ঢাকাবৃহস্পতিবার , ৩ ডিসেম্বর ২০২০
  1. Covid-19
  2. অপরাধ ও আদালত
  3. অর্থনীতি
  4. আন্তর্জাতিক
  5. ইসলাম ডেস্ক
  6. কৃষি ও অর্থনীতি
  7. খেলাধুলা
  8. জাতীয়
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. দেশজুড়ে
  11. নির্বাচন
  12. বানিজ্য
  13. বিনোদন
  14. ভিডিও গ্যালারী
  15. মুক্ত মতামত ও বিবিধ কথা
আজকের সর্বশেষ সবখবর

বিশ্বসেরা বিজ্ঞানীর তালিকায় সাতক্ষীরার কলারোয়ার ড. সুভাষ চন্দ্র সাহা

প্রতিবেদক
প্রতিদিনের বাংলাদেশ
ডিসেম্বর ৩, ২০২০ ১:২৬ অপরাহ্ণ
Link Copied!

সাতক্ষীরার কলারোয়ার সুভাষ চন্দ্র সাহা বিশ^সেরা বিজ্ঞানীর তালিকায় তালিকা ভুক্ত করা হয়েছে। বিজ্ঞানী সুভাষ চন্দ্র সাহা সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার জয়নগর ইউনিয়নের খোরদো-বাঁটরা গ্রামের কৃষক পরিবারের সন্তান। সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ও এলসেভিয়ার প্রকাশনা সংস্থার (আইসিএসআর ল্যাব) সমন্বিত জরিপে বিশ্বসেরা ২% বিজ্ঞানীদের তালিকায় স্থান পেয়েছেন তিনি।

ড. সুভাষ চন্দ্র সাহা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী। বর্তমানে তিনি অস্ট্রেলিয়ার ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজী সিডনী’র মেকানিক্যাল এন্ড মেকাট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সিনিয়র লেকচারার। সম্প্রতি বিশ্বের সেরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা যুক্তরাষ্ট্রের স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় এই তালিকা প্রকাশ করেন। প্রকাশিত তালিকায় নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে গবেষণায় নিযুক্ত বাংলাদেশী বিজ্ঞানীগণ সম্মানজনক এই তালিকাটিতে অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন। বাংলাদেশের কৃতি সন্তান ড. সুভাষ চন্দ্র সাহা সাধারণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করলেই ছাত্রজীবনের শুরু থেকেই তিনি ছিলেন অদম্য মেধাবী। বাড়ীর কাছাকাছি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান না থাকায় দুরের স্কুলে যেতে তাকে প্রতিদিন বাড়ি থেকে ৫/৬ কিলেমিটার পথ পায়ে হেঁটে যাতায়াত করতে হয়েছে। ড. সাহা উপজেলার ধানদিয়া ইউনিয়ন ইন্সটিটিউশন থেকে ৮ম শ্রেণীতে ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি লাভ করেন।

