের একটি আধুনিক নতুন ভবন নির্মাণ কাজ শুরু করে ২০২৪ সালে তা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করেন। ২ শত ৫০ শয্যায় উন্নতিকরণ, আধুনিক ভবন করা হলেও বাড়েনি স্বাস্থ্যসেবার মান। কাঙ্খিত সেবা নেই, মেডিকেল অফিসার নেই, নার্স নেই, আয়া ওয়ার্ড বয় নেই, ওষুধ নেই, আইসিও নেই, অক্সিজেন ভ্যান্টিলেশন নেই, বার্ণ ইউনিট নেই, ক্যান্সার ইউনিট নেই, কিডনি ডায়ালাসিস ইউনিট নেই, ব্লাড ব্যাংক নেই, বিষ খাওয়া রোগীর ওয়াশ রুম নেই, হাসপাতালে সকল ধরণের অস্ত্রপাচার নেই, সব ধরনের প্যাথলজিক্যাল পরিক্ষার ব্যবস্তা নেই। দামী দামী এক্স মেশিন থাকার পরও হচ্ছে না সকল ধরনের পরিক্ষা নিরিক্ষা। ফলে অযতনে মেডিকেল কতৃপক্ষের অবহেলায়
অকেজো হয়ে পড়েছে এক্সে মেশিন গুলো। হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসলেই পরিক্ষা নিরিক্ষা করতে হয় বাহিরের ক্লিনিক গুলোয়। চিকিৎসকদের সাথে ক্লিনিক মালিকদের কমিশন বাণিজ্যর শিকার হচ্ছে সাধারণ মানুষজন। এভাবেই চলছে ২শত ৫০ শয্যার আধুনিক হাসপাতালটি।

সঠিকভাবে স্বাস্থ্যসেবা না দেয়ায় অভিযোগ উঠেছে সদর হাসপাতালের দায়িত্বে থাকা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও চিকিৎসকগণের বিরুদ্ধে। চিকিৎসকগণ হাসপাতালে নামমাত্র সময় দিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন বেসরকারি ক্লিনিক ও নিজস্ব ক্লিনিকে। সাধারণ অসুস্থতা নিয়ে হাসপাতালে আসলেই চিকিৎসকগণ রেফার্ড করেন রংপুর অথবা তাদের মনোনীত কোন ক্লিনিকে।

সরকার ঘোষিত নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত রোগীদের স্বাস্থ্যসেবা দেয়ার নিয়ম থাকলেও মানছেন না নিয়ম চিকিৎসকগণ। প্রতি সপ্তাহে ৭ দিন হাসপাতালে উপস্থিত থেকে স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার কথা থাকলেও সপ্তাহে ২/৩ দিন  নামমাত্র সেবা দিয়ে চলে যান বিভিন্ন ক্লিনিকে। এভাবে সরকারি নিয়মকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে নিজেদের ফায়দা হাসিল করছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও চিকিৎসকগণ। হাসপাতালের সরকারি ওষুধ কালোবাজার বিক্রির অভিযোগ অনেক পুরাতন হলেও এখনো রাতের আধারে চলে সে কার্যক্রম। বন্ধ হয়নি কালোবাজারে ওষুধ বিক্রির অভিযোগ। সরকারি ওষুধ কালোবাজারি করে অনেকে কোটি কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন। 

স্বাস্থ্যসেবা নিতে প্রতিদিন শতশত রোগী আসলেও পাচ্ছেন না কাঙ্ক্ষিত সেবা এবং বরাদ্দকৃত ওষুধ। ২/৩ প্রকার ওষুধ ছাড়া সব কিছুই নিতে হয় বাহিরে। হাসপাতালে ভর্তিকৃত রোগীদের ক্ষেত্রেও একই অবস্থা। সরকার কতৃক সবধরনের ওষুধ রোগীদের জন্য সরবরাহের কথা থাকলেও পাচ্ছেন না সেসব ওষুধ।
রোগীদের দুর্ভোগ, চিকিৎসক ও নার্সদের দূর্ব্যবহার, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ, দুর্গন্ধে ভরা সদর হাসপাতালটি যেন দেখার কেউ নেই।

সদর উপজেলার বি-ডি-আর হাটখোলার ৪ নং ওয়ার্ডের বাসিন্ধা সোহাগ (২৫) বলেন, আমার একটি হাত সড়ক দূর্ঘনায় ফ্যাকচার হয়েছে, আমি তিনদিন ঘুরে চিকিৎসা সেবা পাইনি। আর্থিক স্বচ্ছলতা না থাকায় ক্লিনিকেও যেতে পারছিনা। অবশেষে বাধ্য হয়ে ক্লিনিকের সেবা নিয়ে এখন আমি সুস্থ আছি। সদর উপজেলার মোগলহাট ইউনিয়নের ফুলগাছ এলাকার জামিলা বেওয়া (৬৬) বলেন, আমি বয়স্ক মহিলা শ্বাসকষ্ট নিয়ে সকাল ৯ টা থেকে দুপুর পর্যন্ত অপেক্ষা করে ডা. দেখালাম। দুই প্রকার ওষুধ দিলো বাকি ওষুধ কিনতে হবে। টাকা নাই কি দিয়ে ওষুধ কিনমো বাহে সেই চিন্তায় আছি।

হাসপাতালে ভর্তিরত এক রোগীর অবিভাবক নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বলেন, গত তিন দিন থেকে আমার স্ত্রী এই হাসপাতালে ভর্তি আছেন, তিন দিনের মধ্যে ডা. দেখছেন একদিন। হাসপাতালের শুধু একটি ইনজেকশন ছাড়া আর কোন কিছুই রোগী পায়না। ইনজেকশনের সিনিজ, কেনুলা সব কিছুই বাহির থেকে কিনতে হচ্ছে। হাসপাতাল নার্সদের ব্যবহার অত্যান্ত খারাপ, রুম, বার্থরুম দূর্গন্ধে যাওয়া যায় না, এই হাসপাতালে কোন চিকিৎসা নাই।

হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আব্দুল মোকাদ্দেম এ বিষয়ে বলেন, হাসপাতালের জনবল সংকট ও টেন্ডার জটিলতা থাকায় ভর্তিকৃত রোগী সব ধরনের সুবিধা পাচ্ছে না। চিকিৎসকদের নির্ধারীত সময় সীমা জানতে চাইলে তিনি আরো বলেন, এ ব্যাপারে সাক্ষাতে কথা বলতে হবে।

আপনার মন্তব্য লিখুন