রাসেল ইসলাম, নিজস্ব প্রতিবেদকঃ লালমনিরহাটে কয়েকদিনের ভারি বৃষ্টি ও উজানের ঢল নেমে আসায় তিস্তার পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি বৃদ্ধিতে নদীতীরবর্তী নিম্নাঞ্চল ও চরাঞ্চল প্লাবিত হয়ে কয়েক হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এদিকে পানি নিয়ন্ত্রণের জন্য দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজের ৪৪ টি জলকপাট খুলে দিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ।
রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) সকাল ৬ টায় থেকে ডালিয়া তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এর আগে শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা ৬ টায় তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার মাত্র ৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়েছিল।
জানা গেছে, তিস্তা নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় জেলার ৫ উপজেলার নদীতীরবর্তী নিম্নাঞ্চল ও চরাঞ্চলের ঘরবাড়িতে পানি প্রবেশ করেছে এবং চর এলাকার রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে। ফলে লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার গড্ডিমারী, দোয়ানী, সানিয়াজান ইউনিয়নের নিজ শেখ সুন্দর, সিঙ্গামারি ইউনিয়নের ধুবনী, সিন্দুর্না, চর সিন্দুর্না, পাটিকাপাড়া, ডাউয়াবাড়ী, কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী, শৈইলমারী, নোহালী, চর বৈরাতি, আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা, সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ, কালমাটি, রাজপুর, গোকুণ্ডা ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল ও চরাঞ্চলের কয়েক হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়ছেন।
সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান খায়রুজ্জামান বাদল জানান, তিস্তার পানি বৃদ্ধি পেয়ে আমার ইউনিয়নের নদীতীরবর্তী নিম্নাঞ্চল ও চরাঞ্চলের ঘরবাড়িতে পানি প্রবেশ করছে। চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন পানিবন্দি মানুষজন।
তিস্তা চর গড্ডিমারী এলাকার ফজর আলী বলেন, তিস্তার পানি বৃদ্ধিতে আমরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছি। রাস্তাঘাট তলিয়ে গেছে। বাড়ি ঘরে পানি উঠেছে। গৃহপালিত পশু নিয়ে আমরা বিপাকে পড়েছি। চুলা পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় রান্না করা খাবার খেতে পারছি না। টিউবওয়েল পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে।
তিস্তা ব্যারাজ পানি উন্নয়ন বোর্ড ডালিয়া শাখার নির্বাহী প্রকৌশলী আসফা উদ দৌলা বলেন, তিস্তার পানি বৃদ্ধি পেয়ে রোববার সকাল ৬ টা থেকে বিপৎসীমার দুই সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে প্লাবিত হয়েছে নিম্নাঞ্চল ও চরাঞ্চল। তিস্তা ব্যারাজের ৪৪ টি গেট খোলা রাখা হয়েছে। অব্যাহত বৃষ্টিপাতের কারণে তিস্তা নদীর পানি বেড়েছে। তবে পানি দ্রুত সময়ের মধ্যে নেমে যেতে পারে।