মামুনুর রশীদ মিঠু,স্টাফ রিপোর্টারঃ মাদকসম্রাজ্ঞীর ফাঁদে পড়ে লালমনিরহাটে এক বিজিবি’র সদস্য ২৫ হাজার টাকা জরিমানা দিয়েছেন। বর্তমানে বিষয়টি নিয়ে ওই এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, লালমনিরহাট সদর উপজেলার বানভাসা গ্রামের বটতলা এলাকার একটি বাসা ভাড়া নিয়ে পরিবারসহ বসবাস করছেন বেলাল হোসেন নামের এক বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)’র সদস্য।
প্রতিবেশী হওয়ায় মাদক মামলার আসামি এবং চিহ্নিত মাদক সম্রাজ্ঞী আঁখি’র সাথে মাসখানেক আগে সখ্যতা গড়ে ওঠে ওই বিজিবি সদস্যের। এরই একপর্যায়ে অন্তরঙ্গ সম্পর্ক গড়ে ওঠে তাদের মোবাইল ফোনে। সেই সকল কথোপকথনের অডিও রেকর্ড ও হোয়াটসঅ্যাপের কিছু স্কিনশট দিয়ে বিজিবি সদস্যের সাথে প্রতারণা শুরু করে শহরের বানভাসা এলাকার কুখ্যাত ঐ মাদকসম্রাজ্ঞী আখিঁ বেগম (৩২) এবং তার সিন্ডিকেট। এই বিষয়ে বেলাল হোসেনের কাছ থেকে কয়েক দফায় টাকাও নেওয়ার গুঞ্জন উঠেছে ।
অনুসন্ধানে স্থানীয় কিছু যুবক জানায়, এটি নতুন নয় তার অনেক পুরোনো ব্যবসা ।
ঘটনার দিন গত ১৩ জুন (মঙ্গলবার) বিকেলে বিজিবি সদস্য বেলাল দায়িত্ব পালন শেষে বানভাসা এলাকায় তার ভাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিলে ৩/৪ জন যুবক পথিমধ্যে পোশাক পরিহিত বিজিবি সদস্য বেলালকে বটতলা মোড়ে থামিয়ে তার সাথে বাকবিতন্ডায় জরায় আখিঁ সিন্ডিকেট। পরে কৌশলে তাকে পাশেই মাদকসম্রাজ্ঞী আঁখি’র বাড়িতে নিয়ে যায় তারা। দীর্ঘ সময় ধরে দাম কষাকষির এক পর্যায়ে ২৫ হাজার টাকায় বিষয় টি মিটমাট করে দেন আজিজার রহমান নামের স্থানীয় বয়োজ্যেষ্ঠ এক ব্যক্তি।
স্থানীয়দের কাছথেকে আারো জানা যায় এর আগেও মাদক দিয়ে ফাঁসিয়ে ও নারী কেলেংকারীর ঘটনা ঘটিয়ে একাধিক ব্যাক্তির নিকট হতে প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন আঁখি সিন্ডিকেট।
সাম্প্রতিক সময় আঁখি সিন্ডিকেটের বেপরোয়া ভাবে প্রকাশ্যে মাদক বিক্রির কারণে স্থানীয় যুবসমাজের অবিভাবকরা নিজেদের স্কুল কলেজ পড়ুয়া ছেলেমেয়েদেরও নিরাপদ নয় বলে মনে করছেন না সে এলাকায়।
এদিকে বিজিবি সদস্য বেলাল হোসেনের ভাড়া বাসায় গিয়ে সাংবাদিকরা তাকে ডাকলেও কোনো সাড়া দেননি বেলাল।
তার ব্যবহারিত মোবাইল ফোনে কল করে জানতে চাইলে সম্পুর্ন বিষয় তিনি অস্বিকার করেন। আঁখি নামের কাউকে চেনেন কি না? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “”আমি চিনলাম না। ডিউটিতে আছি পড়ে কথা হবে””।
অথচ পরক্ষনেই মুঠোফোনে স্থানীয় এক যুবকের সাথে কথাবার্তার এক পর্যায়ে সাংবাদিক ফোন দিয়ে ছিল কিনা ঐ যুবকের এমন প্রশ্নে তিনি বলেন,
“একজন সাংবাদিক ফোন দিছে আমি সব কথা তার কাছে অস্বীকার করছি, বলছি আমি কাউকে টাকা পয়সা দেই নাই। বলছি আমি আঁখিকে চিনিনা”।
ওদিকে লালমনিরহাট শহরের বানভাসা এলাকার কুখ্যাত মাদকসম্রাজ্ঞী আঁখি মাদক বিক্রি ও বিজিবি সদস্যের টাকা জরিমানা করে আদায় করার কথা অস্বীকার করেন।
এদিকে এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে শহরের বানভাসা, বত্রিশ হাজারি, বালাটারীসহ আশপাশের এলাকার যুবসমাজ ও তাদের অবিভাবকেরা সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
আর এবিষয়ে লালমনিরহাট ১৫ বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়’এর অধিনায়ক বলেন, বিষয় টি জানা নেই, কেউ অভিযোগ দিলে তদন্ত করে প্রমানসাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।