নিজস্ব প্রতিবেদক:: নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী উপজেলায় সাত বছরের একটি শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। ধর্ষণের শিকার শিশুটি যন্ত্রণায় হাসপাতালের বেডে শুয়ে কাতরাচ্ছে। কর্তব্যরত চিকিৎসক বলছেন শিশুটিকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দিয়ে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।
গতকাল শনিবার (২২ মার্চ) রাত সোয়া ৯টার দিকে গুরুতর অবস্থায় শিশুটিকে নোয়াখালীর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এর আগে বিকেল পাঁচটায় নদনা ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, শিশুটিকে বাড়ির পার্শ্ববর্তী মাংসের দোকানদার (কসাই) ফজলু ও হানিফ দই খাওয়ানোর কথা বলে দোকানে নিয়ে যায়। প্রায় এক ঘণ্টা পর শিশুটি বাসায় ফিরলে পরিবারের লোকজন তার রক্তক্ষরণ দেখতে পায়। পরবর্তীতে জিজ্ঞাসা করলে ফজলু ও হানিফ এই অবস্থা করেছে বলে জানায়। আমরা ধারণা করছি শিশুটিকে নেশা জাতীয় কোনো কিছু খাইয়ে ধর্ষণ করা হয়েছে।
২৫০ শয্যা নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি থাকা শিশুটির মা জানান, শনিবার বিকালে শিশুটি বাড়ির পাশের দোকানে দই কিনতে যায়। দীর্ঘক্ষণ পর শিশুকে বিধ্বস্ত অবস্থায় ফিরতে দেখে কোলে নিয়ে দেখেন শিশুটির শরীরে ব্লেড দিয়ে কাটার মত জখম এবং সেখান থেকে রক্ত বের হচ্ছে। তাৎক্ষণিকভাবে তিনি বিষয়টি কাছের সেনা ক্যাম্পে অবহিত করে শিশুটিকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন।
শিশুটির মা আরও বলেন, শিশুটির শরীরে ব্লেড দিয়ে কাটার মতো জখম রয়েছে। এতে গভীর গর্ত সৃষ্টি হওয়ায় সেটিতে অনেক সেলাই করতে হয়। সকাল ৯টার দিকে শিশুটির ঘুম ভাঙার পর তার ঘটনার বিষয়ে জানতে চাওয়া হলেও সে কিছুই জানাতে পারেনি। তার মধ্যে ভয়-আতঙ্ক কাজ করছে।
হাসপাতালের জরুরি বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসক মামুন মোস্তাফিজ বলেন, ধর্ষণের শিকার হওয়ার অভিযোগ নিয়ে সাত বছরের শিশুটিকে অসুস্থ অবস্থায় জরুরি বিভাগে আনা হয়। শিশুটির মায়ের কাছ থেকে ঘটনা শোনার পর তাৎক্ষণিক অসুস্থ শিশুটিকে হাসপাতালে ভর্তি করে ওয়ার্ডে পাঠিয়ে দিয়েছি। শিশুটি সার্বক্ষণিক একজন নারী চিকিৎসকের পর্যবেক্ষণে রয়েছে।
নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন চৌধুরী বলেন, শিশুটি ডা. তাহমিনা বেগমের পর্যবেক্ষণে রয়েছেন। বর্তমানে শিশুটিকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দিয়ে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। তার বেশ কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা দরকার। এসব পরীক্ষার ফলাফলের পর পরবর্তী চিকিৎসার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
সোনাইমুড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোরশেদ আলম বলেন, প্রাথমিক তথ্য পাওয়ার পর আমি ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছি। তবে শিশুটি কার দ্বারা নির্যাতনের শিকার হয়েছে, সেই বিষয়ে কোনো তথ্য এখনও পাওয়া যায়নি। এরপরও রাতে সন্দেহভাজন হিসেবে চারজনকে আটক করা হয়েছে।