আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, কুষ্টিয়ায় বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যের অবমাননা ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ। তিনি বলে, এ ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত ভিডিও ফুটেজ দেখে অপরাধীদের শাস্তি পেতেই হবে।
রোববার সকালে নরসিংদী জেলা আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের তার সরকারি বাসভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সভায় যুক্ত হন।
ইতিহাসের মীমাংসিত বিষয় নিয়ে একটি উগ্র সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী দেশব্যাপী ধর্মীয় বিভেদ তৈরির অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, এদেশ ও জাতির শ্রেষ্ঠ অর্জন স্বাধীনতার স্থপতি, হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের ভাস্কর্যের অবমাননা দেশের চেতনার মর্মমূলে আঘাত হানা।
তিনি বলেন, জাতির পিতার প্রতিকৃতি প্রদর্শন ও সংরক্ষণ সাংবিধানিকভাবেই বিধিবদ্ধ, তাই বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যের অবমাননা প্রকারান্তরে সংবিধানের অবমাননা।
দেশের লাখ লাখ সাধারণ মানুষ ও কর্মী আজ ক্ষুব্ধ উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, তাদের হৃদয়ের আবেগ অনুধাবন করি।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ গায়ে পড়ে আক্রমণ করে না, তবে আক্রমণের শিকার হলে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে এক বিন্দুও পিছপা হয় না।
ওবায়দুল কাদের উগ্রবাদী গোষ্ঠীকে হুঁশিয়ার করে দিয়ে বলেন, অনেক হয়েছে, এবার থামুন।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু মানে এদেশের অস্তিত্ব, স্বাধীনতা, বঙ্গবন্ধু মানে দেশ এবং সংবিধান, বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যের অবমাননা মানে দেশের মুক্তিযুদ্ধ এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে আক্রান্ত করা।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে অর্ধ শতকের স্মৃতি মধুদার ভাস্কর্যের আংশিক ভাংচুরের তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে দিবেন না।
এখনও দলের কর্মীদের নিয়ন্ত্রণে রেখেছি, আবারও বাড়াবাড়ি করলে আওয়ামী লীগের কর্মীরা ঘরে বসে থাকবে না বলেও জানান তিনি।
মুসলিম, হিন্দু, খ্রিষ্টান সবার মিলিত রক্তের স্রোতধারায় অর্জিত হয়েছে বাংলাদেশের স্বাধীনতা। এ স্বাধীনতা কোনো নির্দিষ্ট বা সম্প্রদায়ের স্বার্থের কাছে জিম্মি হতে দিবে না বলেও সাফ জানিয়ে দেন ওবায়দুল কাদের।
তিনি মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের শক্তিকে সাম্প্রদায়িক অপশক্তির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হওয়ারও আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, পবিত্র সংবিধান ও দেশের আইন পরিপন্থি কোনো ঔদ্ধত্যপূর্ণ বক্তব্য, মন্তব্য ও আচরণ বরদাস্ত করা হবে না।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের নরসিংদী জেলা আওয়ামী লীগের সব কার্যক্রমের বিষয়েও কথা বলেন।
তিনি বলেন, নরসিংদী জেলা আওয়ামী লীগের দুই শীর্ষ নেতা দুই মেরুতে অবস্থান করায় সাময়িকভাবে তাদের দলের পদ থেকে অব্যহতি দেওয়া হয়, তবে তারা এখনও দলের নেতা।
ওবায়দুল কাদের বলেন, আওয়ামী লীগ এখনও এতোটাই বিপদে পড়েনি যে যখন তখন যাকে তাকে দলে এনে দল ভারী করতে হবে।
নরসিংদী জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জিএম তালেব হোসেনের সভাপতিত্বে বর্ধিত সভায় উপস্থিত ছিলেন-আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য লে. কর্নেল (অব.) ফারুক খান, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ হুমায়ুন, জেলার ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক পীরজাদা মোহাম্মদ আলীসহ অন্য নেতারা