পরবর্তীতে সরকারী বি.এল. কলেজ খুলনা থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত ও ফলিত গনিতে যথাক্রমে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রী লাভ করেন। শুরু থেকেই তিনি বাস্তব জীবন এবং প্রকৌশল শিল্পে গণিতের প্রযয়োগ নিয়ে গবেষণায় আগ্রহী ছিলেন। এই আগ্রহ থেকেই তিনি আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন গবেষক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের প্রফেসর আনোয়ার হোসেনের তত্বাবধানে গবেষণা শুরু করেন। তার তৎকালীন গবেষণাসমূহের ফলাফল আন্তর্জাতিক ভাবে স্বীকৃত বৈজ্ঞানিক এবং প্রকৌশল জার্নালগুলোতে প্রকাশিত হয়। গবেষণার পাশাপাশি ড. সাহা বাংলাদেশের নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় ও ইবাইস বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন এবং পরবর্তীতে উচ্চশিক্ষার উদ্দেশ্যে স্কলারশীপ নিয়ে আস্ট্রেলিয়ার জেমস কুক বিশ্ববিদ্যালয়ে পাড়ি জমান। ২০০৯ সালে তিনি এই বিশ্ববিদ্যালইয় থেকে কৃতিত্বের সাথে পিএইচডি ডিগ্রী অর্জন করে অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ড ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজীতে পোস্ট-ডক্টোরাল গবেষক হিসেবে তার কর্মজীবন শুরু করেন। বর্তমানে তিনি ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজী সিডনী মেকানিক্যাল এন্ড মেকাট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সিনিয়র লেকচারার হিসেবে কর্মরত আছেন। ড. সাহা তার এই স্বল্প কর্মময় জীবনে প্রায় ২শ’র অধিক আন্তর্জাতিক জার্নালে গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশ করেছেন এবং বহু আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান এবং প্রকৌশল সম্মেলনে অংশগ্রহন করেছেন। তিনি তিনটি অন্তর্জাতিক সম্মেলন থেকে শ্রেষ্ঠ গবেষণাপত্রের পুরষ্কার অর্জন করেছেন। গবেষণার মানের উপর ভিত্তি করে তিনি আস্ট্রেলিয়ার বেশ কিছু সরকারি মর্যাদাপূর্ণ গবেষণা অনুদানে পুরস্কৃত হয়েছেন যেমন অস্ট্রেলিয়ান রিসার্স কাউন্সিল লিঙ্কেজ, ডিপার্টমেন্ট অব সায়েন্স এন্ড টেকনোলজী, ডিফেন্স ইনোভেশন নেটওয়ার্ক, ডিপার্টমেন্ট অব ইন্ডাস্ট্রী, ইনোভেশন এন্ড সায়েন্স ইত্যাদী।

এছাড়াও তিনি ন্যাশনাল নিউট্রাল সায়েন্স ফাউন্ডেশন অব চায়না থেকে তিনটি সম্মানজনক গবেষণা অনুদান পেয়েছেন। ড. সাহার তত্ত্বাবধানে এ পর্যন্ত বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আগত ১২ জন ছাত্রছাত্রী পিএইচডি এবং ২ জন এমফিল ডিগ্রী অর্জন করেছেন, যাদের মধ্যে ৪ জনকে তিনি প্রধান তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে সরাসরি সুপারভাইজ করেছেন। বাংলাদেশী ছাত্রছাত্রীদের কাছে তিনি এক নির্ভরতার নাম। এ পর্যন্ত তিনজন বাংলাদেশী মেধাবী ছাত্রকে স্কলারশিপসহ অস্ট্রেলিয়ায় আমন্ত্রন জানিয়েছেন, যাদের মধ্যে দুইজন পিএইচডি শেষ করে ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজী সিডনীতে শিক্ষকতা ও গবেষনায় সম্পৃক্ত রয়েছেন। চায়না, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ভারত, মালয়েশিয়া, পাকিস্তান ও বাংলাদেশ এর বহু গবেষক এর সাথে কলাবরেশন করছেন। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের আমন্ত্রণে তিনি প্রধান বক্তা হিসেবে অনেক বৈজ্ঞানিক বক্তব্য দেয়ে প্রশংসিত হয়েছেন। বাংলাদেশের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বুয়েট, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় ও যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে অনেকগুলি কলাবরেটিভ প্রোজেক্ট এ কাজ করছেন। বর্তমানে তার নেতৃত্বাধীন রিসার্স-টিম, ফ্লুইড ডাইনামিক্স এবং কম্পিউটেশনাল বায়োমেডিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং এর বিভিন্ন শাখায় গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন।

তাঁর গবেষণার উল্লেখযোগ্য-বিষয়গুলোর মধ্যে অন্যতম হল ফুসফুসের সাথে দূষিত বা ঔষধ কণিকার মিথষ্ক্রিয়ার মডেল, রক্ত কণিকার বিকৃতি ও প্রবাহ, বিভিন্ন প্রায়োগিক ক্ষেত্রে তাপের পরিবহন, পরিচলন ও বিকিরণের মডেলসহ মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং এর বিভিন্ন প্রয়োগ ক্ষেত্র।

আপনার মন্তব্য লিখুন