আজ ১৩ই ডিসেম্বর ১৯৭১সালের বহলা বধ্যভূমির শহীদদের বহলা ট্রাজেডি। আজ শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন বিরল উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আলহাজ্ব সবুজার সিদ্দিক সাগর এবং সাধারন সম্পাদক বাবু রমাকান্ত রায়।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেন, উপজেলা আওয়ামী যুবলীগের সভাপতি যুবরাজ আব্দুল মালেক সহ উপজেলা আওয়ামী লীগ, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ সহ আরও অনেকে ।
বহলা ট্রাজেডির ইতিহাস জানা যায় যে,১৯৭১ সালের ডিসেম্বর মাসে সংঘবদ্ধ মুক্তিবাহিনীর প্রতিরোধের মুখে পাক সেনাবাহিনী পিছু হটতে থাকে। ১৩ ডিসেম্বর বিরল উপজেলার ভান্ডারা কিংবা রাণীপুকুর ইউপি থেকে পাক সেনাবাহিনী পিছু হটে দিনাজপুর শহরের দিকে আসতে থাকে। সন্ধ্যার আগ মুহূর্তে কাঞ্চন জংশন এবং রেলসেতু সংলগ্ন বিজোড়া ইউপির বহলা গ্রামের দক্ষিণ প্রান্তে গ্রামবাসীর কাছে মুক্তিবাহিনীর সংবাদ জানতে চায় পাক সেনাবাহিনী। বিরল উপজেলার বহলা গ্রামটি ছিলো মুক্তিবাহিনীর একটি ঘাঁটি। যেখান থেকে মুক্তিবাহিনীর সদস্যরা বিভিন্ন স্থানে অপারেশন চালাতেন। কিন্তু গ্রামবাসীদের কেউ মুখ খুললেন না। এরপর পাক বাহিনী প্রস্তাব দেয় যে ওই গ্রামে তারা ক্যাম্প স্থাপন করবে। পাক সেনাবাহিনীর ওই প্রস্তাবেও গ্রামের মানুষ আপত্তি জানান। ফলে প্রথমে তাদের গ্রাম ছাড়ার নির্দেশ দেয়া হয়। গ্রামবাসীরা সেই নির্দেশ অমান্য করলে পাক সেনাবাহিনী গোটা গ্রামের পুরুষদের সারিবদ্ধভাবে দাঁড়াতে বলে। এ সময় মাগরিবের আজান পড়ে। গ্রামবাসীরা নামাজ আদায় করতে চাইলেন কিন্তু পাক সেনাবাহিনী তাদের নামাজ আদায় করতে না দিয়ে ব্রাশ ফায়ারিং করে। এতে ৪৪ জন প্রাণ হারায়।সেদিন বহলা গ্রামে প্রাণে বেছে যান একমাত্র আব্দুল গণি ও আনিসুর রহমান।
আব্দুল গণি ও আনিসুর রহমান জানান, গ্রামে পুরুষ সদস্য জীবিত না থাকায় ৩ দিন ওই ৪৪ জনের লাশ ঘটনাস্থলেই পড়ে ছিল। ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসের বিকেলে পার্শ্ববর্তী গ্রামের লোকজন এসে পঁচন ধরা লাশ বহলা গ্রামের গণকবরের স্থানটিতে কয়েকটি গর্ত করে একসঙ্গে কবর দেন।(সংগৃহিত)