শরীরের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ ফুসফুস। ধূমপান না করা, ব্যায়াম করা, বায়ুদূষণ এড়িয়ে যাওয়া ইত্যাদি ফসুফুসকে সুরক্ষিত রাখতে সাহায্য করে। তবে প্রাকৃতিক পন্থায় ফুসফুস পরিষ্কার করার কয়েকটি উপায় রয়েছে। পাঠকদের জন্য তা নিচে তুলে ধরা হলো।
১। ফুসফুস পরিষ্কার করার অন্যতম কার্যকর উপায় বাষ্প। নিঃশ্বাসের সঙ্গে বাষ্প গ্রহণ করা শরীরের ভেতরে বায়ু চলাচলের রাস্তা সুগম করে এবং তাতে জমে থাকা ‘মিউকাস’ অপসারণে সাহায্য করে।
শীতকালে বায়ুদূষণের মাত্রা বেড়ে যায় কারণ এসময় বাতাসে গতি কম থাকে। ধোঁয়া ও অন্যান্য দূষিত উপাদান কুয়াশার সঙ্গে মিশে মাটির কাছাকাছি নেমে আসে। ফলে বায়ু দূষণের মাত্রা বেড়ে যায়। তাই শীতকালে নিয়মিত বাষ্প বা ভাপ নেওয়া অত্যন্ত উপকারী এবং অল্পসময়েই তা অস্বস্তি দূর করতে পারে।
২। গ্রিন টি'র নানান স্বাস্থ্যগুণের মধ্যে ফুসফুস পরিষ্কার করাও একটি। ‘অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট’য়ে ভরা ‘গ্রিন টি’ ফুসফুসে সংক্রমণের আশঙ্কা কমায়। এতে থাকা অন্যান্য উপাদান ফুসফুসের সংবেদনশীল কোষকে বায়ুদূষণের ক্ষতিকর উপাদানের প্রভাব থেকে সুরক্ষা দেয়।
৩। কাজু, আখরোট, পেস্তা, চিনাবাদামসহ মিষ্টি কুমড়ার বীজ ইত্যাদিতে প্রচুর ভিটামিন ‘ই’ রয়েছে। সেই-সঙ্গে খনিজ লবণ ও ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড রয়েছে। এসব খাবার ফুসফুসে অক্সিজেন সরবরাহ এবং প্রদাহজনিত সমস্যা রোধ করতে সাহায্য করে।
৪। মধুতে অ্যান্টি-মাইক্রোবায়াল ও প্রদাহনাশক ক্ষমতা রয়েছে, যা ফুসফুস পরিষ্কার করে। তাই প্রতিদিন এক চা চামচ মধু খেলে তা হবে ফুসফুসের জন্য উপকারী।
৫। ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবার ফুসফুসের প্রদাহজনিত সমস্যা রোধে বেশ কার্যকরী। বিশেষ করে ভিটামিন ডি’র অভাবে শিশুদের শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়। এর মূল উৎস সূর্য। এ ছাড়া দুধ, ডিম, দই, মাছ, মাংস ইত্যাদি খাবারে প্রচুর ভিটামিন ‘ডি’ রয়েছে।
৬। তুলসী পাতায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট। আর এই অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ফুসফুস সুরক্ষায় খুবই কার্যকর। বাতাসে থাকা ধূলিকণা শোষণ করতে পারে তুলসী। তাই শ্বাসযন্ত্রের দূষিত পদার্থ দূর করতে তুলসীপাতার রস কিংবা এই পাতা পানিতে ফুটিয়ে পান করুন। ফুসফুস ভালো থাকবে।
৭। ভিটামিন ‘সি’সমৃদ্ধ খাবারের কোনো বিকল্প নেই। ফুসফুসের প্রদাহজনিত সমস্যা রোধ করে এই ভিটামিন। শ্বাসযন্ত্রে অক্সিজেন সরবরাহ করতে সাহায্য করে এবং শ্বাসনালির জীবাণু ধ্বংস করে। লেবু, আমলকি, কমলা, আপেল, পেয়ারা ইত্যাদি খাবারে প্রচুর ভিটামিন ‘সি’ রয়েছে।
৮। রসুনে রয়েছে প্রচুর সেলিনিয়াম ও অ্যালিসিন। এ দুটি প্রাকৃতিক উপাদান ফুসফুস ও শ্বাসনালি ভালো রাখতে সাহায্য করে। এ ছাড়া দীর্ঘদিন ধরে ভাইরাসজনিত সংক্রমণ রোধে রসুনের ব্যবহার হয়ে আসছে।
বাতাসে দূষিত উপাদান একার পক্ষে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়। তবে ঘরের বাতাসের মান আপনি নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন অনেকাংশে। এজন্য ঘরে ‘এয়ার পিউরিফায়ার’ ব্যবহার করতে পারেন। ঘর সবসময় পরিষ্কার রাখতে হবে। কার্পেট থাকলে তা নিয়মিত পরিষ্কার করতে হবে। বাঁশ, লিলি, অ্যালো ভেরা, ‘স্পাইডার প্ল্যান্টস’ ইত্যাদি বায়ু পরিশোধন করে এমন গাছ ঘরে রাখা যেতে পারে।