ডেস্ক রিপোর্ট:: এক সপ্তাহের মধ্যে আবারও ট্রেনে নাশকতা। এবারও লক্ষ্যবস্তু মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস। এবার এর বগিতে আগুন দেন হরতাল সমর্থকরা। এতে পুড়ে অঙ্গার হয়ে যান মা-ছেলেসহ চারজন। ছাই হয়ে যায় তিনটি কোচ। আগুন নিয়েই বিমানবন্দর এলাকা থেকে ট্রেনটি ছুটে চলে তেজগাঁও পর্যন্ত।
সোমবার (১৮ ডিসেম্বর) রাতে নেত্রকোনা থেকে ছেড়ে আসে মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস। ভোর ৫টার দিকে বিমানবন্দর স্টেশন পার হওয়ার পর দাউ দাউ করে জ্বল ওঠে ট্রেনটি। আতংকিত যাত্রীরা ভেতরে চিৎকার চেঁচামেচি করতে থাকেন। তবে ট্রেনের চালক বুঝতেই পারেননি আগুন লেগেছে।
চালক বুঝতে বুঝতে ট্রেনটি চলে আসে তেজগাঁও। ট্রেন থামার পর যাত্রীরা হুড়োহুড়ি করে ভেতর থেকে নামতে শুরু করেন। তবে তিনটি বগি পুড়ে গেলেও একটির ভেতরে আটকা পড়েন চারজন। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের তেজগাঁও ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে পৌনে ৭টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। ভেতর থেকে উদ্ধার করা হয় চারজনের মরদেহ।
নিহত চারজনের মধ্যে দুইজনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তারা হলেন- নাদিরা আক্তার পপি (৩৫) এবং তার তিন বছরের শিশু সন্তান ইয়াসিন। নাদিরার স্বামী কারওয়ান বাজারের একজন হার্ডওয়ার্ড ব্যবসায়ী বলে জানা গেছে। ঘটনার সময় নাদিরা আক্তারের ভাই এবং তার আরও এক ছেলে ট্রেনে ছিল। তারা ট্রেন থেকে নামতে পারলেও নাদিরা নামতে পারেননি। নিহত অপর দুইজন পুরুষ। তাদের পরিচয় এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
তেজগাঁও রেলস্টেশনের সহকারী স্টেশন মাস্টার এস এম পর্বত আলী বলেন, ‘‘ভোর ৪টা ৫৮ মিনিটে ট্রেন তেজগাঁও আসে। ৬টা ২৫ মিনিট পর্যন্ত ট্রেন চলাচল বন্ধ ছিল। বিমানবন্দর স্টেশন থেকে ছেড়ে আসার পথে কোথাও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। এখানে ট্রেনটি থামার কথা ছিল না। তবে আগুন দেখে ‘সিগনাল ডেনজার’ দিয়ে ট্রেন থামানো হয়। ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। আগুনে ‘ছ, জ ও ঝ’ কোচ পুড়ে গেছে। তিনটিই এসি কোচ।’’ ট্রেনটি তেজগাঁও রেলস্টেশন থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
ঢাকা রেলওয়ে পুলিশের পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেন জানান, ট্রেনের দুই কোচের মাঝের স্থানে প্রথমে আগুন দেখতে পান রেলকর্মীরা। ফায়ার এক্সটিংগুইশার দিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা চালানো হয়। তবে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসেনি। বরং পাশের কোচগুলোয় ছড়িয়ে পড়ে। এতে যাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দেয়। তারা দ্রুত নামার চেষ্টা চালান। তবে যাত্রীদের কেউ কেউ বিষয়টি বুঝতে পারেননি। তাদের কয়েকজন হতাহত হয়েছেন। এটি রাজনৈতিক কর্মসূচি ঘিরে নাশকতা বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।